কাশ্মীরের পেহেলগামে ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলার পর রীতিমতো উত্তাল হয়ে উঠেছে ভারত-পাকিস্তান সম্পর্ক। সেই উত্তেজনার আঁচ গিয়ে লাগে দুই দেশের সংস্কৃতির মঞ্চে।
পাকিস্তান সরকার এক চরম সিদ্ধান্তে জানিয়ে দিল- এখন থেকে তাদের দেশের সব এফএম রেডিও স্টেশনে ভারতীয় গান পুরোপুরি নিষিদ্ধ।
বৃহস্পতিবার (১ মে) এ নির্দেশনা জারি করেছে পাকিস্তানের তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়, যা সঙ্গে সঙ্গেই কার্যকর হয়েছে।
‘দেশের বর্তমান রাজনৈতিক ও নিরাপত্তাজনিত পরিস্থিতি’কে কারণ হিসেবে উল্লেখ করে পাকিস্তান সম্প্রচার সংঘের মহাসচিব শাকিল মাসুদ বলেন, ‘আমরা দেশের সব এফএম স্টেশনে ভারতীয় গানের সম্প্রচার বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’
তিনি স্বীকার করেন, লতা মঙ্গেশকর, মোহাম্মদ রফি, কিশোর কুমার কিংবা মুকেশ, এদের গান ছিল পাকিস্তানে তুমুল জনপ্রিয়। রেডিও খুললেই যে সুর ভেসে আসত, তা আর শোনা যাবে না বলে দুঃখ প্রকাশ করছেন অনেক শ্রোতা।
পাকিস্তানের তথ্যমন্ত্রী আতাউল্লাহ তারার এ সিদ্ধান্তকে ‘রাষ্ট্রীয় ঐক্যের প্রতীক’ বলেছেন। সম্প্রচার সংঘকে পাঠানো এক চিঠিতে তিনি মন্তব্য করেন, ‘এটি এক দেশপ্রেমী পদক্ষেপ, যা বর্তমান সংকটে আমাদের জাতীয় মনোভাবকে তুলে ধরে।’
এদিকে, পাল্টা জবাব দিয়েছে ভারতও। পেহেলগামের ঘটনার পর দেশটির তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয় পাকিস্তানের ১৬টি ইউটিউব চ্যানেল নিষিদ্ধ করেছে।
প্রভাবশালী গণমাধ্যমের অনলাইন প্ল্যাটফর্ম ডন নিউজ, এআরওয়াই, জিও নিউজসহ সবই এর আওতায় পড়েছে।
শুধু তাই নয়, ভারতীয় ব্যবহারকারীরা এখন অনেক পাকিস্তানি তারকার ইনস্টাগ্রাম প্রোফাইলও আর দেখতে পাচ্ছেন না। হানিয়া আমির, মাহিরা খান কিংবা আলী জাফরের মতো জনপ্রিয় মুখ যেন ভারত থেকে আচমকা গায়েব।
অনলাইন জগতে অনেকেই বলছেন, রাজনীতির দড়ি টানাটানিতে দুই দেশের সম্পর্ক বহুবার টালমাটাল হয়েছে। কিন্তু গান আর সিনেমা ছিল সেই ভাঙা সেতুর শেষ খুঁটি, তা এখন ভেঙে পড়েছে।
সীমান্তের এপারে যখন ‘পাকিস্তানি’ শব্দ শুনলেই সন্দেহ, ওপারে তখন ‘ভারতীয়’ সুর নিষিদ্ধ। সংস্কৃতির বন্ধন এমন এক যাত্রায়, যেখানে মঞ্চ আছে, অভিনেতা আছে, কেবল সংলাপ হারিয়ে গেছে।