অনলাইনভিত্তিক শিক্ষা প্ল্যাটফর্ম ‘অন্বেষণ এডু’র দুই প্রতিষ্ঠাতা এবং দুজন শিক্ষককে অশ্লীল ভিডিও সম্প্রচারের অভিযোগে বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট ও ঢাকা জজ কোর্টের ৫ আইনজীবীর পক্ষ থেকে লিগ্যাল নোটিশ পাঠানো হয়েছে।
নোটিশে অন্বেষণ এডু’র দুই সহ-স্বত্বাধিকারী আকাশ ও অর্ক এবং সংশ্লিষ্ট দুই শিক্ষক সামিরা ও অজ্ঞাতনামা এক পুরুষ শিক্ষকের নাম উল্লেখ করা হয়েছে।
নোটিশটি পাঠিয়েছেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মো. সাখাওয়াত হোসাইনসহ পাঁচজন আইনজীবী।
অভিযোগকারীরা দাবি করেন, এই ঘটনা পূর্বপরিকল্পিত এবং সরাসরি সম্প্রচারের মাধ্যমে তা আরও বিস্তার লাভ করে, যা সমাজে ‘গণউপদ্রব’ সৃষ্টি করেছে।
আইনজীবীদের পক্ষ থেকে জানানো হয়, এই ঘটনায় সংশ্লিষ্ট চারজনকে ৩ কর্মদিবসের মধ্যে অনলাইনে সরাসরি লাইভে এসে জাতির কাছে ক্ষমা চাইতে হবে এবং ভবিষ্যতে এ ধরনের কর্মকাণ্ড থেকে বিরত থাকার প্রতিশ্রুতি দিতে হবে। অন্যথায় তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
নোটিশে বলা হয়েছে, অন্বেষণ এডু’র ইউটিউব চ্যানেলে সম্প্রতি একটি ‘লাইভ ক্লাস’ চলাকালে এক নারী ও এক পুরুষ শিক্ষক একে অপরকে চুম্বন করেন এবং সেই দৃশ্য সরাসরি সম্প্রচার হয়। এ ঘটনায় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপক সমালোচনা সৃষ্টি হয়েছে। অভিভাবক ও শিক্ষক মহলে বিষয়টি নৈতিকতা এবং শিক্ষার পরিবেশের অবক্ষয় হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে।
নোটিশ অনুযায়ী, ঘটনাটি পর্নোগ্রাফি নিয়ন্ত্রণ আইন, ২০১২ এর বিভিন্ন ধারার লঙ্ঘন বলে গণ্য করা হয়েছে।
আইনের ২(গ)(১) ধারায় বলা হয়েছে, ‘যৌন উত্তেজনা সৃষ্টিকারী কোনো অশ্লীল সংলাপ, অভিনয়, অঙ্গভঙ্গি, নগ্ন বা অর্ধনগ্ন নৃত্য যাহা চলচ্চিত্র, ভিডিও চিত্র, অডিও ভিজ্যুয়াল চিত্র, স্থির চিত্র, গ্রাফিকস বা অন্য কোনো উপায়ে ধারণকৃত ও প্রদর্শনযোগ্য এবং যাহার কোনো শৈল্পিক বা শিক্ষাগত মূল্য নেই।’
এ ছাড়া ৮(৪) ও ৮(৫) ধারায় এমন কন্টেন্ট প্রচার, প্রদর্শন ও বিতরণে সর্বোচ্চ ২ বছর কারাদণ্ড এবং এক লাখ টাকা পর্যন্ত অর্থদণ্ডের বিধান রয়েছে।
প্রসঙ্গত, বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীদের জন্য পরিচালিত অনলাইন প্রস্তুতি ক্লাসের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়। ভাইরাল হওয়া একটি ভিডিওতে দেখা যায়, অন্বেষণ কোচিং সেন্টারের লাইভ ক্লাস চলাকালে শিক্ষক-শিক্ষিকার অনুপযুক্ত ঘনিষ্ঠতা প্রকাশ্যে ধরা পড়ে। ভিডিওটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ার পর শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের মাঝে তীব্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়। অনেকেই একে শিক্ষার পরিবেশের প্রতি অবমাননাকর আচরণ হিসেবে দেখছেন।
আপনার মতামত লিখুন :