ঢাকা সোমবার, ২৩ জুন, ২০২৫

পুদিনা পাতার উপকারিতা ও অপকারিতা

রূপালী ডেস্ক
প্রকাশিত: জুন ২৩, ২০২৫, ০৩:৪৯ পিএম
পুদিনা পাতার উপকারিতা ও অপকারিতা। ছবি: সংগৃহীত

সুগন্ধি ও ঠান্ডা প্রকৃতির এই ভেষজ পাতা শরীর ও মনের জন্য দারুণ উপকারী, তবে অতিরিক্ত খেলে হতে পারে কিছু সমস্যাও।পুদিনা পাতা শুধু খাবারে সুগন্ধ ও স্বাদ বাড়ায় না, এটি বহু বছর ধরে ভেষজ চিকিৎসায় ব্যবহৃত হয়ে আসছে। পুদিনা পাতায় রয়েছে শক্তিশালী অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ও শীতল প্রভাব, যা হজম, ত্বক, শ্বাস-প্রশ্বাস এবং মানসিক প্রশান্তি দিতে সাহায্য করে। তবে অতিরিক্ত বা ভুলভাবে খেলে পুদিনা পাতার কিছু অপকারিতাও রয়েছে।

পুদিনা পাতার উপকারিতা

হজম শক্তি বাড়ায়

পুদিনা পাতা হজমে দারুণ সহায়তা করে। গ্যাস, বদহজম, বমি ভাব বা পেট ফাঁপা কমাতে এটি খুবই কার্যকর।

ঠান্ডা ও সর্দি উপশম করে

পুদিনা পাতায় থাকা মেনথল শ্বাস-প্রশ্বাসের পথ পরিষ্কার রাখে এবং ঠান্ডা-কাশি কমাতে সাহায্য করে।

মুখের দুর্গন্ধ দূর করে

পুদিনা পাতা চিবালে বা এর রস খেলে মুখের দুর্গন্ধ দূর হয় এবং মুখে দীর্ঘক্ষণ সুগন্ধ থাকে।

মানসিক চাপ কমায়

পুদিনার শীতল প্রভাব মানসিক চাপ ও ক্লান্তি দূর করে এবং মনকে সতেজ রাখে।

ত্বকের যত্নে কার্যকর

পুদিনার রস ত্বকের ব্রণ, ফুসকুড়ি বা চুলকানি কমাতে সাহায্য করে। অনেকেই পুদিনার রস ফেসপ্যাকে ব্যবহার করেন।

ব্যথা ও প্রদাহ কমায়

পুদিনা পাতার শীতল প্রকৃতি মাথাব্যথা বা সাধারণ ব্যথা কমাতে সাহায্য করে। পুদিনার তেল ম্যাসাজ করলে দ্রুত আরাম পাওয়া যায়।

ওজন নিয়ন্ত্রণে সহায়ক

পুদিনা পাতার রস বা চা হজম প্রক্রিয়া উন্নত করে, যা ওজন নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে।

পুদিনা পাতার অপকারিতা

অতিরিক্ত খেলে পেটের সমস্যা হতে পারে

অতিরিক্ত পুদিনা পাতা বা এর রস খেলে পেটের ব্যথা, গ্যাস্ট্রিক বা ডায়রিয়ার সমস্যা হতে পারে।

অ্যালার্জির সমস্যা

কিছু মানুষের ক্ষেত্রে পুদিনা পাতা বা এর রসে ত্বকে অ্যালার্জি, চুলকানি বা লালচে ভাব দেখা দিতে পারে।

গর্ভবতী নারীদের জন্য সতর্কতা

গর্ভাবস্থায় অতিরিক্ত পুদিনা পাতা বা পুদিনার তেল খাওয়া ঝুঁকিপূর্ণ হতে পারে। তাই চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া গ্রহণ করা উচিত নয়।

এসিডিটি বাড়াতে পারে

যাদের পেটে অতিরিক্ত এসিডিটির সমস্যা আছে, তারা বেশি পুদিনা খেলে সমস্যা বাড়তে পারে।

নিরাপদে কীভাবে গ্রহণ করবেন?

প্রতিদিন সামান্য পরিমাণে পুদিনা পাতা সালাদ, শরবত বা রান্নায় ব্যবহার করুন।
পুদিনা পাতার চা বা রস দিনে ১-২ বার খাওয়া যেতে পারে।

অতিরিক্ত পুদিনা তেল বা ঘন রস একসঙ্গে খাওয়া এড়িয়ে চলুন।
শিশুদের ক্ষেত্রে পুদিনা ব্যবহার করার আগে বিশেষ সতর্কতা অবলম্বন করুন।
যাদের অ্যালার্জি আছে, তারা আগে প্যাচ টেস্ট করে নিতে পারেন।

পুদিনা পাতা শুধু স্বাদের জন্যই নয়, বরং শরীরের হজমশক্তি উন্নত করা, সর্দি-কাশি কমানো, মুখের দুর্গন্ধ দূর করা, ত্বকের যত্ন এবং মানসিক প্রশান্তিতে দারুণ উপকারী। তবে অতিরিক্ত খাওয়া বা ব্যবহারে পেটের সমস্যা, অ্যালার্জি বা অন্যান্য অসুবিধা দেখা দিতে পারে। তাই সঠিক নিয়মে ও পরিমিত পরিমাণে পুদিনা পাতা খেলে এর পূর্ণ উপকারিতা পাওয়া সম্ভব।