ঢাকা বৃহস্পতিবার, ১৬ অক্টোবর, ২০২৫

চাকসুর ২৬ পদের ২৪টিতেই শিবিরের জয়

রূপালী প্রতিবেদক
প্রকাশিত: অক্টোবর ১৬, ২০২৫, ০৫:৩৮ এএম
চাকসু ভিপি ইব্রাহিম হোসেন রনি ও জিএস পদে সাঈদ বিন হাবীব। ছবি-সংগৃহীত

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (চাকসু) নির্বাচনের চূড়ান্ত ফলাফল ঘোষণা করা হয়েছে। এতে কেন্দ্রীয় সংসদের ২৬টি পদের মধ্যে ২৪টিতেই জয় পেয়েছে ছাত্রশিবির সমর্থিত সম্প্রীতির শিক্ষার্থী জোট।

ছাত্রশিবির সমর্থিত প্যানেলের বাইরে এজিএস পদে ছাত্রদল সমর্থিত প্যানেলের আইয়ুবুর রহমান তৌফিক এবং সহ-খেলাধুলা ও ক্রীড়া সম্পাদক পদে জয় পেয়েছেন তামান্না মাহবুব প্রীতি।

বৃহস্পতিবার (১৬ অক্টোবর) ভোর ৪টার দিকে ফলাফল ঘোষণা শুরু হয়। 

ছাত্রশিবির সমর্থিত সম্প্রীতির শিক্ষার্থী জোটের ইব্রাহিম হোসেন রনি ৭ হাজার ৯৮৪ ভোট পেয়ে ভিপি পদে নির্বাচিত হয়েছেন। জিএস পদে সাঈদ বিন হাবীব নির্বাচিত হয়েছেন ৮ হাজার ৩১ ভোট পেয়ে। 

ছাত্রদল সমর্থিত প্যানেলের আইয়ুবুর রহমান তৌফিক এবং সহ-খেলাধুলা ও ক্রীড়া সম্পাদক পদে জয় পেয়েছেন তামান্না মাহবুব প্রীতি।

ছাত্রশিবির সমর্থিত প্যানেলের বিজয়ীরা হলেন- ভিপি পদে ইব্রাহিম হোসেন রনি , জিএস পদে সাঈদ বিন হাবিব, খেলাধুলা ও ক্রীড়া সম্পাদক পদে মোহাম্মদ শাওন,  সাহিত্য, সংস্কৃতি ও প্রকাশনা সম্পাদক পদে হারেজুল ইসলাম, সহ-সাহিত্য, সংস্কৃতি ও প্রকাশনা সম্পাদক পদে জিহাদ হোসাইন, দপ্তর সম্পাদক পদে আবদুল্লাহ আল নোমান, সহ-দপ্তর সম্পাদক পদে জান্নাতুল আদন নুসরাত, ছাত্রী কল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক পদে নাহিমা আক্তার দ্বীপা, সহ-ছাত্রী কল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক পদে জান্নাতুল ফেরদৌস রিতা, বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক পদে মাহবুবুর রহমান, গবেষণা ও উদ্ভাবন বিষয়ক সম্পাদক পদে তানভীর আঞ্জুম শোভন, সমাজসেবা ও পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক পদে তাহসিনা রহমান, স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক পদে আফনান হাসান ইমরান, মুক্তিযুদ্ধ ও গণতান্ত্রিক আন্দোলন বিষয়ক সম্পাদক পদে মোনায়েম শরীফ, ক্যারিয়ার ডেভেলপমেন্ট ও আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক পদে মেহেদী হাসান সোহান, যোগাযোগ ও আবাসন বিষয়ক সম্পাদক পদে মো. ইসহাক ভূঁঞা, সহ-যোগাযোগ ও আবাসন বিষয়ক সম্পাদক পদে ওবায়দুল সালমান, আইন ও মানবাধিকার বিষয়ক সম্পাদক পদে ফজলে রাব্বি তৌহিদ ও পাঠাগার ও ক্যাফেটেরিয়া বিষয়ক সম্পাদক পদে মাসুম বিল্লাহ।

এছাড়া, নির্বাহী সদস্যের পাঁচটি পদের সবকটি জিতে নিয়েছেন ছাত্রশিবির সমর্থিত প্যানেলের প্রার্থীরা। বিজয়ীরা হলেন-আকাশ দাশ, আদনান শরীফ, জান্নাতুল ফেরদাউস সানজিদা, সোহানুর রহমান ও সালমান ফারসী।

চূড়ান্ত ফলাফল ঘোষণার আগে থেকেই শিক্ষার্থীদের উপস্থিতিতে উৎসবমুখর হয়ে ওঠে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিবিএ অনুষদের মিলনায়তন। ফলাফলে নিজেদের পছন্দের প্রার্থী ও প্যানেলের নাম ঘোষণার সঙ্গে সঙ্গে উচ্ছ্বাসে ফেটে পড়েন তারা। শিক্ষার্থীরা স্লোগান, গান আর উল্লাসে মুখর করে তোলেন পুরো ঘোষণাকেন্দ্র।

এসময় ‘ইনকিলাব জিন্দাবাদ’, ‘তুমি ও জানো, আমি ও জানি, আমরা সবাই বাংলাদেশি’, ‘চাকসু চাকসু’, ‘নারায়ে তাকবির, আল্লাহু আকবার’, ‘আমার দেশ, আমার দেশ, বাংলাদেশ’, ‘দিল্লি না ঢাকা, ঢাকা ঢাকা’- এমন নানান স্লোগানে মুখর হয়ে ওঠে পুরো অডিটরিয়াম।

বুধবার (১৫ অক্টোবর) সকাল ৯টা থেকে ভোটগ্রহণ শুরু হয়ে শেষ হয় বিকেল ৪টায়। দিনভর ক্যাম্পাসে ছিল উৎসবমুখর পরিবেশ। বিভিন্ন ভোটকেন্দ্রের সামনে প্রার্থী ও তাদের সমর্থকেরা সারা দিন অবস্থান করেন। শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণে বিশ্ববিদ্যালয় প্রাঙ্গণ উৎসবের আমেজে ভরে ওঠে।

তবে ছাত্রদলসহ কয়েকটি প্যানেল অভিযোগ করেছে—কিছু কেন্দ্রে সইবিহীন ব্যালট পেপার পাওয়া গেছে এবং অমোচনীয় কালি উঠে মুছে গেছে বলে অভিযোগ করেছেন তারা। এ ছাড়া ভোটগ্রহণে কিছু অব্যবস্থাপনার কথাও উল্লেখ করেন তারা। তবে এসব অভিযোগ নির্বাচন কমিশন অস্বীকার করেছে।

২৭ হাজার ৫১৮ জন ভোটারের মধ্যে প্রতিটি ভোটারকে সর্বমোট ৪০টি ভোট প্রদান করতে হয়েছে। ২৬টি কেন্দ্রীয় এবং ১৪টি হল সংসদের জন্য। ভোটগ্রহণ হয় ব্যালট পেপারের মাধ্যমে, তবে গণনা চলছে আধুনিক ওএমআর (অপটিক্যাল মার্ক রিডার) পদ্ধতিতে।