বৃহস্পতিবার, ০৫ জুন, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


রূপালী ডেস্ক

প্রকাশিত: জুন ৩, ২০২৫, ১০:৩৭ এএম

গাজরের উপকারিতা

রূপালী ডেস্ক

প্রকাশিত: জুন ৩, ২০২৫, ১০:৩৭ এএম

গাজর। ছবি: সংগৃহীত

গাজর। ছবি: সংগৃহীত

শীতে সকলের প্রিয় সবজির তালিকায় গাজরের নাম থাকবেই। দেখতেও যেমন সুন্দর খেতেও তেমনি সুস্বাদু। সকালের নাস্তায় সবজি থেকে শুরু করে সালাদ, সুপ, তরকারিতে ব্যবহৃত তো হয়ই শেষ পাতের মিষ্টিমুখেও গাজরের হালুয়ার কদর সর্বত্র। শুধু স্বাদ নয় গাজর যত্ন নেয় স্বাস্থ্যের। 

গাজরের পুষ্টিগুণ

প্রতি ১০০ গ্রাম গাজরে থাকে (আনুমানিক):

ক্যালরি: ৪১ কিলোক্যালরি।
পানি: ৮৮%।
প্রোটিন: ০.৯ গ্রাম।
কার্বোহাইড্রেট: ৯.৬ গ্রাম।
চিনি: ৪.৭ গ্রাম।
ফাইবার: ২.৮ গ্রাম।
ফ্যাট: ০.২ গ্রাম।
ভিটামিন এ (বিটা-ক্যারোটিন): চোখের দৃষ্টি উন্নত করে, রাতকানা প্রতিরোধ করে।
ভিটামিন কে১: রক্ত জমাট বাঁধাতে সহায়তা করে।
ভিটামিন সি: রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়।
পটাশিয়াম: রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে।
বায়োটিন ও ভিটামিন বি৬: বিপাকক্রিয়ায় সহায়তা করে।

গাজর কাঁচা না সিদ্ধ, কীভাবে খাওয়া ভালো?

গাজর দিয়ে রকমারি পদ রান্না করা যায়। ফলে স্বাদেও বৈচিত্র্য আসে। তবে কাঁচা গাজর খাওয়াও ভালো। প্রথমত কাঁচা গাজরে স্বাদের তফাত হয়। সিদ্ধ গাজরের চেয়ে কাঁচা গাজরের স্বাদ অনেকেই বেশি পছন্দ করেন। কাঁচা গাজরে থাকা ফাইবার গাট হেল্থ বা পেটের স্বাস্থ্য ভালো রাখতে সহায়ক। কাঁচা গাজরে ভিটামিনের পাশাপাশি কিছু উৎসেচকও মেলে। ফলে কাঁচা গাজরের পুষ্টিগুণও কোনো অংশেই কম নয়।

গাজর উপকারী হলেও বেশি তেল-মসলা দিয়ে উচ্চ তাপমাত্রায় দীর্ঘক্ষণ রান্না করলে তার পুষ্টিগুণ কমে যায়। সে ক্ষেত্রে আঁচ কমিয়ে গাজর সিদ্ধ করা বা ভাপিয়ে নেওয়া ভালো। যদিও গাজরের ক্ষেত্রে চট করে পুষ্টিগুণ নষ্ট হয় না, সেটি সুবিধাজনক। তবে কম বা মধ্যম আঁচেই গাজর রান্না করা ভালো।

গাজর কখন খাওয়া উচিত?

গাজর সুস্থ দৃষ্টিশক্তির সম্ভাবনা বাড়ায়। বিটা-ক্যারোটিন শরীরে ভিটামিন এ-তে রূপান্তরিত হয়, যেখানে এটি চোখের স্বাস্থ্যের উন্নতি করে। তাই খালি পেটে গাজরের রস খেলে তা শরীরকে প্রয়োজনীয় পুষ্টির ডোজ সরবরাহ করে।

খালি পেটে গাজর খাওয়া যাবে কি?

গাজরে থাকা বিটা-ক্যারোটিন শরীরে ভিটামিন এ-তে রূপান্তরিত হয়, যা দৃষ্টিশক্তি উন্নত করতে সাহায্য করে। খালি পেটে গাজরের রস খেলে চোখের সুস্থতা বজায় থাকে। খালি পেটে গাজরের রস পানে শরীর দ্রুত ও কার্যকরভাবে পুষ্টি শোষণ করতে পারে, কারণ পেট খালি থাকলে অন্যান্য খাবারের হস্তক্ষেপ ছাড়াই পুষ্টি উপাদান শোষিত হয়।

প্রতিদিন কতটুকু গাজর খাওয়া উচিত?

