তিনি ছিলেন এমন এক নির্মাতা, যিনি ক্যামেরার লেন্সে ধরে ফেলেছিলেন বাংলার হৃৎস্পন্দন। আজ ২ মে, সত্যজিৎ রায়ের ১০৪তম জন্মবার্ষিকী।
কেবল জন্মদিন নয়, আজকের দিনটি যেন বাংলা চলচ্চিত্রের ইতিহাসে এক জীবন্ত কিংবদন্তিকে স্মরণ করার দিনও।
কলকাতার এক সাহিত্যপ্রেমী পরিবারে ১৯২১ সালের এই দিনে জন্মেছিলেন তিনি। আর জন্মের পর থেকে তাঁর জীবন যেন ছিল গল্পের মতোই, একেক পর্বে চমক, আবেগ, আর অমর হয়ে ওঠার যাত্রা।
‘পথের পাঁচালী’ দিয়েই বিশ্ব সিনেমার দরজায় নিজের নাম দিয়ে কড়া নাড়েন তিনি। তারপর ‘অপরাজিত’, ‘অপুর সংসার’, ‘চারুলতা’, ‘নায়ক’, ‘হীরক রাজার দেশে’, একের পর এক কালজয়ী সৃষ্টি।
বাংলা ভাষার বাইরেও বিশ্ব দরবারে তাঁর জায়গা আজও অমলিন। চলচ্চিত্র দিয়ে যেমন মন জয় করেছেন, তেমনি ফেলুদা আর শঙ্কুর মাধ্যমে সাহিত্যেও রেখে গেছেন নিজস্ব রাজত্বের ছাপ।
একটি সাক্ষাৎকারে পরিচালক মার্টিন স্করসেজি বলেছিলেন, ‘সত্যজিৎ রায় আমাকে শিখিয়েছেন কীভাবে নিঃশব্দে গল্প বলা যায়।’ এই একটি বাক্যেই বুঝে নেওয়া যায় রায়ের প্রভাব কতটা বিস্তৃত।
তিনি কেবল পরিচালক নন, চিত্রকর, সংগীত পরিচালক, কাহিনিকার, কস্টিউম ডিজাইনার: একজন পূর্ণাঙ্গ শিল্পী। তাঁর হাতে তৈরি প্রতিটি ফ্রেমে ছিল শিল্পের ছোঁয়া, ছিল নিখুঁত বুনন। তাঁর প্রিয় ‘অপু’ আজও জীবিত, দর্শকের মনে।
ভারত সরকার তাঁকে দিয়েছে ‘ভারতরত্ন’, চলচ্চিত্র দুনিয়া দিয়েছে ‘অস্কার’। কিন্তু বাংলা তাকে দিয়েছে ভালোবাসা, আজীবনের শ্রদ্ধা। তাঁর সৃষ্টি এখনো পড়ানো হয় বিশ্ববিদ্যালয়ে, তাঁর চলচ্চিত্র বিশ্লেষণ হয় গবেষণার খাতায়।