শুক্রবার, ২৩ মে, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


রূপালী প্রতিবেদক

প্রকাশিত: মে ২১, ২০২৫, ০৯:০২ পিএম

ওয়ার্কিং কমিটির সভা সফল 

যেকোনো সময় শ্রমিক পাঠানো শুরু হবে মালয়েশিয়ায়

রূপালী প্রতিবেদক

প্রকাশিত: মে ২১, ২০২৫, ০৯:০২ পিএম

যেকোনো সময় শ্রমিক পাঠানো শুরু হবে মালয়েশিয়ায়

রাজধানীর হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে বাংলাদেশ ও মালয়েশিয়ার উচ্চপর্যায়ের প্রতিনিধিদের বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। ছবি- সংগৃহীত

বাংলাদেশ ও মালয়েশিয়ার মধ্যে নিরাপদ অভিবাসন ও কর্মসংস্থান নিশ্চিতকরণসহ শ্রমবাজার সম্পর্কিত তৃতীয় জয়েন্ট ওয়ার্কিং গ্রুপের সভা হয়েছে।

বুধবার (২১ মে) ঢাকার হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে এ সভা হয়।

দুই দেশের সরকারের উচ্চপর্যায়ের প্রতিনিধিদের এ সভা সফল হয়েছে। যেকোনো সময় বাংলাদেশ থেকে মালয়েশিয়ায় শ্রমিক পাঠানো শুরু হবে বলে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন। এর আগে মঙ্গলবার মালয়েশিয়া সরকারের ১৪ সদস্যের একটি উচ্চপর্যায়ের প্রতিনিধিদল ঢাকায় এসেছে। 

মালয়েশিয়ার প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দিচ্ছেন দেশটির মানবসম্পদ মন্ত্রণালয়ের ডেপুটি সেক্রেটারি জেনারেল ড.  ম.  শাহরিন বিন উমর। বাংলাদেশ সরকারের পক্ষে নেতৃত্ব দিচ্ছেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টার আন্তর্জাতিক সম্পর্কবিষয়ক বিশেষ দূত লুৎফে সিদ্দিকি ও প্রবাসীকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব ড. নেয়ামত উল্লাহ ভূঁইয়া। 

বৈঠকে প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের ঊধ্বতন কর্মকর্তারা অংশ নেন।

সভা শেষে বাংলাদেশ-মালয়েশিয়া সরকারের মধ্যে শ্রমিক নেওয়া সংক্রান্ত ঘোষণাপত্র স্বাক্ষর হবে। এরই মধ্যে মালয়েশিয়ায় আগামী ছয় বছরে প্রায় ১২ লাখ শ্রমিক নেওয়ার আগ্রহ প্রকাশ করেছে। প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।
 
যৌথ ওয়ার্কিং গ্রুপের সভার উদ্বোধনী অনুষ্ঠান শেষে প্রধান উপদেষ্টার আন্তর্জাতিক-বিষয়ক বিশেষ দূত ড. লুৎফে সিদ্দিকি সাংবাদিকদের বলেন,  ‘প্রথম ধাপে গত বছর শ্রমবাজারটি বন্ধ হওয়ার কারণে সব প্রক্রিয়া শেষ করেও যেতে না পারাদের প্রায় ৮ হাজার কর্মী মালয়েশিয়া যাবেন। তাদের সরকারি ব্যবস্থাপনায় বোয়েসেলের মাধ্যমে  পাঠানো হবে।’

তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশে অধিকসংখ্যক রিক্রুটিং এজেন্সি থাকলেও মালয়েশিয়া সরকার সীমিত রিক্রুটিং এজেন্সির মাধ্যমে শ্রমিক নিতে আগ্রহী। জয়েন্ট ওয়ার্কিং গ্রুপের সভায় স্বচ্ছতা বজায় রাখতে প্রয়োজনীয় আলোচনা চলছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘বাংলাদেশি কর্মীদের জন্য মাল্টিপল এন্ট্রি ভিসা দেওয়ার বিষয়ে মালয়েশিয়া সরকার এরই মধ্যে আন্তঃমন্ত্রণালয় বৈঠক করছে। মালয়েশিয়া সরকার খুবই আন্তরিকভাবে দেখছে কর্মী নেওয়ার বিষয়টি। দুই পক্ষই স্বচ্ছতা বজায় রাখতে চায়।’

বৈঠক সূত্রে জানা গেছে, অবৈধ পন্থায় শ্রমিক গেলে তারা মালয়েশিয়ার বনে-জঙ্গলে পালিয়ে বেড়াতে হয়। পুলিশের হাতে ধরা পড়ে, মামলা হয়, কারাভোগ করে। তাই অবৈধ প্রক্রিয়ায় শ্রমিক না নিয়ে বৈধ প্রক্রিয়ায় শ্রমিক প্রেরণের বিষয়টি সরকার আন্তরিকতার সঙ্গে দেখছে। শ্রমিক গ্রহণকারী দেশ হিসেবে মালয়েশিয়া সরকার যেসব শর্ত দিয়েছে, বাংলাদেশ সরকার সেসব শর্ত প্রতিপালনের দিকে গুরুত্ব দিচ্ছে।

