ঢাকা শুক্রবার, ১৮ জুলাই, ২০২৫

কাশ্মীরে হামলায় অভিযুক্ত গোষ্ঠীকে ‘সন্ত্রাসী’ তালিকাভুক্ত করল যুক্তরাষ্ট্র

বিশ্ব ডেস্ক
প্রকাশিত: জুলাই ১৮, ২০২৫, ০৬:৫০ পিএম
ভারত-শাসিত কাশ্মীরে গত এপ্রিলে হামলার ঘটনায় নিরাপত্তা জোরদার করা হয়। ছবি- সংগৃহীত

ভারত-শাসিত কাশ্মীরে গত এপ্রিলে একটি ভয়াবহ হামলায় ২৬ জন নিহত হওয়ার পর ‘দ্য রেজিস্ট্যান্স ফ্রন্ট’ (টিআরএফ)-কে ‘সন্ত্রাসী সংগঠন’ হিসেবে তালিকাভুক্ত করেছে যুক্তরাষ্ট্র। সংবাদমাধ্যম আলজাজিরার এক প্রতিবেদনে শুক্রবার এ তথ্য জানানো হয়।

মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও বৃহস্পতিবার দেওয়া এক বিবৃতিতে জানান, টিআরএফ হলো লস্কর-ই-তাইয়্যেবার একটি শাখা সংগঠন এবং কাশ্মীরের পর্যটন কেন্দ্র পাহেলগামে সংঘটিত হামলার দায় স্বীকার করেছিল সংগঠনটি। এ ছাড়া, ভারতীয় নিরাপত্তা বাহিনীর ওপর একাধিক হামলার পেছনেও টিআরএফ-এর নাম উঠে এসেছে।

এই পদক্ষেপ মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের কঠোর পররাষ্ট্রনীতির একটি দৃষ্টান্ত উল্লেখ করে রুবিও আরও বলেন, ‘স্বরাষ্ট্র বিভাগের এই সিদ্ধান্ত প্রমাণ করে যে ট্রাম্প প্রশাসন আমাদের জাতীয় নিরাপত্তা রক্ষা, সন্ত্রাস দমন এবং পাহেলগাম হামলার জন্য ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠায় দৃঢ়প্রতিজ্ঞ।’

এদিকে আল জাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়, টিআরএফ প্রথমে হামলার দায় স্বীকার করলেও কয়েকদিন পর তারা নিজেদের সংশ্লিষ্টতা অস্বীকার করে।

ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বাধীন সরকার বিজেপি এই হামলার জন্য প্রতিবেশী পাকিস্তানকে দায়ী করে এবং অভিযোগ তোলে যে পাকিস্তান সন্ত্রাসী গোষ্ঠীগুলোকে সমর্থন দিয়ে ভারতীয় নিরাপত্তা বাহিনী ও বেসামরিক নাগরিকের ওপর হামলা চালাতে সাহায্য করছে।

উল্লেখ্য, ২০০৮ সালে মুম্বাইয়ে ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলা চালায় লস্কর-ই-তাইয়্যেবার সদস্যরা। এতে ১৬০ জনের বেশি নিহত এবং শত শত মানুষ আহত হন। রুবিও পাহেলহাম হামলাকে ভারতের বেসামরিক নাগরিকদের ওপর ২০০৮ সালের পর সবচেয়ে প্রাণঘাতী হামলা বলে উল্লেখ করেন।

বিশ্লেষকরা মনে করেন, পাকিস্তান অতীতে এ ধরনের গোষ্ঠীগুলোকে ভারতের বিরুদ্ধে চাপ তৈরির হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করেছে। তবে কাশ্মীরে ভারতের দমনমূলক সামরিক শাসন এবং মানবাধিকার লঙ্ঘনের ইতিহাসও সেখানে বিক্ষোভ ও সশস্ত্র প্রতিরোধের একটি বড় কারণ হয়ে উঠেছে।

কাশ্মীর ভারতের একমাত্র মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ অঞ্চল, যেখানে হিন্দু জাতীয়তাবাদীরা দীর্ঘদিন ধরে আরও কড়া নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠার চেষ্টা করছে।

এপ্রিলের পাহেলগাম হামলার পর ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে উত্তেজনা বাড়ে এবং দুই দেশ একে অপরকে কড়া জবাব দিতে থাকে। পরে একটি সাময়িক যুদ্ধবিরতিতে পৌঁছায় তারা, যার মধ্যস্থতার কৃতিত্ব ট্রাম্প দাবি করলেও ভারত মার্কিন হস্তক্ষেপ অস্বীকার করেছে।