মঙ্গলবার, ১৫ জুলাই, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


রূপালী প্রতিবেদক

প্রকাশিত: জুলাই ১৪, ২০২৫, ০৮:১৬ পিএম

কাদের সিদ্দিকীর বিরুদ্ধে চার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ‘হরিলুটের’ অভিযোগ

রূপালী প্রতিবেদক

প্রকাশিত: জুলাই ১৪, ২০২৫, ০৮:১৬ পিএম

ডিআরইউতে কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সভাপতি আবদুল কাদের সিদ্দিকীর বিরুদ্ধে সংবাদ সম্মেলন। ছবি- সংগৃহীত

ডিআরইউতে কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সভাপতি আবদুল কাদের সিদ্দিকীর বিরুদ্ধে সংবাদ সম্মেলন। ছবি- সংগৃহীত

কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সভাপতি আবদুল কাদের সিদ্দিকীর বিরুদ্ধে রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে গাজীপুরের চারটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান দখল নিয়ে ‘হরিলুট’ করার অভিযোগ উঠেছে। সোমবার (১৪ জুলাই) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) সাগর-রুনি মিলনায়তনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এমন অভিযোগ আনেন প্রতিষ্ঠান সংশ্লিষ্টরা।

সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ করা হয়, ১৯৯০ সালে গাজীপুরের রাজেন্দ্রপুর উপজেলার নয়নপুর গ্রামে এলাকাবাসীর সহযোগিতায় পারিবারিক সম্পত্তির উপর কচিকাঁচা একাডেমি প্রতিষ্ঠা করেন ইকবাল সিদ্দিকী। পরবর্তীতে তার নেতৃত্বেই গড়ে ওঠে নয়নপুর এন এস আদর্শ বিদ্যালয়, ইকবাল সিদ্দিকী স্কুল অ্যান্ড কলেজ এবং ইকবাল সিদ্দিকী এডুকেশন সোসাইটি।

তবে ২০২৩ সালে ইকবাল সিদ্দিকীর মৃত্যুর পর সুকৌশলে তার দূর সম্পর্কের আত্মীয় কাদের সিদ্দিকী নিজেকে ইকবাল সিদ্দিকী এডুকেশন সোসাইটির স্বঘোষিত সভাপতি ঘোষণা করেন। সভাপতি হওয়ার পর থেকেই তিনি সকল প্রতিষ্ঠানের জমি এবং প্রতিষ্ঠান দখল করতে জাল ও মৃত ব্যক্তির স্বাক্ষর নিয়ে কমিটি গঠন, রাজনৈতিক প্রভাব খাটানোসহ নানান 'অপকর্ম' শুরু করেন কাদের সিদ্দিকী।

 

কাদের ছিদ্দিকীর বিরুদ্ধে সংবাদ সম্মেলনে আরও অভিযোগ আনা হয়, কাদের সিদ্দিকী ওইসব প্রতিষ্ঠানের টাকা দিয়ে তার ব্যক্তিগত কর্মচারীর বেতন পরিশোধ, বিধিবহির্ভূতভাবে প্রতি সভায় অর্থগ্রহণ, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রচারণা ব্যয় মেটাতে প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক কর্মচারীদের কাছ থেকে জোরপূর্বক অর্থ আদায়ের প্রমাণ রয়েছে। ইতিপূর্বে কাদের সিদ্দিকী, মিজানুর রহমান ও সিরাজুলহক গং-এর সহযোগিতায় প্রতিষ্ঠান থেকে লক্ষ লক্ষ টাকা উত্তোলন করে আব্দুর রহমান ব্যক্তিগত নামে জমি রেজিস্ট্রি করার অপচেষ্টা চালাচ্ছে।

‘এতিমের সম্পদ দখল, অর্থ আত্মসাৎ ও স্বাক্ষর জালিয়াতি করে কমিটি অনুমোদনের পাঁয়তারা করায় কাদের সিদ্দিকী গং-এর বিরুদ্ধে’ সংবাদ সম্মেলন আয়োজন করে ইকবাল সিদ্দিকী এডুকেশন সোসাইটি, কচিকাঁচা একাডেমি, নয়নপুর এন এস আদর্শ বিদ্যালয়, ইকবাল সিদ্দিকী স্কুল অ্যান্ড কলেজের সকল শিক্ষক-কর্মচারী ও ইকবাল সিদ্দিকীর পরিবার। এতে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর প্রতিষ্ঠাতা ইকবাল সিদ্দিকীর মেজো ভাই হায়দার সিদ্দিকী লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন। সংবাদ সম্মেলনে ইকবাল সিদ্দিকীর ছোট ভাই মিঠু সিদ্দিকী, ইকবাল সিদ্দিকী কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ হাসমত উল্লাহ, কচিকাঁচা একাডেমির প্রধান শিক্ষক আফরোজা খানমসহ প্রতিষ্ঠানগুলোর ভুক্তভোগী শতাধিক শিক্ষক-শিক্ষিকা, কর্মকর্তা-কর্মচারীরা উপস্থিত ছিলেন।

তিনি অভিযোগ করে বলেন, ‘২০২৩ সালের ৪ মার্চ ইকবাল সিদ্দিকীর মৃত্যুর পর ২ দিনের মধ্যে অত্যন্ত সুকৌশলে শোকাহত পরিবারের স্পর্শকাতর সময়ে তার কিছু সহযোগীর যোগসাজশে নিয়ম বহির্ভূতভাবে কাদের সিদ্দিকী নিজেকে ইকবাল সিদ্দিকী এডুকেশন সোসাইটির স্বঘোষিত সভাপতি ঘোষণা করেন। ইকবাল সিদ্দিকীর মৃত্যুর পর থেকে কাদের সিদ্দিকীর ইকবাল সিদ্দিকী এবং তার উত্তরাধিকারদের সম্পত্তির ওপর নজর পড়ে। কাদের সিদ্দিকীর পাশপাশি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে জড়িত আব্দুর রহমান, সিরাজুল হক, এস এম মিজানুর রহমান, আতিকের সঙ্গে জড়িত।’

