প্রাকৃতিক ইনসুলিন হিসেবে কাজ করে সজনে পাতা। রক্তে শর্করা নিয়ন্ত্রণে আনে দ্রুত।
ডায়াবেটিস রোগীরা রক্তে অতিরিক্ত শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে অনেক সময় ওষুধ নির্ভর হয়ে পড়েন। তবে কিছু প্রাকৃতিক উপাদান নিয়মিত সেবনে ব্লাড সুগার নিয়ন্ত্রণে রাখা যায়। এর মধ্যে অন্যতম হলো সজনে পাতা। বিশেষ করে কাঁচা সজনে পাতার রস বা চিবিয়ে খাওয়া ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য অত্যন্ত উপকারী বলে গবেষণায় প্রমাণিত হয়েছে।
রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে সহায়ক
সজনে পাতায় রয়েছে আইসোথায়োসায়ানেটস (Isothiocyanates) নামক এক ধরনের অ্যান্টি-ডায়াবেটিক যৌগ, যা রক্তে ইনসুলিনের কার্যকারিতা বাড়ায় এবং গ্লুকোজ শোষণ কমিয়ে দেয়। এতে রক্তে শর্করার মাত্রা স্বাভাবিক রাখতে সাহায্য করে।
ইনসুলিন সংবেদনশীলতা বৃদ্ধি করে
সজনে পাতা প্যানক্রিয়াসকে ইনসুলিন উৎপাদনে সহায়তা করে এবং দেহকে ইনসুলিনের প্রতি সংবেদনশীল করে তোলে। এতে টাইপ-২ ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে সহজ হয়।
অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট ও অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি উপাদান সমৃদ্ধ
ডায়াবেটিস রোগীদের শরীরে সাধারণত জটিলতা ও প্রদাহ দেখা যায়। সজনে পাতা শরীরের ফ্রি র্যাডিক্যালের প্রভাব কমিয়ে প্রদাহ ও কোষ ক্ষয় প্রতিরোধে কাজ করে। এতে হৃৎপিণ্ড, কিডনি ও চোখের জটিলতা হ্রাস পায়।
কোলেস্টেরল ও রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে
সজনে পাতার নিয়মিত সেবনে কোলেস্টেরলের মাত্রা কমে এবং উচ্চ রক্তচাপও নিয়ন্ত্রণে থাকে। ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য এই দুটি ঝুঁকি কমানো খুব জরুরি।
হজমে সহায়ক ও ওজন নিয়ন্ত্রণে সহায়ক
সজনে পাতায় ফাইবার বা আঁশের পরিমাণ বেশি, যা হজমে সাহায্য করে এবং দীর্ঘ সময় পেট ভরা রাখে। এতে অতিরিক্ত খাওয়া কমে, ফলে ওজন নিয়ন্ত্রণে থাকে যা ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণের জন্য গুরুত্বপূর্ণ।
কীভাবে খাবেন?
- প্রতিদিন সকালে খালি পেটে ৫-৭টি কাঁচা সজনে পাতা চিবিয়ে খেতে পারেন।
- বা ১ চা চামচ পাতার রস পান করতে পারেন।
- চাইলে শুকিয়ে গুঁড়ো করে পানিতে মিশিয়ে খাওয়া যায়।
- অবশ্যই পরিষ্কার করে খেতে হবে।
সতর্কতা
- যাদের গ্যাস্ট্রিক সমস্যা আছে, তাদের জন্য কাঁচা সজনে পাতা কখনো কখনো অস্বস্তিকর হতে পারে।
- অতিরিক্ত খাওয়া হলে বমিভাব বা হালকা মাথা ঘোরার মতো সমস্যা দেখা দিতে পারে।
- ডায়াবেটিক ওষুধ খাওয়ার পাশাপাশি এটি খেলে রক্তে শর্করার মাত্রা অতিরিক্ত কমে যেতে পারে তাই চিকিৎসকের পরামর্শ গ্রহণ জরুরি।
ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে কাঁচা সজনে পাতা একটি প্রাকৃতিক, নিরাপদ ও কার্যকর সহায়ক উপাদান। এটি ইনসুলিন সংবেদনশীলতা বাড়িয়ে ব্লাড সুগার নিয়ন্ত্রণে রাখতে সহায়তা করে। তবে ওষুধের বিকল্প নয় বরং চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী খাদ্য তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা উত্তম।
আপনার মতামত লিখুন :