শনিবার, ১৮ অক্টোবর, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


রূপালী ডেস্ক

প্রকাশিত: অক্টোবর ১৮, ২০২৫, ০৫:১৩ পিএম

চীন-বাংলাদেশ কূটনৈতিক সম্পর্কের ৫০ বছর উদযাপন করল আপন ফ্রেন্ডশিপ এক্সচেঞ্জ সেন্টার

রূপালী ডেস্ক

প্রকাশিত: অক্টোবর ১৮, ২০২৫, ০৫:১৩ পিএম

ছবি- সংগৃহীত

ছবি- সংগৃহীত

চীন ও বাংলাদেশের কূটনৈতিক সম্পর্কের ৫০তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপন উপলক্ষে ঢাকায় অনুষ্ঠিত হলো এক বিশেষ সেমিনার। চীনের প্রেসিডেন্ট সি চিনপিংয়ের প্রস্তাবিত—‘চারটি বৈশ্বিক উদ্যোগে পদক্ষেপ নিতে হাতে হাত মিলিয়ে কাজ করা এবং অভিন্ন উন্নয়নকে এগিয়ে নেওয়া’ প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে অনুষ্ঠিত হয় এই সেমিনার।

শনিবার (১৮ অক্টোবর) রাজধানীর বারিধারায় আপন ফ্রেন্ডশিপ এক্সচেঞ্জ সেন্টারের প্রধান কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত হওয়া এই সেমিনারের আয়োজন করে আপন ফ্রেন্ডশিপ এক্সচেঞ্জ সেন্টার।  সহযোগিতায় ছিল আপন মিডিয়া ক্লাব এবং সার্বিক তত্ত্বাবধানে ছিল চীনা দূতাবাস।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন ঢাকাস্থ দূতাবাসের চার্জ দ্য অ্যাফেয়ার্স ড. লিউ ইউইন। এ ছাড়া সেমিনারে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের ভাইস চেয়ারম্যান ড. আসাদুজ্জামান রিপন, বাংলাদেশ-চীন সাংস্কৃতিক অর্থনৈতিক ও গণযোগাযোগ কেন্দ্রের সভাপতি এয়ার ভাইস মার্শাল (অব.) আলতাফ হোসেন চৌধুরী, বাংলাদেশ নিটওয়্যার ম্যানুফ্যাকচার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিকেএমইএ) প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ হাতেম, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়ন অধ্যয়ন বিভাগের অধ্যাপক ড. রাশেদ আল মাহমুদ তিতুমীর এবং আপন ফ্রেন্ডশিপ এক্সচেঞ্জ সেন্টারের প্রেসিডেন্ট চুয়াং লিফেংসহ দুই দেশের বিভিন্ন খাতের বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ।

অনুষ্ঠানে আপন ফ্রেন্ডশিপ এক্সচেঞ্জ সেন্টারের প্রেসিডেন্ট চুয়াং লিফং বলেন, চীন-বাংলাদেশ কূটনৈতিক সম্পর্কের অর্ধশতাব্দী উদযাপন এবং প্রেসিডেন্ট সি চিনপিংয়ের প্রস্তাবিত চারটি বৈশ্বিক উদ্যোগের মূল বার্তা প্রচার করতেই আজকের এই আয়োজন। আপন ফ্রেন্ডশিপ এক্সচেঞ্জ সেন্টার দুই দেশের বিভিন্ন সংস্থা ও প্রতিষ্ঠানের মধ্যে বোঝাপড়া গভীর করা, বাণিজ্যিক ও সাংস্কৃতিক সহযোগিতা বৃদ্ধি এবং পারস্পরিক উন্নয়নের সেতুবন্ধন তৈরি করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ বলেও উল্লেখ করেন তিনি।

বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের ভাইস চেয়ারম্যান ড. আসাদুজ্জামান রিপন বলেন, এই অর্ধশতাব্দীব্যাপী সম্পর্ক শুধু কূটনৈতিক সৌজন্যের প্রতীক নয় বরং দক্ষিণ এশিয়ার ভূরাজনীতি, অর্থনীতি ও উন্নয়ন কাঠামোর এক গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়। চীন-বাংলাদেশ অংশীদারত্ব দাঁড়িয়ে আছে পারস্পরিক শ্রদ্ধা, আস্থা ও সহযোগিতার প্রতীকে। যদি আমরা অতীত থেকে শিক্ষা নিয়ে ভবিষ্যতের দিকে তাকাই, তবে পথটি স্পষ্ট—সমতা, পারস্পরিক শ্রদ্ধা ও যৌথ সমৃদ্ধির ভিত্তিতে গড়ে ওঠা এক টেকসই বন্ধুত্ব, যা উন্নয়নকে দীর্ঘস্থায়ী করবে এবং বন্ধুত্বকে আরও শক্তিশালী করে তুলবে।

বাংলাদেশ-চীন সাংস্কৃতিক অর্থনৈতিক ও গণযোগাযোগ কেন্দ্রের সভাপতি এয়ার ভাইস মার্শাল (অব.) আলতাফ হোসেন চৌধুরী বলেন, প্রেসিডেন্ট সি চিনপিংয়ের চারটি উদ্যোগ একসঙ্গে মিলে চীনের বিশ্ব শান্তি, উন্নয়ন ও পারস্পরিক সহযোগিতার সর্বাত্মক দৃষ্টিভঙ্গি প্রকাশ করে—যা বাংলাদেশের উন্নয়ন ও বৈদেশিক নীতির সঙ্গেও সামঞ্জস্যপূর্ণ।

