ফুসফুস ও শ্বাস-প্রশ্বাসের ক্ষমতা বাড়িয়ে সুস্থতার নতুন দ্বার খুলে দেয় নিয়মিত দম বৃদ্ধির ব্যায়াম।বর্তমানে শারীরিক ফিটনেস ও স্বাস্থ্য সচেতনতায় দম বা শ্বাস-প্রশ্বাস বৃদ্ধির ব্যায়াম অত্যন্ত জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। নিয়মিত দম বৃদ্ধির ব্যায়াম করলে ফুসফুসের কার্যক্ষমতা বাড়ে, শরীরে অক্সিজেন সরবরাহ উন্নত হয় এবং স্ট্যামিনা বা কর্মক্ষমতা অনেক বৃদ্ধি পায়। শুধু তাই নয়, হৃদযন্ত্র থেকে শুরু করে মস্তিষ্ক পর্যন্ত পুরো শরীর উপকৃত হয় দম বাড়ানোর সহজ কিছু ব্যায়ামের মাধ্যমে।
দম বৃদ্ধির ব্যায়ামের উপকারিতা
ফুসফুসের ক্ষমতা বাড়ায়
দম বৃদ্ধির ব্যায়াম ফুসফুসের বাতাস ধারণ করার ক্ষমতা বাড়ায়। ফলে সহজে শ্বাস নিতে পারা যায় এবং শ্বাসকষ্টের ঝুঁকি কমে।
স্ট্যামিনা ও কর্মক্ষমতা বৃদ্ধি পায়
এই ব্যায়াম শরীরের মোট শারীরিক সহ্যশক্তি বাড়িয়ে তোলে। ফলে দৈনন্দিন কাজকর্ম বা ব্যায়ামের সময় সহজে ক্লান্তি আসে না।
শ্বাসকষ্ট ও হাঁপানি নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে
যাদের হাঁপানি, শ্বাসকষ্ট বা ক্রনিক ব্রঙ্কাইটিসের সমস্যা আছে, তাদের জন্য দম বৃদ্ধির ব্যায়াম খুবই উপকারী। নিয়মিত চর্চা করলে শ্বাসকষ্ট অনেকটাই কমে যায়।
মানসিক চাপ কমায়
শ্বাস-প্রশ্বাসের নিয়ন্ত্রিত ব্যায়াম (যেমন গভীর শ্বাস নেওয়া বা ধীরে ধীরে শ্বাস ছাড়া) মানসিক চাপ, উদ্বেগ ও টেনশন কমাতে সাহায্য করে।
হার্টের কার্যক্ষমতা বাড়ায়
শরীরে পর্যাপ্ত অক্সিজেন সরবরাহের মাধ্যমে দম বৃদ্ধির ব্যায়াম হৃদপিণ্ডের উপর চাপ কমায় এবং হার্টের স্বাস্থ্য ভালো রাখে।
রক্তে অক্সিজেনের মাত্রা বাড়ায়
ফুসফুস ভালোভাবে কাজ করলে রক্তে পর্যাপ্ত অক্সিজেন প্রবাহিত হয়, যা শরীরের প্রতিটি কোষকে সক্রিয় রাখে এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ে।
ঘুমের মান উন্নত করে
দম বৃদ্ধির ব্যায়াম স্নায়ুতন্ত্রকে শান্ত করে, ফলে ভালো ঘুম হয় এবং ঘুমের মান উন্নত হয়।
শরীরের ভারসাম্য ও নিয়ন্ত্রণ বৃদ্ধি পায়
বিশেষ করে যারা যোগব্যায়াম বা মেডিটেশন করেন, তাদের জন্য দম নিয়ন্ত্রণের ব্যায়াম শরীরের ভারসাম্য ও কন্ট্রোল বাড়াতে দারুণ সহায়ক।
কিছু জনপ্রিয় দম বৃদ্ধির ব্যায়াম
গভীর শ্বাস নেওয়া (Deep Breathing)
বুক ফুলিয়ে শ্বাস নেওয়া (Chest Expansion Exercise)
শ্বাস আটকে রাখা (Breath Holding Exercise)
ভরা পেটে শ্বাস-প্রশ্বাস নিয়ন্ত্রণ (Pranayama বা অনুলোম-বিলোম)
সিঁড়ি ওঠা-নামা বা হালকা দৌড়ানো
বেলুন ফুলানোর মতো শ্বাস-প্রশ্বাস ব্যায়াম
সতর্কতা
দম বৃদ্ধির ব্যায়াম করার সময় ধীরে ধীরে শুরু করা উচিত।
যাদের ফুসফুসে গুরুতর সমস্যা আছে, তারা অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে ব্যায়াম করবেন।
ব্যায়ামের সময় যদি অতিরিক্ত ক্লান্তি, মাথা ঘোরা বা শ্বাসকষ্ট হয়, তাহলে তা বন্ধ করে বিশ্রাম নিতে হবে।
দম বৃদ্ধির ব্যায়াম অত্যন্ত সহজ, কিন্তু দারুণ কার্যকর একটি স্বাস্থ্য রক্ষার উপায়। নিয়মিত এই ব্যায়াম করলে ফুসফুসের ক্ষমতা বাড়ে, শ্বাস-প্রশ্বাস স্বাভাবিক হয়, শারীরিক স্ট্যামিনা বৃদ্ধি পায় এবং মানসিক চাপও কমে। তাই প্রতিদিন মাত্র কয়েক মিনিট সময় বের করে দম বৃদ্ধির ব্যায়াম করলে পুরো শরীর ও মনের জন্য মিলবে আশ্চর্যজনক উপকার।
আপনার মতামত লিখুন :