ঢাকা মঙ্গলবার, ০১ জুলাই, ২০২৫

আগামী বছরের শুরুতেই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে: প্রধান উপদেষ্টা

রূপালী ডেস্ক
প্রকাশিত: জুলাই ১, ২০২৫, ০২:৩৭ এএম
প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। ছবি- সংগৃহীত

বাংলাদেশে গণতন্ত্রে উত্তরণের অগ্রগতি তুলে ধরে আগামী বছরের শুরুতেই জাতীয় নির্বাচন আয়োজনের ঘোষণা দিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। একইসঙ্গে তিনি চলমান রাজনৈতিক সংলাপের মাধ্যমে প্রয়োজনীয় সংস্কার ও নির্বাচনী কাঠামো পুনর্গঠনের অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেছেন।

সোমবার (৩০ জুন) সন্ধ্যা ৭টা ৩০ মিনিটে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিওর সঙ্গে টেলিফোনে এক গুরুত্বপূর্ণ আলাপে এসব কথা বলেন তিনি।

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘নতুন নির্বাচন কমিশন সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য ভোট আয়োজনের জন্য ভোটার তালিকা, কেন্দ্র ও নির্বাচনী কাঠামো পুনর্গঠনে কাজ করছে। আগের সরকার এই কাঠামো পুরোপুরি ধ্বংস করে দিয়েছিল। আমাদের তরুণরা এবার জীবনে প্রথমবারের মতো ভোট দেবে।’

তিনি বলেন, ‘রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে চলমান সংলাপ এই ব্যবস্থার প্রয়োজনীয় সংস্কারকে ত্বরান্বিত করবে।’

প্রধান উপদেষ্টার উপপ্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ মজুমদার জানান, ফোনালাপটি প্রায় ১৫ মিনিট স্থায়ী ছিল এবং দুই দেশের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের উষ্ণতা ও পারস্পরিক আস্থা এতে প্রতিফলিত হয়।

ফোনালাপে আলোচনার বিষয়গুলোর মধ্যে ছিল, চলমান বাণিজ্য আলোচনা ও পারস্পরিক শুল্ক, গণতন্ত্রে উত্তরণ ও জাতীয় নির্বাচন, রোহিঙ্গা শরণার্থীদের সহায়তা, আঞ্চলিক ভূরাজনৈতিক স্থিতিশীলতা। 

পররাষ্ট্রমন্ত্রী রুবিও বাংলাদেশের সংস্কার প্রক্রিয়া ও নির্ধারিত সময়ের মধ্যে নির্বাচন আয়োজনের প্রতিশ্রুতির প্রতি সমর্থন জানান। তিনি বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের বৃহত্তম রপ্তানি গন্তব্য ও রেমিট্যান্সের অন্যতম প্রধান উৎস। পারস্পরিক শুল্ক আলোচনা দ্রুত সম্পন্ন করে আমরা দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য সম্প্রসারণে আশাবাদী।’

অধ্যাপক ইউনূস যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে ৯০ দিনের জন্য শুল্ক স্থগিত করার বিষয়ে ইতিবাচক সাড়া দেওয়ায় ধন্যবাদ জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আমরা একটি কার্যকর বাণিজ্যিক পদক্ষেপ প্যাকেজ চূড়ান্ত করতে কাজ করছি, যাতে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের বাণিজ্য এজেন্ডার যথাযথ প্রতিফলন ঘটে।’

প্রধান উপদেষ্টা যুক্তরাষ্ট্রকে ২০১৭ সাল থেকে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের জন্য অব্যাহত সহায়তার জন্য আবারও ধন্যবাদ জানিয়ে তিনি বলেন, ‘রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে এখন বাস্তবসম্মত সমাধানের সম্ভাবনা আগের যেকোনো সময়ের চেয়ে বেশি।’

আঞ্চলিক ভূরাজনীতিতে উভয় নেতা ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলের শান্তি ও স্থিতিশীলতা, এবং পার্শ্ববর্তী দেশগুলোর সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক নিয়েও মতবিনিময় করেন।

আলোচনার শেষভাগে অধ্যাপক ইউনূস পররাষ্ট্রমন্ত্রী রুবিওকে বাংলাদেশ সফরের আমন্ত্রণ জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আপনার উপস্থিতি আমাদের তরুণদের জন্য অনুপ্রেরণাদায়ক হবে এবং গণতন্ত্রে উত্তরণের পথকে আরও মজবুত করবে।’