সরকার জাতীয় সক্ষমতা না বাড়িয়ে বিকল্প খুঁজছে। বিকল্প হিসেবে বিদেশি কোম্পানিকে চট্টগ্রাম বন্দর না দিয়ে প্রাতিষ্ঠানিক দুর্বলতা দূর করে জাতীয় সক্ষমতা বাড়ানো যেতো বলে জানিয়েছেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের সাবেক অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ।
শুক্রবার (২৩ মে) জাতীয় প্রেস ক্লাবের মাওলানা আকরম খাঁ হলে গণতান্ত্রিক নাগরিক কমিটি আয়োজিত ‘গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী বাংলাদেশে কেমন বাজেট চাই’— শীর্ষক আলোচনা সভায় সভাপতির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
আনু মুহাম্মদ বলেন, বাংলাদেশের অর্থবছরের সময়সীমা পরিবর্তন করা প্রয়োজন। আমাদের অর্থবছর ব্রিটিশ আমলের মতো জুলাই-জুনই আছে। এই অর্থবছরের কারণে দুর্নীতির একটি সুযোগ তৈরি হয় এবং অর্থের অপচয় হয়। অর্থবছর বাংলা বছর অনুযায়ী ১৪ এপ্রিল থেকে ১৩ এপ্রিল অথবা ইংরেজি বছর অনুযায়ী ১ জানুয়ারি থেকে ৩১ ডিসেম্বর করার পরামর্শ দেন তিনি।
তিনি বলেন, এই সরকারের একটি বড় দায়িত্ব হলো বৈষম্যহীন বাংলাদেশের প্রত্যাশা অনুযায়ী কিছু কিছু পরিবর্তনের গতিপথ তৈরি করা। এই সরকার অস্থায়ী সরকার, তাদের স্থায়ী কোনো ম্যান্ডেট নেই, এই সরকার দীর্ঘদিন থাকবে না।
তিনি আরও বলেন, এই সরকারের পক্ষে অনেক কিছুই করা সম্ভব নয়। কিন্তু কিছু করণীয় আছে, যা সরকার খুব সহজেই করতে পারে। যেমন শিক্ষা, চিকিৎসা খাতে বরাদ্দ বাড়ানো বহু বছরের দাবি। যা থাকার কথা বাজেটের ৫-৬ শতাংশ, সেটা আছে ১-২ শতাংশ। এর সূচনাটা হওয়া উচিত এই বছরই।
আনু মুহাম্মদ বলেন, শিক্ষা ও চিকিৎসা খাতে এরইমধ্যে অনেক দুর্নীতি, অপচয়, আমলাতান্ত্রিক জটিলতা, অপ্রয়োজনীয় বরাদ্দ, অপ্রয়োজনীয় বিদেশ সফর, অপ্রয়োজনীয় প্রকল্প আছে। এসব থেকে এই দুই খাতকে মুক্ত করতে হবে।
এই অধ্যাপক বলেন, শিক্ষা ও চিকিৎসা খাতের পরিবর্তনের জন্য একটি সংস্কার এই সরকারের জন্য খুব সহজ ছিল। এটা ঘোষণা দেওয়া যেতো, প্রধান উপদেষ্টা থেকে শুরু করে সব উপদেষ্টা, সব বিশেষ সহকারী, সব প্রতিনিধি, সরকারি আমলা তাদের চিকিৎসা দেশের সরকারি হাসপাতালে নেবেন। এটি করলে সরকারি হাসপাতালগুলোর আবহাওয়া জাদুর বাক্সের মতো পাল্টে যেতো। যদি তারা সিদ্ধান্ত নিতেন, তাদের সবার সন্তানেরা দেশের সরকারি স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়বে, তাহলে এসবের চেহারা পাল্টে যেতো। এই সূচনা সরকার খুব সহজে করতে পারতেন। গত নয় মাসে সেটি আমরা দেখিনি।
আপনার মতামত লিখুন :