রাজধানীর মিটফোর্ড হাসপাতালের তিন নম্বর গেটের সামনে গত ৯ জুলাই সন্ধ্যায় পাকা রাস্তার ওপর সোহাগ নামের এক ব্যক্তিকে প্রকাশ্যে পাথর মেরে নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত সাতজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তবে, সোহাগকে পাথর দিয়ে দিয়ে উপর্যুপরি আঘাতকারী শার্ট ও জিনস প্যান্ট পরা সেই ব্যক্তিকে এখন পর্যন্ত শনাক্ত করা যায়নি।
সোহাগ হত্যার সময়ের কয়েকটি সিসিটিভি ফুটেজের একাধিক ভিডিওতে দেখা যায়, বেশ কয়েকজন ব্যক্তি সোহাগকে প্রথমে নির্মমভাবে মারধর করে, পরে কুপিয়ে মাটিতে ফেলে দেয়। এরপর দুই যুবক তার নিথর দেহ রাস্তায় টেনে নিয়ে এসে একের পর এক লাথি, ঘুষি ও বুকের ওপর লাফিয়ে বর্বরতা চালায়। পরে তার মাথা ও শরীরের ওপর ছোড়া হয় বড় বড় পাথর। ঘটনার সময় শত শত মানুষ আশপাশে দাঁড়িয়ে ছিলেন।
জানা গেছে, ঘটনার সময় উপস্থিত থাকাদের মধ্যে কেউ প্রত্যক্ষ ও কেউ পরোক্ষভাবে হত্যায় জড়িত ছিল। তাদের মধ্যে এখন পর্যন্ত সাতজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। তবে সোহাগের ওপর একাধিকবার পাথর মারা শার্ট ও জিনস প্যান্ট পরা ওই ব্যক্তিকে এখন পর্যন্ত চিহ্নিত করতে পারেনি। তবে পাথর মারা অপর ব্যক্তি পেস্ট রঙের টি-শার্ট পরা মনির ওরফে লম্বা মনিরকে কেরানীগঞ্জ এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, সোহাগ হত্যায় জড়িত আশপাশের সবাইকে সিসিটিভি ফুটেজ দেখে শনাক্ত এবং কয়েকজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। অথচ, ফুটেজে বড় পাথর মারা ব্যক্তিকে স্পষ্টভাবে দেখা গেলেও তাকে কেন শনাক্ত করা যাচ্ছে না।
অন্যদিকে, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেন, পুরান ঢাকায় যে ঘটনাটি ঘটে গেছে, যে ছেলেটি মারা গেছে, তার সঙ্গে হয়তো যুবদলের সম্পর্ক আছে। কিন্তু যে খুন করেছে, আমরা যে খবর পেয়েছি, তাকে অন্য জায়গা থেকে নিয়ে আসা হয়েছে। তাকে ধরা হচ্ছে না। ধরা হলো অন্যদের। তাকে আসামিও এখন পর্যন্ত করা হয়নি বোধ হয়। কেন হয়নি, কেন ধরা হচ্ছে না?
ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) লালবাগ বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) মো. জসিম উদ্দিন জানান, কংক্রিটের বোল্ডার ছুড়ে মারা ব্যক্তির নাম-পরিচয় বিভিন্ন উৎস ও মাধ্যমে বের করার চেষ্টা চলছে। টিটুসহ বাকি আসামিদের গ্রেপ্তার করা সম্ভব হলে তার পরিচয় নিশ্চিত হওয়াও সহজ হবে।
উল্লেখ্য, বিদ্যুতের তামা ও সাদা তারের ব্যবসার সিন্ডিকেট নিয়ে দ্বন্দ্বে বাসা থেকে ডেকে নিয়ে গত ৯ জুলাই সোহাগকে হত্যা করা হয়। এ ঘটনায় নিহতের বোন মঞ্জুয়ারা বেগম বাদী হয়ে কোতোয়ালি থানায় মামলা করেন।