দুবাইয়ে স্থায়ীভাবে বসবাস, পরিবারসহ বসতি গড়া, ব্যবসা পরিচালনা কিংবা পেশাগত জীবনে এগিয়ে যাওয়ার স্বপ্ন অনেকেরই। তবে এতদিন এই স্বপ্ন পূরণে দরকার হতো কোটি টাকার বিনিয়োগ বা মূল্যবান সম্পত্তি। এবার সেই শর্তে এসেছে বড় ছাড়।
বাংলাদেশ ও ভারতীয় নাগরিকদের জন্য আমিরাত সরকার চালু করেছে এক নতুন ধরনের মনোনয়ন-ভিত্তিক গোল্ডেন ভিসা, যার জন্য বিশাল বিনিয়োগের প্রয়োজন নেই। মাত্র ১ লাখ দিরহাম (বাংলাদেশি টাকায় প্রায় ৩৩ লাখ) খরচেই মিলছে আজীবনের জন্য এই আকর্ষণীয় ভিসা।
দুবাই গোল্ডেন ভিসা মিলবে মাত্র ৩৩ লাখ টাকায়!
দুবাইয়ে স্থায়ীভাবে বসবাস, পরিবার নিয়ে জীবন গড়া কিংবা ব্যবসা পরিচালনার স্বপ্ন অনেকেই দেখে থাকেন। এতদিন এই স্বপ্ন পূরণে দরকার হতো কোটি টাকার বিনিয়োগ কিংবা উচ্চমূল্যের সম্পত্তি।
তবে এবার সেই শর্তে এসেছে যুগান্তকারী পরিবর্তন। বাংলাদেশ ও ভারতীয় নাগরিকদের জন্য আমিরাত সরকার চালু করেছে এক নতুন ধরনের মনোনয়ন-ভিত্তিক গোল্ডেন ভিসা, যা মাত্র ১ লাখ দিরহাম (বাংলাদেশি টাকায় প্রায় ৩৩ লাখ) খরচে পাওয়া সম্ভব।
বিশাল বিনিয়োগ নয়, ‘মনোনয়ন’ হলেই পাওয়া যাবে দুবাই গোল্ডেন ভিসা
আগে দুবাইয়ের গোল্ডেন ভিসা পেতে হলে দেশটিতে কমপক্ষে ২ মিলিয়ন দিরহামের সম্পত্তি কিনতে হতো অথবা বড় অঙ্কের ব্যবসায় বিনিয়োগ করতে হতো। কিন্তু এখন নতুন নিয়মে এই ভিসা পাওয়া যাবে বিনা সম্পত্তি বা বিনিয়োগ ছাড়াইশুধুমাত্র নির্দিষ্ট যোগ্যতার ভিত্তিতে মনোনীত হলেই।
ভারত ও বাংলাদেশিদের জন্য পরীক্ষামূলকভাবে চালু হওয়া এই কর্মসূচিতে আবেদনকারীরা এখন ১ লাখ দিরহাম ফি দিয়ে আজীবনের জন্য ভিসা পেতে পারেন।
সম্পত্তিনির্ভর নয়, তাই ঝুঁকিও নেই দুবাই গোল্ডেন ভিসায়
পুরনো নিয়ম অনুযায়ী সম্পত্তি বিক্রি বা ভাগ হয়ে গেলে ভিসা বাতিল হওয়ার ঝুঁকি থাকত। কিন্তু এই মনোনয়ন-ভিত্তিক গোল্ডেন ভিসায় একবার অনুমোদন মিললে তা স্থায়ীভাবেই কার্যকর থাকবে। ফলে এটি তুলনামূলকভাবে অনেক বেশি স্থিতিশীল এবং দীর্ঘমেয়াদি।
কী সুবিধা মিলবে এই গোল্ডেন ভিসায়?
- নিজের পরিবারকে দুবাইতে নিয়ে যেতে পারবেন
- গৃহকর্মী ও গাড়িচালক নিয়োগ করতে পারবেন
- দুবাইয়ে ব্যবসা শুরু করতে পারবেন
- কিংবা যেকোনো পেশাগত চাকরি করতে পারবেন
এই সুযোগটি শুধুমাত্র সম্পদশালী বিনিয়োগকারী নয়, বরং শিক্ষিত পেশাজীবী, উদ্ভাবক, ডিজিটাল কনটেন্ট নির্মাতা, ইউটিউবার, স্টার্টআপ উদ্যোক্তা এমনকি অভিজ্ঞ শিক্ষক ও নার্সদের জন্যও উন্মুক্ত।
কারা এই দুবাই গোল্ডেন ভিসার জন্য আবেদন করতে পারবেন?
আমিরাত সরকার ভিসার যোগ্যতা নির্ধারণ করেছে বেশ কয়েকটি বিষয়ের ভিত্তিতে:
- আবেদনকারীর পেশাগত দক্ষতা ও অভিজ্ঞতা
- দেশের অর্থনীতি, সংস্কৃতি বা প্রযুক্তি খাতে সম্ভাব্য অবদান
- অপরাধ ও অর্থপাচার সংক্রান্ত ব্যাকগ্রাউন্ড যাচাই
- এমনকি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সক্রিয়তা ও প্রোফাইলও পর্যবেক্ষণ করা হবে
এই যাচাই-বাছাইয়ের দায়িত্বে রয়েছে আমিরাতের পরামর্শক সংস্থা রায়াদ গ্রুপ। আবেদন যাচাই শেষে তারা তা সংযুক্ত আরব আমিরাত সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভাগে পাঠাবে এবং চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত দেবে কর্তৃপক্ষ।
গোল্ডেন ভিসার আবেদন করবেন যেভাবে
রায়াদ গ্রুপ জানিয়েছে, বাংলাদেশ ও ভারতের নাগরিকরা ‘ওয়ান ভাস্কো সেন্টার’ (One Vasco Center) অনলাইনে রায়াদ গ্রুপের ওয়েবসাইট, নিবন্ধিত অফিস বা কল সেন্টারের মাধ্যমেও আবেদন করতে পারবেন। ভিসার জন্য আবেদন করতে সংযুক্ত আরব আমিরাতে যাওয়ার প্রয়োজন নেই। দেশের ভেতর থেকেই সব কিছু সম্পন্ন করা যাবে।
ভবিষ্যতে আরও দেশের জন্য চালু হবে দুবাই গোল্ডেন ভিসা
এই মনোনয়ন-ভিত্তিক গোল্ডেন ভিসা বর্তমানে কেবল ভারত ও বাংলাদেশিদের জন্য চালু হলেও, ভবিষ্যতে চীনসহ আরও দেশকেও এই কর্মসূচির আওতায় আনা হবে বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ।
এটি মূলত সংযুক্ত আরব আমিরাতের কম্প্রিহেনসিভ ইকোনমিক পার্টনারশিপ এগ্রিমেন্ট (Comprehensive Economic Partnership Agreement) এর অংশ।