প্রতিদিন এক গ্লাস গাজরের জুস শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা আশ্চর্যজনক ভাবে বৃদ্ধি করে। শরীরে ক্ষতিকর জীবাণু, ভাইরাস এবং বিভিন্ন ধরনের প্রদাহের বিরুদ্ধে কাজ করে। গাজরের জুসে ভিটামিন ছাড়াও বিভিন্ন ধরনের খনিজ, পটাশিয়াম, ফসফরাস ইত্যাদি থাকে যা হাড় গঠন, নার্ভাস সিস্টেমকে শক্ত করা ও মস্তিষ্কের ক্ষমতা বৃদ্ধিতে সহায়তা করে।

গাজর কেবল একটি সবজি নয়, এটি একটি পুষ্টির খনি। নিয়মিত গাজর খাওয়ার অভ্যাস গড়ে তুললে শরীরের বহু রোগ প্রতিরোধ করা যায়।

গাজরের উপকারিতা

চোখের দৃষ্টি ভালো রাখে: গাজরে থাকা বিটা-ক্যারোটিন শরীরে গিয়ে ভিটামিন A-তে পরিণত হয়, যা চোখের রেটিনা সুরক্ষিত রাখে ও রাতকানা প্রতিরোধ করে।

ত্বক উজ্জ্বল ও সুস্থ রাখে: গাজরের অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ত্বককে ফ্রি র‌্যাডিক্যালের ক্ষতি থেকে রক্ষা করে, বয়সের ছাপ কমায় ও ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়ায়।

হৃদ্‌রোগের ঝুঁকি কমায়: গাজরে থাকা ফাইবার, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ও পটাশিয়াম রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে এবং কোলেস্টেরল কমিয়ে হৃদ্‌রোগের ঝুঁকি হ্রাস করে।

ক্যান্সার প্রতিরোধে সহায়ক: বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে, গাজরের ফাইটোকেমিক্যাল ও ক্যারোটিনয়েড উপাদান স্তন, ফুসফুস ও কোলন ক্যান্সারের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ ক্ষমতা গড়ে তুলতে সহায়তা করে।

হজমশক্তি বাড়ায়: গাজরে রয়েছে প্রচুর আঁশ (ফাইবার), যা হজমে সহায়তা করে ও কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে।

ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে: গাজরের গ্লাইসেমিক ইনডেক্স তুলনামূলকভাবে কম, যা রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখে। তাই এটি ডায়াবেটিস রোগীদের জন্যও নিরাপদ।

ওজন নিয়ন্ত্রণে সহায়ক: কম ক্যালোরি ও উচ্চ ফাইবারযুক্ত গাজর খেলে দীর্ঘক্ষণ পেট ভরা থাকে, যা ওজন কমাতে সাহায্য করে।

ইমিউন সিস্টেম শক্তিশালী করে: ভিটামিন এ, সি এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট শরীরকে ব্যাকটেরিয়া ও ভাইরাস থেকে সুরক্ষা দেয়।

মাড়ি ও দাঁতের জন্য ভালো: গাজর চিবানো দাঁতের উপর প্রাকৃতিক ঘর্ষণ তৈরি করে, যা দাঁত পরিষ্কার রাখে এবং মাড়ি শক্ত করে।

গাজর সাধারণত একটি নিরাপদ, পুষ্টিকর ও উপকারী সবজি হলেও অতিরিক্ত খাওয়ার ক্ষেত্রে কিছু অপকারিতা হতে পারে।

গাজরের অপকারিতা

কারোটেনেমিয়া: অতিরিক্ত গাজর খেলে শরীরে বিটা-ক্যারোটিন জমে গিয়ে ত্বক হালকা কমলা বা হলুদাভ রঙ ধারণ করতে পারে। একে বলে কারোটেনেমিয়া। এটি বিপজ্জনক নয়, তবে বিভ্রান্তিকর ও অস্বাভাবিক দেখাতে পারে।

রক্তে ভিটামিন এ-এর অতিরিক্ততা: দীর্ঘদিন অতিরিক্ত গাজর খেলে শরীরে ভিটামিন এ-এর মাত্রা বেড়ে যেতে পারে, যা লিভারের ওপর চাপ ফেলে এবং বমি, মাথাব্যথা, দুর্বলতা ইত্যাদি সৃষ্টি করতে পারে।

ডায়রিয়া বা হজমের সমস্যা: অতিরিক্ত ফাইবার খাওয়ার ফলে ব腹ফুলে যাওয়া, গ্যাস, পেট ব্যথা বা ডায়রিয়ার সমস্যা হতে পারে।

রক্ত পাতলা করার সমস্যা: গাজরে থাকা ভিটামিন কে১ রক্ত জমাট বাঁধাতে সাহায্য করে। কিন্তু যারা ব্লাড থিনার বা অ্যান্টিকোয়াগুলেন্ট ওষুধ (যেমন ওয়ারফারিন) খান, তাদের ক্ষেত্রে গাজরের পরিমাণ সতর্কভাবে নিয়ন্ত্রণ করতে হয়।

অ্যালার্জি: কিছু মানুষ গাজরের প্রতি অ্যালার্জিক হতে পারে। লক্ষণগুলো হতে পারে: চুলকানি, মুখে বা গলায় জ্বালাপোড়া, শ্বাসকষ্ট।

রক্তে শর্করা বেড়ে যেতে পারে: যদিও গাজরের গ্লাইসেমিক ইনডেক্স কম, তবুও অতিরিক্ত পরিমাণে খেলে রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা সামান্য বাড়তে পারে, বিশেষ করে কাঁচা গাজরের রস নিয়মিত ও প্রচুর পরিমাণে খেলে।

রূপালী বাংলাদেশ

Link copied!