সহজলভ্য এই ফলটি রোগ প্রতিরোধ থেকে শুরু করে ওজন নিয়ন্ত্রণে গুরুত্বপূর্ণ, তবে অতিরিক্ত খেলে হতে পারে ঝামেলা।পেয়ারা আমাদের দেশের অন্যতম জনপ্রিয় ও সহজলভ্য ফল। এটি শুধু স্বাদেই নয়, বরং পুষ্টিগুণে ভরপুর। পেয়ারায় রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, ফাইবার ও খনিজ উপাদান, যা শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় এবং বিভিন্ন রোগ-প্রতিরোধে সাহায্য করে। তবে অতিরিক্ত বা ভুলভাবে খেলে পেয়ারার কিছু পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াও হতে পারে।
পেয়ারা খাওয়ার উপকারিতা
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়
পেয়ারায় প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি থাকে, যা শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। নিয়মিত পেয়ারা খেলে ঠান্ডা, ফ্লু বা সংক্রমণের ঝুঁকি কমে।
হজমশক্তি উন্নত করে
পেয়ারায় প্রচুর ফাইবার থাকে, যা হজমশক্তি বাড়ায়। এটি কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে সাহায্য করে এবং অন্ত্র পরিষ্কার রাখে।
ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে সহায়ক
পেয়ারায় থাকা ফাইবার ও কম গ্লাইসেমিক ইনডেক্স রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে, যা ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য উপকারী।
ওজন কমাতে সাহায্য করে
পেয়ারা কম ক্যালরির একটি ফল। এতে থাকা ফাইবার দীর্ঘক্ষণ পেট ভরা রাখতে সাহায্য করে, ফলে অতিরিক্ত খাওয়ার প্রবণতা কমে এবং ওজন নিয়ন্ত্রণে থাকে।
ত্বক ও চুলের জন্য উপকারী
পেয়ারার ভিটামিন সি ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়ায়, ব্রণ কমায় এবং ত্বকের বার্ধক্য রোধ করে। এছাড়া চুল পড়া রোধ করতেও পেয়ারা কার্যকর।
হৃদরোগের ঝুঁকি কমায়
পেয়ারায় থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, পটাশিয়াম ও ফাইবার রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে এবং হৃদরোগের ঝুঁকি কমায়।
ক্যানসার প্রতিরোধে সাহায্য করে
গবেষণায় দেখা গেছে, পেয়ারার মধ্যে থাকা কিছু উপাদান কোষের অস্বাভাবিক বৃদ্ধি প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে, যা ক্যানসার প্রতিরোধে ভূমিকা রাখে।
পেয়ারা খাওয়ার অপকারিতা
অতিরিক্ত খেলে হজমে সমস্যা হতে পারে
অতিরিক্ত পেয়ারা খেলে ফাইবারের আধিক্যের কারণে গ্যাস, পেট ফাঁপা বা পেটের অস্বস্তি হতে পারে।
পেয়ারা বীজ বেশি খেলে পেটের সমস্যা
অনেক সময় বেশি বীজসহ পেয়ারা খেলে তা অন্ত্রের সমস্যা বা কোষ্ঠকাঠিন্যের ঝুঁকি তৈরি করতে পারে।
ঠান্ডা-কাশির সমস্যা বাড়াতে পারে
কাঁচা বা বেশি পেয়ারা খেলে কারও কারও ক্ষেত্রে ঠান্ডা, কাশি বা গলা খুসখুসে ভাব বাড়তে পারে।
অ্যালার্জির সমস্যা
অল্প সংখ্যক মানুষের ক্ষেত্রে পেয়ারা খাওয়ার ফলে ত্বকে চুলকানি বা অ্যালার্জির প্রতিক্রিয়া দেখা দিতে পারে।
নিরাপদে কীভাবে খাওয়া উচিত?
দিনে ১-২টি পেয়ারা খাওয়া সবচেয়ে ভালো।
ভালোভাবে ধুয়ে, খোসা ছাড়িয়ে বা বীজ আলাদা করে খাওয়া যেতে পারে।
ডায়াবেটিস রোগীরা চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে পরিমিত পেয়ারা খাবেন।
ঠান্ডা-কাশিতে ভোগার সময় পেয়ারা খাওয়ার আগে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
পেয়ারা সহজলভ্য হলেও এর পুষ্টিগুণ অসাধারণ। এটি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়, হজমশক্তি উন্নত করে, ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখে এবং ত্বক-চুলের যত্নে ভূমিকা রাখে। তবে অতিরিক্ত বা ভুলভাবে খেলে পেটের সমস্যা, ঠান্ডা বা অ্যালার্জির ঝুঁকি হতে পারে। তাই নিয়ম মেনে এবং পরিমিত পরিমাণে পেয়ারা খেলে এর পূর্ণ উপকারিতা পাওয়া সম্ভব।
আপনার মতামত লিখুন :