ঢাকা শনিবার, ২৩ আগস্ট, ২০২৫

পাঠ্যবইয়ে ফের আসছে একগুচ্ছ পরিবর্তন

রূপালী ডেস্ক
প্রকাশিত: আগস্ট ২৩, ২০২৫, ১১:৩৬ এএম
ছবি- সংগৃহীত

আগামী বছরের মাধ্যমিক, একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণির পাঠ্যবইয়ের বেশকিছু বিষয়ে পরিবর্তনের উদ্যোগ নিয়েছে সরকার।  জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি) সূত্র জানিয়েছে, বিষয়গুলো চূড়ান্ত করার জন্য এরইমধ্যে একটি বিশেষজ্ঞ কমিটি করা হয়েছে।

১৮ আগস্ট জাতীয় শিক্ষাক্রম সমন্বয় কমিটির (এনসিসিসি) বৈঠকে এই কমিটি গঠনের সিদ্ধান্ত হয়। বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক অধ্যাপক মোহাম্মদ আজম চার সদস্যের এই কমিটির নেতৃত্ব দিচ্ছেন। কমিটির প্রতিবেদন হাতে পাওয়ার পর চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। 

জানা গেছে, এবারের পরিবর্তন-প্রক্রিয়ায় পাঠ্যবইয়ে জুলাই গণঅভ্যুত্থান নিয়ে আরও লেখা যুক্ত করা হতে পারে। এ ছাড়া শেখ মুজিবুর রহমানের ৭ মার্চের পুরো ভাষণের পরিবর্তে সংক্ষিপ্ত রূপ অন্তর্ভুক্ত করা, ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দেশত্যাগের ঘটনা উল্লেখসহ আরও কিছু বিষয়ে পরিবর্তন আনা হবে।

এর আগে গত বছর নতুন শিক্ষাক্রম স্থগিত করে ২০১২ সালে প্রণয়ন করা পুরোনো শিক্ষাক্রমের আলোকে পাঠ্যবই পরিমার্জন করে অন্তর্বর্তী সরকার। এতে পাঠ্যবইয়ে যুক্ত করা হয় জুলাই অভ্যুত্থানের গ্রাফিতি বা দেয়ালে আঁকা ছবি, জুলাই অভ্যুত্থানের বিষয়বস্তু নিয়ে কবিতা ও প্রবন্ধ বা গদ্য। আরও কিছু বিষয় পাঠ্যবইয়ে সংযোজন-বিয়োজন করা হয়।

এনসিটিবি সূত্রে জানা যায়, এবার ষষ্ঠ, সপ্তম, অষ্টম এবং নবম-দশম শ্রেণির বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয় পাঠ্যবইয়ে জুলাই গণঅভ্যুত্থানের একটি অধ্যায় যুক্ত করা হচ্ছে। এতে ২০২৪ সালের গণঅভ্যুত্থানের পাশাপাশি নব্বইয়ের গণঅভ্যুত্থানের বিষয়বস্তুও থাকবে। এ ছাড়া চলতি বছরের পাঠ্যবইয়ে থাকা জুলাই গণঅভ্যুত্থানের অন্যান্য বিষয়বস্তুর তথ্য ও ভাষাগত সমস্যা সংশোধন করা হবে। আর উচ্চমাধ্যমিক স্তরের বাংলা ও ইংরেজি পাঠ্যবইয়েও জুলাই গণঅভ্যুত্থানের ওপর লেখা সংযোজন করা হচ্ছে।

সূত্র আরও বলছে, অষ্টম শ্রেণির বাংলা বইয়ের ‘এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম’ শীর্ষক অধ্যায়টি সংক্ষিপ্ত করা হতে পারে। এ অধ্যায়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৭ মার্চের ভাষণটির পুরো বিবরণ রয়েছে। এর বাইরে দশম শ্রেণির বাংলা বইয়ের ‘রহমানের মা’ গল্পটিও পরিবর্তন করা হতে পারে।

সার্বিক বিষয়ে জানতে চাইলে এনসিটিবির চেয়ারম্যান (অতিরিক্ত দায়িত্ব) অধ্যাপক রবিউল কবীর চৌধুরী বলেন, পাঠ্যবইয়ে কী কী পরিবর্তন আসবে, তা এখনো চূড়ান্ত হয়নি। এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে একটি বিশেষজ্ঞ কমিটি করা হয়েছে। কমিটির প্রতিবেদনের ভিত্তিতে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

এবার ছাপা হবে ৩০ কোটির বেশি বই

আগামী বছর বিনা মূল্যে বিতরণের জন্য প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্তরে মোট ৩০ কোটির বেশি পাঠ্যবই ছাপা হবে। এর মধ্যে প্রাথমিক স্তরের পাঠ্যবই ৮ কোটি ৪৯ লাখ ২৫ হাজারের মতো। আর মাধ্যমিক স্তরের পাঠ্যবই ২১ কোটি ৪০ লাখের মতো।

এনসিটিবি থেকে জানা যায়, প্রাক্-প্রাথমিক, প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় শ্রেণির বই ছাপার শুরুর প্রস্তুতি শেষ হয়েছে। আর অন্যান্য শ্রেণির দরপত্র প্রক্রিয়াও শেষের পর্যায়ে। তবে এখনো ক্রয়-সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ সভায় তা অনুমোদন হয়নি।

জানতে চাইলে এনসিটিবির চেয়ারম্যান (অতিরিক্ত দায়িত্ব) অধ্যাপক রবিউল কবীর চৌধুরী বলেন, ‘৩০ নভেম্বরের মধ্যে সব বই ছাপার কাজ শেষ করার লক্ষ্য রয়েছে। আশা করছি, বছরের শুরুতেই সব শিক্ষার্থীর হাতে সব বই দিতে পারব।’