ঢাকা শুক্রবার, ১৮ জুলাই, ২০২৫

কিডনি দেওয়ার আগে দোতলা বাড়ি লিখে নিয়েছিলেন স্ত্রী, দাবি স্বামীর

রূপালী ডেস্ক
প্রকাশিত: জুলাই ১৮, ২০২৫, ০৬:১৭ পিএম
সাভারের সেই আলোচিত স্বামী-স্ত্রী। ছবি- সংগৃহীত

সাভারের আলোচিত কিডনিকাণ্ডে এবার নতুন মোড় নিয়েছে ঘটনাপ্রবাহ। স্ত্রী উম্মে সাহেদীনা টুনির বিরুদ্ধে পরকীয়া ও প্রতারণার অভিযোগ তুলেছেন তার স্বামী মোহাম্মদ তারেক। 

তারেকের দাবি, কিডনি দেওয়ার আগে স্ত্রী তার কাছ থেকে দোতলা বাড়ির মালিকানা লিখে নিয়েছিলেন, যার বর্তমান মূল্য প্রায় ৬০ লাখ টাকা।

এর আগে টুনি অভিযোগ করেছিলেন, কিডনি দিয়ে স্বামীর জীবন বাঁচানোর পর তারেক জড়িয়ে পড়েন পরকীয়ায়, অনলাইন জুয়ায়, এমনকি তাকে নির্যাতন করে বাড়ি থেকে বের করে দেন। তবে এবার উল্টো অভিযোগ তুলেছেন তারেক।

এক সাক্ষাৎকারে তারেক বলেন, ‘চেন্নাইয়ে চিকিৎসা চলাকালে টুনি কিডনি দিতে সম্মত হয় এই শর্তে যে, আমি দোতলা বাড়ির মালিকানা তার নামে লিখে দেব। আমি সেটা রেজিস্ট্রি করে দেই। এরপরই সে কিডনি দেয়। তার মা-বোন তখন আপত্তি জানালেও সে আমার প্রতি ভালোবাসার কারণে রাজি হয়।’

তবে তারেকের দাবি অনুযায়ী, কিডনি দেওয়ার পর থেকে টুনির আচরণে পরিবর্তন দেখা দেয়। তিনি বলেন, ‘মোবাইল ফোনে আসক্ত হয়ে পড়ে সে। টিকটক ব্যবহার শুরু করে এবং একের পর এক পুরুষের সঙ্গে সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ে। এমনকি থাইল্যান্ড থেকে একজন ছেলেও এসেছিল তার টানে।’

তারেক অভিযোগ করেন, ‘‘স্ত্রী টুনি দীর্ঘদিন ধরে ‘রিজভী’ নামে একজনের সঙ্গে সম্পর্ক চালিয়ে যাচ্ছিলেন। একবার গভীর রাতে তাকে ঘরের এক বন্ধ রুমে আপত্তিকর অবস্থায় ধরার কথাও জানান তিনি।’’

পরবর্তীতে টুনি তার বিরুদ্ধে নারী নির্যাতন ও যৌতুকের মামলা করেন। তারেক বলেন, ‘আমি ৪০ দিন জেলে ছিলাম। ওদের পরিকল্পনা ছিল আমাকে জেলে মেরে ফেলার। কিডনির রোগী হয়ে ওষুধ না খেলে আমি মারা যেতে পারি, এটা তারা জানত।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমার মা অনেক আগেই বাড়ি থেকে তাড়িত হয়েছিলেন। যখন পুলিশ আমাকে বাসা থেকে ধরে নিয়ে যায়, তখন কেউ জানত না। আমার ছোট ভাই জামিন করিয়ে আমাকে বের করে।’

নিজের বিরুদ্ধে পরকীয়ার অভিযোগ অস্বীকার করে তারেক বলেন, ‘টুনিই বলেছে, আমি শারীরিকভাবে অক্ষম। তাহলে আমি কীভাবে অন্য নারীর সঙ্গে সম্পর্ক রাখি?’

এখন তিনি সেই দোতলা বাড়িতে থাকেন না। তার মা মনে করেন, তিনি বাড়িতে গেলে তার জীবন ঝুঁকির মুখে পড়তে পারে। ফলে ফোন, কাপড়চোপড় সবকিছু ওই বাড়িতে রেখেই তিনি অন্যত্র অবস্থান করছেন।

পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, ২০০৬ সালে পারিবারিকভাবে বিয়ে হয় মালয়েশিয়া প্রবাসী তারেক ও কলেজপড়ুয়া টুনির। এক বছর পর জন্ম হয় তাদের পুত্রসন্তান আজমাইন দিব্য। ২০০৮ সালের মাঝামাঝি সময়ে হঠাৎ করে অসুস্থ হয়ে পড়েন তারেক। এরপর চিকিৎসার অংশ হিসেবে তার কিডনি প্রতিস্থাপন করতে হয়, যেখানে টুনি নিজের কিডনি দান করেন।