বেসরকারি শিক্ষক নিয়োগে দীর্ঘ প্রতীক্ষার অবসান হয়েছে! শিক্ষক হওয়ার স্বপ্ন বাস্তব হওয়ার পথে। ৬ষ্ঠ গণবিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে ৪১ হাজার ৬২৭ প্রার্থী পেয়েছেন চূড়ান্ত সুপারিশ। এবার শুরু হচ্ছে নিয়োগ প্রক্রিয়ার চূড়ান্ত ধাপ।
এই ধাপে সুপারিশপত্র ডাউনলোড, সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানে আবেদন জমা এবং নিয়োগপত্র পাওয়ার পর যোগদান। প্রত্যেক প্রার্থীকে দ্রুত ও সঠিকভাবে এই ধাপগুলো সম্পন্ন করতে হবে, যাতে বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে তাদের শিক্ষক হিসাবে যোগদান নিশ্চিত হয়।
বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষ (এনটিআরসিএ) জানিয়েছে, চূড়ান্ত সুপারিশপ্রাপ্তদের সুপারিশপত্র ডাউনলোড করে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানে আবেদন জমা দিতে হবে ১৮ সেপ্টেম্বরের মধ্যে। এরপর প্রাপ্ত নিয়োগপত্রের ভিত্তিতে পরবর্তী সাত কর্মদিবসের মধ্যে যোগদান করতে হবে।
প্রতিষ্ঠানপ্রধানরা তাদের ইউজার আইডি ও পাসওয়ার্ড ব্যবহার করে টেলিটকের ওয়েবসাইটে (http://ngi.teletalk.com.bd) প্রবেশ করে প্রার্থীদের নিয়োগ সুপারিশপত্র ডাউনলোড করতে পারবেন।
আবেদন করার প্রক্রিয়া
যে প্রতিষ্ঠানে প্রার্থী সুপারিশ পেয়েছেন, সেখানে নিয়োগপত্র পাওয়ার জন্য প্রথমে একটি আবেদন লিখতে হবে। আবেদনের সঙ্গে সংযুক্ত করতে হবে:
- এনটিআরসিএর চূড়ান্ত সুপারিশপত্র।
- শিক্ষক নিবন্ধনের ই-সনদের ফটোকপি।
- সব অ্যাকাডেমিক সনদের ফটোকপি।
- জাতীয় পরিচয়পত্রের কপি।
- পাসপোর্ট সাইজের আপডেট ছবি দুই কপি।
বিবাহিত নারী প্রার্থীদের ক্ষেত্রে যদি ভোটার আইডিতে স্বামীর ঠিকানা না থাকে, তাহলে ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান কর্তৃক প্রদত্ত নাগরিক সনদ জমা দেওয়াই উত্তম।
নিয়োগ ও যোগদান প্রক্রিয়া
প্রার্থীরা উল্লিখিত কাগজপত্র জমা দেওয়ার পর প্রতিষ্ঠান প্রধান সাত দিনের মধ্যে নিয়োগপত্র প্রদান করবেন। এরপর নিয়োগপত্রের ভিত্তিতে একটি যোগদানপত্র লিখে বা প্রিন্ট করে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানে যোগদান করতে হবে।
যোগদানের সাত দিনের মধ্যে প্রতিষ্ঠান প্রধানকে আবার টেলিটকের ওয়েবসাইটে প্রবেশ করে “Joining Status” অপশনে গিয়ে ‘Yes’ ক্লিক করতে হবে। প্রার্থী যোগদান না করলে ‘No’ সিলেক্ট করে কারণ উল্লেখ করতে হবে।
যাচাই-বাছাই ও দায়দায়িত্ব
নিয়োগপত্র দেওয়ার আগে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের প্রধানকে প্রার্থীর শিক্ষাগত যোগ্যতা, এনটিআরসিএর সুপারিশপত্র ও প্রয়োজনীয় সনদ যাচাই করতে হবে।
এজন্য প্রতিষ্ঠানে কর্মরত তিন জন শিক্ষকের সমন্বয়ে একটি কমিটি গঠন করে যাচাই প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে হবে।
যদি শূন্যপদের চাহিদা প্রদানে ভুল তথ্য দেওয়া হয়, অথবা সনদ যাচাই ছাড়া যোগদান গ্রহণ করা হয়, কিংবা প্রতিষ্ঠান-সংশ্লিষ্ট কোনো মামলার কারণে আইনগত জটিলতা তৈরি হয়, সেক্ষেত্রে দায়ভার বহন করতে হবে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানকেই। এ বিষয়ে এনটিআরসিএকে দায়ী করা যাবে না।
এনটিআরসিএর নির্দেশনা
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের পরিপত্র অনুযায়ী, নির্ধারিত সময়ের মধ্যে সুপারিশপ্রাপ্ত প্রার্থীদের নিয়োগ দিতে হবে। সময়সীমার মধ্যে নিয়োগপত্র না দিলে অভিযোগের ভিত্তিতে প্রতিষ্ঠান প্রধান এবং ম্যানেজিং কমিটি বা গভর্নিং বডির বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে এনটিআরসিএ।
উল্লেখ্য, গত ১৬ জুন বেসরকারি শিক্ষক নিয়োগের ৬ষ্ঠ গণবিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে এনটিআরসিএ। আবেদন শুরু হয় ২২ জুন এবং শেষ হয় ১০ জুলাই মধ্যরাতে। আবেদন ফি জমা দেওয়ার শেষ সময় ছিল ১৩ জুলাই রাত ১১টা ৫৯ মিনিট পর্যন্ত।
দীর্ঘ যাচাই-বাছাই শেষে অবশেষে গতকাল মঙ্গলবার (১৯ আগস্ট) ৪১ হাজার ৬২৭ জন প্রার্থীকে নিয়োগের সুপারিশ দিয়েছে কর্তৃপক্ষ। এখন তাদের যোগদানের কার্যক্রম আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হচ্ছে।