ঢাকা বুধবার, ২২ অক্টোবর, ২০২৫

জাবিতে দর্শন বিভাগের উদ্যোগে বিশেষ সেমিনার অনুষ্ঠিত

জাবি প্রতিনিধি
প্রকাশিত: অক্টোবর ২২, ২০২৫, ১২:১১ এএম
ছবি- রূপালী বাংলাদেশ

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের দর্শন বিভাগের উদ্যোগে আয়োজিত ‘আধুনিক বিশ্বে ইসলামী দর্শনের পুনর্গঠন: সমস্যা ও সম্ভাবনা’ শীর্ষক বিশেষ সেমিনারে আলোচক হিসেবে দর্শনশাস্ত্র ও সভ্যতা বিষয়ক গবেষক উপস্থিত ছিলেন।

মঙ্গলবার (২১ অক্টোবর) দুপুর ২টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা ও মানবিকী অনুষদের ১০৩ নম্বর কক্ষে দর্শন বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক মো. মুনির হোসেন তালুকদারের সভাপতিত্বে সেমিনারটি অনুষ্ঠিত হয়।

সেমিনারের প্রধান আলোচক হিসেবে প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন জার্মানির ক্যাসেল বিশ্ববিদ্যালয়ের দর্শন ও সভ্যতা বিষয়ক গবেষক বুরহান উদ্দিন আজাদ।

এ সময় প্রধান আলোচক বুরহান উদ্দিন আজাদ বলেন, ‘পশ্চিমা আধুনিক দর্শনে সত্য তথা ধর্মীয় মূল্যবোধকে অস্বীকার করে কেবলমাত্র আকল বা বুদ্ধির মাধ্যমে পৃথিবী ও প্রকৃতি সম্পর্ক জানার চেষ্টা শুরু হয় এবং তার আলোকে নতুন সমাজব্যবস্থার রূপরেখা প্রণয়ন করা হয়। অন্যদিকে, রক্ষণশীল মুসলমানদের একাংশ মনে করেন আরব সংস্কৃতির বাইরে ইসলাম বলতে কিছু নেই। দর্শন যেহেতু আকল তথা যুক্তির আলোকে বিষয়কে প্রশ্ন করে, তাই দর্শনকে তারা হারাম মনে করেন। ফলে সামগ্রিকভাবে ইসলামী দর্শনকে দ্বীনের বিপরীতে ও অপ্রাসঙ্গিক বলে বিবেচনা করা হয়। অথচ ‘ইসলামী দর্শন’ আধুনিক সময়েও একটি গুরুত্বপূর্ণ পরিভাষা।’

তিনি আরও বলেন, ‘প্রতিটি সভ্যতার কেন্দ্রেই কিছু মৌলিক উপাদান থাকে, যা ঐ সভ্যতার গঠনে অনুঘটকের ভূমিকা পালন করে। আর এই মৌলিক উপাদানসমূহ দার্শনিক ও চিন্তাগত কর্মকাণ্ডকে প্রভাবিত করে। ইসলামী সভ্যতার প্রতিষ্ঠাতা হযরত পয়গম্বর (সা.)। এই সভ্যতার মধ্যে গড়ে ওঠা প্রতিটি কিছুর সাথেই কোরআন ও সুন্নতের সরাসরি সম্পর্ক রয়েছে। এই অর্থে দার্শনিক কর্মকাণ্ড কিংবা দার্শনিক তাফাক্কুর (চিন্তা)–এর সাথেও কোরআন ও সুন্নতের সম্পর্ক বিদ্যমান। ইসলামী সভ্যতার বড় বড় দার্শনিক যেমন—কিন্দি, ফারাবি, ইবনে সিনা, ইবনে রুশদ ও আল রাযি—সকলেই মুসলমান ছিলেন। তারা একইসঙ্গে সেই সময়ের বিশিষ্ট মুতাকাল্লিমও ছিলেন।’

সেমিনারে অতিথি হিসেবে অধ্যাপক মঞ্জুর এলাহী বলেন, ‘ইসলামী চিন্তা ও জ্ঞানের ধারাসমূহকে বিভিন্ন দর্শনচর্চার ঐতিহ্যের সঙ্গে সংযুক্ত করে বর্তমান প্রেক্ষাপটে কাজে লাগাতে হবে। ইসলামী সভ্যতায় দর্শনের বিকাশ ও বিশ্বসভ্যতায় ইসলামী দর্শনের অসামান্য অবদান এবং প্রভাবের প্রতি আলোকপাত করা প্রয়োজন।’

অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপক গোলাম রাব্বানী ও দর্শন বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মোহাম্মদ উল্লাহ।

এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন ইসলামী চিন্তা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের ব্যবস্থাপনা পরিচালক হাসান আল ফিরদাউস, দর্শন বিভাগের শিক্ষার্থী ও ইনস্টিটিউটের সেক্রেটারিয়েট সদস্য আব্দুল হামিদ আল জাবেদ।