সম্প্রতি ভারতের সঙ্গে যুদ্ধবিরতি আলোচনায় ভূমিকা রাখায় ২০২৬ সালের নোবেল শান্তি পুরস্কারের জন্য মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নাম আনুষ্ঠানিকভাবে সুপারিশ করেছে পাকিস্তান।
শনিবার (২১ জুন) এক্স হ্যান্ডেলে এ সংক্রান্ত একটি বিবৃতি প্রকাশ করেছে দেশটির সরকার।
দেশটির সংবাদমাধ্যম জিও নিউজ জানিয়েছেন, পাকিস্তান সরকার এক বিবৃতিতে জানায়, ভারত ‘অপ্ররোচিত আগ্রাসন’ চালিয়েছে, যা পাকিস্তানের সার্বভৌমত্বের লঙ্ঘন। এতে অনেক নিরীহ মানুষ, বিশেষ করে নারী, শিশু ও বয়স্ক মানুষ প্রাণ হারায়। জবাবে পাকিস্তান চালায় ‘অপারেশন বুনিয়ান-উম-মারসুস’, যা ছিল একটি ‘সুনির্দিষ্ট ও নিয়ন্ত্রিত সামরিক প্রতিক্রিয়া’।
এই উত্তেজনাপূর্ণ পরিস্থিতিতে ট্রাম্প ইসলামাবাদ ও নয়াদিল্লির সঙ্গে কূটনৈতিক যোগাযোগ রাখেন এবং পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন বলে পাকিস্তানের দাবি। বিবৃতিতে বলা হয়, তার এই পদক্ষেপ দ্রুত যুদ্ধবিরতি নিশ্চিত করে ও বড় সংঘাতের সম্ভাবনা ঠেকায়। এজন্য তাকে ‘শান্তি প্রতিষ্ঠাকারী’ বলে আখ্যা দিয়েছে ইসলামাবাদ।
পাকিস্তান আরও বলেছে, ট্রাম্প কাশ্মীর সংকট সমাধানে আগেও মধ্যস্থতার প্রস্তাব দিয়েছিলেন এবং এটি এখনো দক্ষিণ এশিয়ার অস্থিরতার মূল কারণ। তারা জাতিসংঘের প্রস্তাব অনুযায়ী কাশ্মীর সমস্যা সমাধানের ওপর জোর দেয়।
ট্রাম্পের ‘বাস্তববাদী কূটনীতি ও শান্তি প্রচেষ্টার’ প্রশংসা করেছে শেহবাজ শরীফের সরকার এবং আশা প্রকাশ করেছে যে, তার নেতৃত্ব আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক স্থিতিশীলতায় ভূমিকা রাখবে— বিশেষ করে মধ্যপ্রাচ্যের চলমান সংকট যেমন গাজা ও ইরান ইস্যুতে।
অফিসিয়াল ওয়েবসাইট অনুযায়ী, শান্তি পুরস্কার মূলত চারটি প্রধান ক্ষেত্রে অবদানের জন্য দেওয়া হয়— অস্ত্র নিয়ন্ত্রণ ও নিরস্ত্রীকরণ, শান্তি প্রতিষ্ঠায় আলোচনা, গণতন্ত্র ও মানবাধিকার রক্ষা, এবং বিশ্বকে আরও শান্তিপূর্ণ ও সংগঠিত করে তোলার প্রচেষ্টা।
গত ২২ এপ্রিল ভারতের কাশ্মীরে এক হামলায় ২৬ জন নিহতের ঘটনায় উত্তেজনা তৈরি হয়। ভারত পাকিস্তানকে দায়ী করে, কিন্তু পাকিস্তান তা অস্বীকার করে। উভয়ের মধ্যে চার দিন ধরে সংঘর্ষ চলে, যা ১০ মে যুদ্ধবিরতির মাধ্যমে শেষ হয়।
পাকিস্তান এখনো ট্রাম্পের ভূমিকার প্রশংসা করছে, যদিও ভারত তা অস্বীকার করছে। তবে ট্রাম্প ও মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর দাবি করছে, তারা এই উত্তেজনা প্রশমনে কাজ করেছে এবং ভবিষ্যতে কাশ্মীর ইস্যুতেও মধ্যস্থতা করতে চায়।
এদিকে হোয়াইট হাউসের মুখপাত্র আনা কেলি জানিয়েছেন, পাকিস্তানের সেনাপ্রধান আসিম মুনির গত মাসে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে পারমাণবিক যুদ্ধ ঠেকাতে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ভূমিকার জন্য নোবেল শান্তি পুরষ্কারের জন্য তার নাম সুপারিশ করেছেন।
ফরাসি বার্তা সংস্থা রয়টার্সের মতে, গত বুধবার কেলি বলেছেন যে বার্ষিক পুরষ্কারের জন্য তার প্রস্তাবের পর মার্কিন প্রেসিডেন্ট হোয়াইট হাউসে মুনিরকে আতিথ্য দিয়েছিলেন।
শান্তি পুরষ্কারটি মূলত চারটি প্রধান ক্ষেত্রের প্রচেষ্টাকে সম্মান জানাতে দেওয়া হয়েছে- অস্ত্র নিয়ন্ত্রণ ও নিরস্ত্রীকরণ, শান্তি আলোচনা, গণতন্ত্র ও মানবাধিকার, এবং আরও সুসংগঠিত ও শান্তিপূর্ণ কাজ তৈরির লক্ষ্যে কাজ করা, এর অফিসিয়াল ওয়েবসাইট অনুসারে।
আপনার মতামত লিখুন :