বাংলাদেশ নিটওয়্যার ম্যানুফ্যাকচার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিকেএমইএ) প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ হাতেম বলেন, সময়ের সঙ্গে সঙ্গে চীন বাংলাদেশের অন্যতম বৃহত্তম বাণিজ্য অংশীদারে পরিণত হয়েছে এবং আমাদের উন্নত রাষ্ট্রে পরিণত হওয়ার অভিযাত্রায় এক গুরুত্বপূর্ণ সহযাত্রী। বাংলাদেশ ও চীনের মধ্যে সহযোগিতার বিশাল সম্ভাবনা দেখতে পাই—বিশেষ করে পোশাক ও বস্ত্র শিল্পে, যা আমাদের অর্থনীতির মেরুদণ্ড। দুই দেশ একসঙ্গে কাজ করে সরবরাহ চেইনকে আরও শক্তিশালী করতে পারে এবং পারস্পরিক প্রবৃদ্ধিকে ত্বরান্বিত করতে পারে। একই সঙ্গে বাংলাদেশের পোশাক খাতে চীনা বিনিয়োগকারীদের আহ্বান জানান তিনি।

চাইনিজ এন্টারপ্রাইজেস এসোসিয়েশন ইন বাংলাদেশের প্রেসিডেন্ট লিন হাই বলেন, আজ আমরা একত্রিত হয়েছি আমাদের দুই দেশের গভীর ও ক্রমবর্ধমান সম্পর্ক উদযাপন করতে—বিশেষ করে ‘বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভ’-এর দিকনির্দেশনায়, যেখানে চীনা প্রতিষ্ঠানগুলো বাংলাদেশের উন্নয়ন প্রক্রিয়ায় সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করেছে এবং সীমান্ত অতিক্রম করে অসাধারণ সাফল্য অর্জন করেছে।

বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টার উপ-প্রেস সচিব অপূর্ব জাহাঙ্গীর বলেন, চীন আজ বাংলাদেশের অগ্রণী উন্নয়ন সহযোগী হিসেবে নিজেদের প্রমাণ করেছে। তারা বাংলাদেশের সম্ভাবনার প্রতি গভীর আস্থা দেখিয়েছে নানা গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গীকারের মাধ্যমে। চীনের বিনিয়োগ প্রবাহ আজ বাংলাদেশকে রূপান্তরিত করছে এক গতিশীল বৈশ্বিক উৎপাদনকেন্দ্রে। বিশেষ করে উচ্চমানের টেক্সটাইল ও শিল্প উৎপাদন খাতে চীনা বিনিয়োগ তৈরি করছে হাজারো দক্ষ কর্মসংস্থানের সুযোগ।

চীনা দূতাবাসের চার্জ দ্য অ্যাফেয়ার্স ড. লিউ ইউইন তার বক্তব্যে বলেন, চীন ও বাংলাদেশ উভয়ই উন্নয়ন ও পুনর্জাগরণের এক গুরুত্বপূর্ণ পর্যায়ে রয়েছে। অভূতপূর্ব সুযোগ ও চ্যালেঞ্জের এই সময়ে চারটি বৈশ্বিক উদ্যোগের দৃষ্টিভঙ্গির আওতায় সহযোগিতা গভীর করা, উন্নয়ন কৌশলের সমন্বয় জোরদার করা এবং উচ্চমানের বেল্ট অ্যান্ড রোড সহযোগিতা অগ্রসর করার মাধ্যমেই আমরা চীন-বাংলাদেশ অভিন্ন ভবিষ্যতের সম্প্রদায় গড়ে তুলতে পারব।

অনুষ্ঠানে আলোকচিত্রে তুলে ধরা হয় চীন-বাংলাদেশের চলমান সহযোগিতা প্রকল্প এবং চীনের জাপানি আগ্রাসনবিরোধী যুদ্ধ ও বিশ্ব ফ্যাসিবাদবিরোধী যুদ্ধে বিজয়ের ৮০তম বার্ষিকীর গুরুত্বপূর্ণ কিছু মুহূর্ত।

সেমিনারে উন্মুক্ত আলোচনায় উঠে আসে দুই দেশের দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক, উন্নয়ন সহযোগিতা ও ভবিষ্যৎ সম্ভাবনার নানা দিক। অনুষ্ঠান শেষে প্রদর্শিত হয় চীনের মহাকাশ অভিযানের ওপর নির্মিত প্রামাণ্যচিত্র ‘শেনচৌ-১৩’, যা উপস্থিত অতিথিদের মধ্যে দারুণ সাড়া ফেলে।

আপন ফ্রেন্ডশিপ এক্সচেঞ্জ সেন্টার একটি অলাভজনক প্রতিষ্ঠান, যা ২০২৪ সালের অক্টোবরে প্রতিষ্ঠিত হয়। এটি চীন ও বাংলাদেশের মধ্যে আন্তঃআঞ্চলিক, সাংস্কৃতিক ও অর্থনৈতিক বিনিময়ের একটি সক্রিয় প্ল্যাটফর্ম হিসেবে কাজ করছে।

Link copied!