ঢাকায় তুরস্ক-সমর্থিত এনজিও ‘বৃহত্তর বাংলাদেশ’-এর অংশ হিসেবে ভারতীয় রাজ্যগুলোকে অন্তর্ভুক্ত করে মানচিত্র দেখাচ্ছে। বাংলাদেশের রাজধানীর বিশ্ববিদ্যালয়ের হলগুলোতে, বিশেষ করে ছাত্র এবং তরুণদের মধ্যে জনপ্রিয় এলাকাগুলোতে মানচিত্রটি প্রকাশিত হয়েছে বলে জানা গেছে। পাকিস্তানের পক্ষে প্রকাশ্যে সমর্থন জানানোর পর ভারতে তুরস্ক বর্জন ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি করে। তারপরই ভারতের অঙ্গরাজ্যসহ বৃহত্তর বাংলাদেশ শিরোনামে এই মানচিত্র প্রদর্শনের মাধ্যমে তুরস্ক কি বোঝাতে চেয়েছে তা বিশ্লেষকদের মনে চিন্তা জাগাচ্ছে।
শাহি বাংলা বা সুলতানি বাংলা, ১৩৫২ থেকে ১৫৭৬ সাল পর্যন্ত বঙ্গ অঞ্চলে প্রতিষ্ঠিত একটি স্বাধীন মুসলিমশাসিত রাষ্ট্র। অর্থাৎ ভারতের পূর্ব ও উত্তর-পূর্ব রাজ্যের বিশাল অংশ এবং মিয়ানমারের কিছু অংশ অন্তর্ভুক্ত ‘বৃহত্তর বাংলাদেশের' (সালতানাত-ই-বাংলা) একটি মানচিত্র নিয়ে ঘুম হারাম হয়েছে নয়াদিল্লির। তাতে নিজ ভূখণ্ডের অন্তর্ভুক্তি দেখে উদ্বেগ প্রকাশ করে প্রতিবেশী দেশটি। অনেকে মনে করে, ভারতের তুরস্ক বর্জনের ডাক দেওয়ার জের ধরেই এ প্রদর্শন। বিশেষ করে ভারত অআরোপিত বাংলাদেশের ওপর আরোপিত বাণিজ্য নিষেধাজ্ঞার মধ্যে এ মানচিত্র প্রদর্শন কী জন্য তা নিয়ে উদ্বিগ্ন বিশ্লেষকরা।
ভারতের অভিযোগ, ঢাকায় তুরস্ক-সমর্থিত একটি এনজিও শত শত বছরের পুরোনো ‘বৃহত্তর বাংলাদেশের' মানচিত্র প্রদর্শন করেছে। যার ফলে বড় কূটনৈতিক উত্তেজনা তৈরি হচ্ছে বলেও দাবি নয়াদিল্লির।
রোববার (১৮ মে) দ্য ইকোনমিক টাইমস এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, ‘উসকানিমূলক’ মানচিত্রে ভারতের পশ্চিমবঙ্গ, বিহার, ওড়িশা, ঝাড়খণ্ড, ত্রিপুরা, আসাম, মেঘালয়, সিক্কিম, মিজোরামের অংশ এবং মিয়ানমারের আরাকান রাজ্য অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। বাংলাদেশের রাজধানীর বিশ্ববিদ্যালয় হলগুলোতে, বিশেষ করে ছাত্র ও তরুণদের মধ্যে জনপ্রিয় এলাকাগুলোতে মানচিত্রটি প্রকাশিত হয়েছে বলে জানা গেছে।
চলতি বছরের এপ্রিলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-ছাত্র কেন্দ্রে (টিএসসি) পহেলা বৈশাখ (বাংলা নববর্ষ) তোলা একটি ছবিতে একজন ব্যক্তিকে ‘সালতানাত-ই-বাংলা’ মানচিত্রের পাশে পোজ দিতে দেখা গেছে, যেখানে একাধিক ভারতীয় অঞ্চলকে বৃহত্তর বাংলাদেশের অংশ হিসেবে চিত্রিত করা হয়েছে।
ভারতের একাধিক সংবাদমাধ্যমের দাবি, এই ঘটনাটি ভারতে তীব্র উদ্বেগের সৃষ্টি করেছে, বিশেষ করে বাংলাদেশের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের অবনতির মধ্যে। বাংলাদেশে তুরস্কের ক্রমবর্ধমান উপস্থিতির কারণে এই বিতর্ক আরও উদ্বেগজনক মোড় নিয়েছে।
ড. মুহাম্মদ ইউনূস সরকারের আমলে ঢাকার সঙ্গে তুরস্কের সামরিক সহযোগিতা উন্নয়নেও আপত্তি জানিয়েছে দ্য ইকোনমিক টাইমস।
আপনার মতামত লিখুন :