ঢাকা শনিবার, ০৭ জুন, ২০২৫

গঙ্গাজল কোথায় থেকে আসে, কেন এটি পবিত্র?

রূপালী ডেস্ক
প্রকাশিত: জুন ৬, ২০২৫, ১১:৩২ এএম
গঙ্গাজলে স্নানরত এক ব্যক্তি। ছবি-সংগৃহীত

ভারতের অন্যতম ‘পবিত্র’ নদী গঙ্গা—শুধু ধর্মীয় বিশ্বাসে নয়, বৈজ্ঞানিক দৃষ্টিকোণ থেকেও গঙ্গার জল একটি বিশেষত্ব বহন করে। প্রাচীনকাল থেকে বিশ্বাস করা হয়, গঙ্গাজল কখনো নষ্ট হয় না, এমনকি বছরের পর বছর সংরক্ষণের পরও দুর্গন্ধহীন ও ব্যবহারযোগ্য থাকে।

এই বিশ্বাস কেবল আধ্যাত্মিক নয়—এর পেছনে রয়েছে কঠিন বৈজ্ঞানিক যুক্তিও।

গবেষণায় জানা গেছে, গঙ্গার জলে রয়েছে ব্যাকটেরিওফেজ (bacteriophage) নামক বিশেষ একধরনের অণুজীব, যা জল থেকে ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়া ধ্বংস করে। এই অণুজীব স্বাভাবিকভাবেই গঙ্গার জলকে বিশুদ্ধ রাখতে সাহায্য করে।

এ ছাড়া গঙ্গার জলে অন্যান্য নদীর তুলনায় উচ্চমাত্রার অক্সিজেন ও খনিজ পদার্থ থাকে, যা জীবাণু জন্মাতে বাধা দেয় এবং জলকে স্বয়ংক্রিয়ভাবে বিশুদ্ধ রাখে।

গবেষণায় দেখা গেছে, গঙ্গাজলে অন্য নদীগুলোর তুলনায় প্রায় ২৫ শতাংশ বেশি অক্সিজেন থাকে। এই অতিরিক্ত অক্সিজেন ব্যাকটেরিয়া বা জীবাণুর বৃদ্ধিকে বাধা দেয়, ফলে জল পচে না ও দীর্ঘদিন সংরক্ষণযোগ্য থাকে।

গঙ্গা নদী হিমালয়ের গঙ্গোত্রীর গোমুখ থেকে উৎপন্ন হয়ে নানা খনিজে সমৃদ্ধ পাহাড়ি অঞ্চল পেরিয়ে হরিদ্বারে প্রবেশ করে। এই পথ ধরে জলরাশিতে মেশে সালফারসহ নানা খনিজ উপাদান, যা জীবাণুর বৃদ্ধি রোধ করে।

হিন্দুধর্মে গঙ্গাজল পবিত্রতা ও আত্মশুদ্ধির প্রতীক। নানা ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠানে, পূজায়, মৃতদেহে জল ঢালায় গঙ্গাজলের ব্যবহার অবিচ্ছেদ্য অংশ। তবে আশ্চর্যের বিষয়—এই ধর্মীয় শ্রদ্ধার মধ্যেও বহু মানুষ আজও গঙ্গা নদীকে দূষিত করতে পিছপা হন না।

গঙ্গা নদী মূলত ভাগীরথী ও অলকানন্দা নদীর মিলনে গঠিত। এটি উত্তরাখণ্ড থেকে উৎপন্ন হয়ে ভারত ও বাংলাদেশ মিলিয়ে প্রায় ২৫২৫ কিলোমিটার পথ অতিক্রম করে। গঙ্গার বাম পাশের প্রধান উপনদীগুলোর মধ্যে রয়েছে—রামগঙ্গা, গোমতী, ঘাঘরা, গণ্ডক, কোশী ও মহানন্দা। আর ডান পাশ থেকে যুক্ত হয়েছে যমুনা ও সোন নদী।