প্রাইভেট প্লেসমেন্টের মাধ্যমে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত বস্ত্র খাতের কোম্পানি রিং শাইন টেক্সটাইলের শেয়ার নিয়ে কারসাজির দায়ে কোম্পানির ইস্যু ব্যবস্থাপকের দায়িত্বে থাকা দুই প্রতিষ্ঠানের প্রধান নির্বাহীকে পাঁচ বছরের নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। আগামী পাঁচ বছর তারা পুঁজিবাজার সংশ্লিষ্ট কোনো কার্যক্রমে সম্পৃক্ত থাকতে পারবে না।
নিষেধাজ্ঞাপ্রাপ্তরা হলেনÑ সিএপিএম অ্যাডভাইজরি লিমিটেডের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী তানিয়া শারমিন এবং এএফসি ক্যাপিটাল লিমিটেডের সাবেক প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মাহবুব এইচ মজুমদার।
একই সঙ্গে সিএপিএম অ্যাডভাইজরি লিমিটেড এবং এএফসি ক্যাপিটাল লিমিটেডের সনদ বাতিল করার বিষয়েও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। সম্প্রতি অনুষ্ঠিত বিএসইসির কমিশন সভায় এসব সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। কমিশনের সিদ্ধান্তের বিষয়ে গতকাল সোমবার প্রেসবিজ্ঞপ্তি ইস্যু করা হয়েছে।
নিষেধাজ্ঞার কারণে তানিয়া শারমিন এবং মাহবুব এইচ মজুমদার আদেশ জারির তারিখ থেকে ৫ বছরের জন্য মধ্যস্থতাকারী এবং ভবিষ্যতের যেকোনো মধ্যস্থতাকারী, তালিকাভুক্ত কোম্পানি বা ভবিষ্যতের তালিকাভুক্ত কোম্পানি এবং সিকিউরিটিজ আইন, নিয়ম ও প্রবিধানের তত্ত্বাবধানে থাকা অন্য যেকোনো ব্যাবসায়িক সত্তাকে ওই সময়ের জন্য যেকোনো দাপ্তরিক দায়িত্ব পালন করতে পারবে না।
প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, রিং শাইন কোম্পানির ৫ বছরের (২০১৫-১৬, ১৬-১৭, ১৭-১৮, ১৮-১৯ ও ১৯-২০) মিথ্যা ও বানোয়াট আর্থিক হিসাব বিবরণীর বিষয়ে প্রত্যয়ন করার কারণে ৪টি নিরীক্ষক প্রতিষ্ঠান ও তাদের অংশীদারদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য ফাইন্যান্সিয়াল রিপোর্টিং কাউন্সিলে (এফআরসি) অভিযোগ দায়েরের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় কমিশন সভায়। নিরীক্ষক প্রতিষ্ঠান ৪টি হলোÑ আহমেদ অ্যান্ড আকতার, সিরাজ খান বসাক অ্যান্ড কোম্পানি, মেহফেল হক অ্যান্ড কোম্পানি ও আতা খান অ্যান্ড কোম্পানি চার্টার্ড অ্যাকাউনট্যান্টস।
অপরদিকে আইপিও প্রসপেক্টাসে মিথ্যা ও বানোয়াট তথ্য সরবরাহ করার কারণে রিং শাইন টেক্সটাইলের উদ্যোক্তাসহ ঘটনা সংঘটিত হওয়ার সময়ে পরিচালক, ব্যবস্থাপনা পরিচালক, নির্বাহী পরিচালকসহ মোট ৯ জন এবং কোম্পানিটির তৎকালীন সিএফও ও কোম্পানি সচিবসহ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিবর্গ কর্তৃক সংঘটিত কোম্পানির প্রি-আইপিও প্লেসমেন্ট সংক্রান্ত সংঘবদ্ধ আর্থিক দুর্নীতির বিষয়ে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য বিষয়টি দুর্নীতি দমন কমিশনে (দুদক) প্রেরণ করার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।
এসব কর্মকর্তাসহ ঘটনার সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকা আবদুল কাদের ফারুক ও ভারতীয় নাগরিক অশোক কুমার ছিরিমারসহ ১৩ জনের বিরুদ্ধে দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা জারির বিষয়েও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
বহিরাগত প্লেসমেন্ট হোল্ডারগণ যারা কোম্পানীর হিসাবে অর্থ জমা না দিয়ে অথবা আংশিক জমা দিয়ে তাদের নামে শেয়ার বরাদ্দ নেওয়ার মাধ্যমে অর্থ আত্মসাৎ করেছেন এমন প্লেসমেন্টহোল্ডারদের বিষয়ে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য বিষয়টি দুর্নীতি দমন কমিশনে (দুদক) প্রেরণ করার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।
আপনার মতামত লিখুন :