 

লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, ‘ইকবাল সিদ্দিকীর মৃত্যুর পর মৃত ইকবাল সিদ্দিকী ও মৃত লক্ষণ দেবনাথের স্বাক্ষর জাল করে এবং ইকবাল সিদ্দিকী এডুকেশন সোসাইটির নির্বাহী সদস্য সাজেদা রোজী, আফরোজা খানম, মোঃ আলাউদ্দিন, সুশান্ত কুমার ভট্টাচার্য এবং অর্থ সচিব হরিপদ সরকারের স্বাক্ষর জাল করে সিরাজুল হক যৌথমূলধন কোম্পানি এন্ড ফার্মসমূহের পরিদপ্তরে কমিটি দাখিল করে, যে কমিটির সভাপতি হিসেবে তালিকায় আছেন কাদের সিদ্দিকী। নিশ্চিত স্বাক্ষর জাল জালিয়াতির প্রমাণ পাওয়ায় দাখিলকৃত কমিটি স্থগিত ঘোষণা করে আরজেএসসি।’

হায়দার সিদ্দিকী বলেন, ‘কমিটি স্থগিত হলেও কাদের সিদ্দিকী প্রতিষ্ঠানের ব্যাংক অ্যাকাউন্টগুলো থেকে অবৈধভাবে টাকা উত্তোলনের জন্য ব্যাংক কর্তৃপক্ষকেও ক্রমাগত চাপ সৃষ্টি করছে।’

তিনি বলেন, ‘ইকবাল সিদ্দিকীর মৃত্যুর পর ব্যাংক কর্তৃপক্ষকে বিভ্রান্ত করে সরকারি অনুমোদন ছাড়াই কাদের সিদ্দিকী গং প্রতিষ্ঠানের হিসাব পরিচালনার দায়িত্ব গ্রহণ করেন। আমাদের অভিযোগের ভিত্তিতে বর্তমানে আর্থিক নিরাপত্তার স্বার্থে ব্যাংক হিসাবগুলো অবরুদ্ধ রয়েছে। তবে যেকোনোভাবে তারা ব্যাংক থেকে অর্থ ছাড় করানোর পাঁয়তারা করছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘কাদের সিদ্দিকীর দাখিলকৃত সোসাইটির কার্যনির্বাহী কমিটি আরজেএসসি কর্তৃক স্থগিত হওয়ায় কাদের সিদ্দিকীর নিজেকে সোসাইটির সভাপতি হিসেবে দাবি করার কোনো বৈধতা নেই, একইভাবে তার মনোনীত আব্দুর রহমানও ইকবাল সিদ্দিকী কলেজের সভাপতি হিসেবে বৈধ নয়। তিনি জানান, আব্দুর রহমানের শিক্ষাগত যোগ্যতা এইচএসসি হলেও কাদের সিদ্দিকী তাকে স্নাতক হিসেবে প্রত্যয়ন দিয়ে কমিটির সভাপতি হিসেবে নিয়োগ দিয়েছেন।’

লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, ‘আরজেএসসির স্থগিতাদেশ থাকা সত্ত্বেও স্থগিতাদেশ গোপন করে গত ৯ জুলাই মাউশি পরিচালককে প্রভাবিত করে কাদের সিদ্দিকী সোসাইটির সভাপতি হিসেবে চিঠি ইস্যু করান। ২০২৫ শিক্ষাবর্ষের এসএসসি পরীক্ষার ফলাফলের ভিত্তিতে ইকবাল সিদ্দিকী স্কুল জেলার ৪র্থ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। অথচ মাউশি কাদের সিদ্দিকীর প্রভাবে এই প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার পরিবেশ সুষ্ঠু নয় মর্মে চিঠি ইস্যু করেছে।’

সংবাদ সম্মেলনে প্রশাসন, সরকার ও স্থানীয়দের সহযোগিতা কামনা করা হয়। হায়দার সিদ্দিকী বলেন, ‘ইতিপূর্বে কাদের সিদ্দিকী মাজারের জমি ও সরকারি জমি দখলের অভিযোগে সমালোচিত হয়েছেন। মহান মুক্তিযুদ্ধে অবদান রেখেছেন বলে তিনি আমাদের জমি বা প্রতিষ্ঠান দখল করার অধিকার রাখেন না। বারবার বিভিন্নভাবে এ ধরনের অন্যায় থেকে বিরত থাকার কথা বলে আমরা ব্যর্থ হয়েছি।’

‘তাদের পালিত সন্ত্রাসবাহিনী দ্বারা নানা রকম হুমকির শিকার হচ্ছি। আমাদের দেওয়ালে পিঠ ঠেকে গেছে। সরকারের কাছে এই অর্থলোভীদের শাস্তি দাবি করছি। আমাদের প্রাণের বিদ্যাপীঠের গতিশীল সুষ্ঠু পরিবেশ অব্যাহত রাখতে এবং কাদের সিদ্দিকী ও তার দুষ্কৃতকারী সহযোগীরা অন্যায়ভাবে বিভিন্ন মহলের কোনো প্রকার সহযোগিতা নিয়ে জমি দখল, প্রতিষ্ঠান দখল অর্থ আত্মসাৎ করতে না পারে, এ ব্যাপারে সকলের সহযোগিতা কামনা করছি।’

তবে অভিযোগের বিষয়ে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও কাদের ছিদ্দিকীর বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।

Shera Lather
Link copied!