ঢাকা শুক্রবার, ১৮ জুলাই, ২০২৫

গোপালগঞ্জে সহিংসতায় মামলা, আসামি ৪৭৫

গোপালগঞ্জ প্রতিনিধি
প্রকাশিত: জুলাই ১৮, ২০২৫, ১২:২১ পিএম
গোপালগঞ্জে সহিংসতা। ছবি- সংগৃহীত

জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) পদযাত্রাকে কেন্দ্র করে গোপালগঞ্জে সংঘটিত সহিংসতার ঘটনায় ৭৫ জনের নাম উল্লেখ করে এবং আরও ৪০০ জন অজ্ঞাতনামাকে আসামি করে মামলা দায়ের করেছে পুলিশ।

বৃহস্পতিবার (১৭ জুলাই) রাতে গোপালগঞ্জ সদর থানায় মামলাটি দায়ের করেন থানার পুলিশ পরিদর্শক আহম্মেদ আলী।

গোপালগঞ্জ থানার ওসি মির মো. সাজেদুর রহমান সংবাদমাধ্যমকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

মামলার অভিযোগে বলা হয়, এনসিপির কর্মসূচি চলাকালে সংঘর্ষে পুলিশের একটি গাড়ি পুড়িয়ে দেওয়া হয়। এ সময় ব্যাপক ভাঙচুর ও হামলার ঘটনা ঘটে, যার ফলে গোপালগঞ্জ শহরে উত্তপ্ত পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়।

এর আগে গত বুধবার (১৬ জুলাই) বিকেলে, এনসিপির একটি জনসভা শেষে এ ঘটনার সূত্রপাত ঘটে। ফেরার পথে এনসিপির গাড়িবহরে হামলা চালায় স্থানীয় আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা- যাদের একটি অংশ বর্তমানে নিষিদ্ধ তালিকায় রয়েছে।

ঘটনার পরপরই এনসিপির কর্মী ও সমর্থকরা প্রতিরোধ গড়ে তোলে, যা দ্রুতই পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে রূপ নেয়। সংঘর্ষ চলে রাত পর্যন্ত। শহরের একাধিক স্থানে অগ্নিসংযোগ ও ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনায় গোটা শহর রণক্ষেত্রে পরিণত হয়।

বিকেল পাঁচটার দিকে সেনাবাহিনী, র‌্যাব, বিজিবি ও পুলিশের সহায়তায় গোপালগঞ্জ ত্যাগ করেন এনসিপির কেন্দ্রীয় নেতারা।

এরই মধ্যে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিও ফুটেজে দেখা যায়, এনসিপির শীর্ষস্থানীয় নেতা আখতার হোসেন, হাসনাত আবদুল্লাহ ও সারজিস আলম একটি সেনা সাঁজোয়া যান (এপিসি) ব্যবহার করে এলাকা ছাড়ছেন।

পরে তারা খুলনায় পৌঁছান এবং সেখানকার সার্কিট হাউস ও একটি হোটেলে অবস্থান নেন।

ঘটনায় পাঁচজনের মৃত্যু

ঘটনার জেরে এখন পর্যন্ত পাঁচজনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে।

নিহতরা হলেন- রমজান কাজী (১৯) হরিণাহাটি, কোটালীপাড়া, সোহেল রানা (৩৫ শানাপাড়া, দীপ্ত সাহা (৩০) উদয়ন রোড, ইমন তালুকদার (২৪) ভেড়ার বাজার, রমজান মুন্সী (৩২) স্থানীয় বাসিন্দা।

এই প্রাণহানি ও সহিংসতার পরিপ্রেক্ষিতে সন্ধ্যার দিকেই গোপালগঞ্জ জেলায় কারফিউ জারি করে প্রশাসন।

জেলার সব প্রবেশপথে কড়া নজরদারি ও টহল বাড়ানো হয়েছে। ইন্টারনেট সংযোগও সীমিত করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয় সূত্রগুলো।

এ ঘটনার পর গোপালগঞ্জ পুলিশ দাবি করে জানিয়েছে, এনসিপির মিছিলে ‘উসকানিমূলক কার্যক্রম’ ছিল এবং তারা প্রথমে পুলিশের ওপর হামলা করে।

অন্যদিকে এনসিপির পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে, এটি একটি পূর্বপরিকল্পিত হামলা- যেখানে প্রশাসন ও সরকারি দলের নেতারা জড়িত।

তারা অবিলম্বে হামলার বিচার দাবি করেছে এবং ঘোষণা দিয়েছে, সারাদেশে বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করা হবে।