এর আগে গত ১৪ মে মালয়েশিয়ার পুত্রজায়ায় দেশটির স্বরাষ্ট্র ও মানবসম্পদ মন্ত্রীর সঙ্গে যৌথ সভায় অংশ নেন বাংলাদেশের প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টার আন্তর্জাতিক সম্পর্ক-বিষয়ক বিশেষ দূত লুৎফে সিদ্দিকি, প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব ড. নেয়ামত উল্লাহ ভূঁইয়া ও উপসচিব সারোয়ার আলম। 

ওই সভায় বাংলাদেশের দুর্নীতি দমন কমিশন ও পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ সিআইডিতে অর্থ ও মানবপাচারের অভিযোগে যে মামলা রয়েছে, সেগুলোর নিষ্পত্তি চাওয়া হয়েছে। 

মালয়েশিয়ান কর্তৃপক্ষ বলছে, বিভিন্ন এজেন্সির সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে বাংলাদেশে মানবপাচার ও মানি লন্ডারিংয়ের অভিযোগে ‘হয়রানিমূলক’ মামলা হয়েছে, যা মালয়েশিয়া সরকারের অভিবাসন প্রক্রিয়ার স্বচ্ছতা ও গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্নবিদ্ধ করছে।

একই সঙ্গে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে মালয়েশিয়ার ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করেছে। তাই মালয়েশিয়া দ্রুত মামলাগুলো নিষ্পত্তি চেয়েছে। শ্রমিকের নিরাপত্তা ও স্বার্থ সংরক্ষণ করা, অভিবাসন ব্যয় কমানোর লক্ষ্যে সহযোগী এজেন্সি প্রথা বাদ দেওয়া হবে।

রিক্রুটিং এজেন্সির মালিকদের সংগঠন বায়রার সাবেক মহাসচিব মুক্তিযোদ্ধা আলী হায়দার চৌধুরী বলেন, ‘কর্মীদের নিরাপদ কর্মসংস্থানও নিরাপত্তা ও কম খরচে মালয়েশিয়া যাওয়ার বিষয়টিকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দেওয়া জরুরি। আমাদের রিক্রুটিং এজেন্সির মালিকদের ব্যবসা কে করল, কে করল না সেটাকে প্রাধান্য না দিয়ে দেশের স্বার্থ ও শ্রমিকের স্বার্থকে বেশি গুরুত্ব দেওয়া উচিত।’ 

‘তা ছাড়া আমাদের বায়রার কিছু সদস্যের বিরুদ্ধে হয়রানিমূলকভাবে অর্থ ও মানবপাচারের মামলা দেওয়া হয়েছে। অবিলম্বে এসব মামলা প্রত্যাহার বা নিস্পত্তি করা জরুরি। মামলা থাকলে কোনো এজেন্সি স্বাধীনভাবে কাজ করতে পারবে না। তাদের মধ্যে সবসময় একধরনের ভীতি কাজ করবে।’


 
বায়রার অপর নেতা মোবারক উল্লাহ শিমুল বলেন, ‘আগে শ্রমিকরা গেছে দুই দেশের সরকারের চুক্তি ও নীতিমালা অনুসরণ করে সম্পূর্ণ বৈধ প্রক্রিয়ায়। সেখানে মানবপাচারের অভিযোগ আনা অবান্তর ও দুঃখজনক। এসব মামলায় আমাদের শ্রমবাজারে বিরূপ প্রভাব তৈরি হয়েছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘আন্তর্জাতিক অঙ্গনে দু’দেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হচ্ছে। তাই এসব হয়রানিমূলক মামলা প্রত্যাহার করা জরুরি। এরই মধ্যে মালয়েশিয়া সরকারের পক্ষ থেকেও বাংলাদেশ সরকারকে এ বিষয়ে চিঠি দেওয়া হয়েছে বলে আমরা জেনেছি।’

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বায়রার একজন নেতা বলেন, ‘যখনই সরকার মালয়েশিয়ার শ্রমবাজার খোলার উদ্যোগে নেয়, তখই বায়রার বিপথগামী একটি গ্রুপ প্রতিবন্ধক হয়ে দাঁড়ায়। বাজার খুলতে বাধা দেয়। এই গ্রুপটি মূলত অবৈধভাবে শ্রমিক পাঠানোর চক্রে জড়িত। তারা চায় না বৈধভাবে শ্রমিক যাক। কারণ বৈধভাবে শ্রমিক গেলে তাদের অবৈধ শ্রমিক পাঠানোর ব্যবসা হুমকির মুখে পড়ে।’

তিনি আরও বলেন, ‘অবৈভাবে শ্রমিক মালয়েশিয়ায় গেলে দেশটিতে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হয়। আমাদেরে দেশ থেকে শ্রমিক নিতে অনীহা প্রকাশ করে। আবার অন্যদিকে মালয়েশিয়াও আন্তর্জাতিকভাবে ভাবমূর্তি সংকটে পড়ে। তাদের পণ্য রপ্তানি বাধাগ্রস্ত হয়। তাই অবৈধপথে শ্রমিক পাঠানো বন্ধ করা জরুরি।’

Link copied!