শনিবার, ১৭ মে, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


লালমনিরহাট প্রতিনিধি

প্রকাশিত: মে ১৭, ২০২৫, ০১:৩৫ পিএম

লালমনিরহাটে অটোরিকশাচালক থেকে বিমান নির্মাতা

লালমনিরহাট প্রতিনিধি

প্রকাশিত: মে ১৭, ২০২৫, ০১:৩৫ পিএম

লালমনিরহাটে অটোরিকশাচালক থেকে বিমান নির্মাতা

প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা ছাড়াই বিমান তৈরি করে আলোড়ন সৃষ্টি করেছেন সোহেল রানা। ছবি- রূপালী বাংলাদেশ

প্রতিষ্ঠানিক শিক্ষা ছাড়াই ফোম, ককশিট, সাইকেলের এস্পোক, ফ্যানের মোটর, স্যান্ডেলের সোল, জি আই তারসহ বিভিন্ন জিনিস ব্যবহার করে বিমান তৈরি করে আলোড়ন সৃষ্টি করেছেন অটোরিকশাচালক সোহেল রানা।  

সোহেল রানা পরপর দুটি বিমান তৈরি করে সফলভাবে উড্ডয়ন ও অবতরণ করেন। রিমোট কন্ট্রোলের সাহায্যে বিমানটি পরিচালিত হয়। তার তৈরি বিমানটি এক নজর দেখতে প্রতিদিন ভিড় করছেন আশপাশের গ্রামের বাসিন্দারা। তার স্বপ্ন সে বিমানের পাইলট হবেন। কিন্তু তার স্বপ্ন বাঁধা হয়ে দাঁড়িয়েছে অভাব অনটন। তারপরও সবার সহযোগিতা নিয়ে সে পড়াশোনা করে তার স্বপ্ন বাস্তবায়ন করতে চায়।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, লালমনিরহাটের পাটগ্রাম উপজেলার বহুল আলোচিত দহগ্রাম- আঙ্গোরপোতা ভূখণ্ডের গুচ্ছগ্রাম বাজারের ইউনুস আলী ও শাহিনুর বেগমের ছেলে সোহেল রানা। দুই ভাই দুই বোনের মধ্যে সে দ্বিতীয়। পারিবারিক অসচ্ছলতার কারণে দহগ্রাম সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ২০২৪ সালে এসএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে পারেনি সোহেল।

বাবা ইউনুস আলী গ্রামে গ্রামে গিয়ে ফেরি করে বিভিন্ন মালামাল বিক্রি করেন। মা শাহিনুর বেগম গৃহিণী। অভাবের সংসার। একসময় সোহেল রানা পড়াশোনা বাদ দিয়ে এনজিও থেকে ঋণ নিয়ে একটি অটোরিকশা কিনেন। সেই অটোরিকশাটি চালিয়ে ঋণের টাকা পরিশোধ ও সংসারের হাল ধরেন সোহেল রানা। 

সোহেল রানার তৈরি বিমান

সোহেল রানা বলেন, ছোট থেকেই বিমান তৈরির স্বপ্ন ছিল তার। ৫ বছর ধরে ইউটিউব ও মানিকগঞ্জের জুলহাসের বিমান তৈরি দেখে আরও প্রচুর ইচ্ছা জাগে। অভাব-অনটনের সংসারে বিমান তৈরির টাকা কোথায় পাবে তা নিয়ে দুশ্চিন্তায় থাকলেও থেমে যায়নি সোহেল রানা। প্রতিদিন অটো চালিয়ে ৫০০ থেকে ৭০০ টাকা উপার্জন হয় তা দিয়ে ঋণের পরিশোধ ও বাকি টাকা দিয়ে সংসার চালায়। 

বর্তমানে মাত্র ১৫ হাজার টাকা খরচ করে দৈর্ঘ্য ২১ ইঞ্চি, প্রস্থ ২৮ ইঞ্চি ও ৩৮০ গ্রাম ওজনের বিমান তৈরি করে সফলভাবে উড্ডয়ন ও অবতরণ করেন তিনি। এর আগে ২০২৪ সালে দৈর্ঘ্য ২৮ ইঞ্চি, প্রস্থ ৪২ ইঞ্চি বিমান তৈরি করেন। সেটিতেও সফল হন।

বর্তমানে বিমানটি ১২ থেকে ১৫ মিনিট এক কিলোমিটার আকাশের উপরে উড়ে প্রায় ১০ কিলোমিটার যেতে পারে। রিচার্জেবল লিপো ব্যাটারির শক্তিতে চালিত বিমানটি রিমোট কন্ট্রোলের মাধ্যমে গতি নিয়ন্ত্রণ করা হয়। এই বিমানটিতে উচ্চ ক্ষমতা সম্পন্ন ক্যামেরা লাগালে দুই থেকে তিন কিলোমিটার দূর থেকে অনায়াসে দেখা যাবে। 

আকাশে উড়ছে সোহেল রানার তৈরি বিমান।

সোহেল রানা আরও বলেন, আমার স্বপ্ন আমি পড়াশোনা করে পাইলট হব। এজন্য  সরকারি ও বেসরকারি সহযোগিতার প্রয়োজন। বিমান তৈরির কোনো সহযোগিতা পেলে আমি আরও ভালো কিছু করে দেখাতে পারব। পাশাপাশি বিমান তৈরি করে বাংলাদেশের জন্য কাজে লাগাতে চাই। 

সোহেল রানার মা শাহিনুর বেগম বলেন, আমরা গরিব মানুষ। অভাব অনটনের কারণে আমার ছেলের পড়াশোনা বন্ধ হয়ে যায়। ছোট থেকে সোহেল রানা বিভিন্ন খেলনা বিমান তৈরি করে। এজন্য আমরা কেউ কিছু বলি না।

দহগ্রাম ইউনিয়ন পরিষদের মহিলা সদস্য রুনা লায়লা বলেন, ছোট থেকেই সোহেল মেধাবী। আর্থিক কারণে পড়াশোনা বন্ধ হয়ে যায় তার। বর্তমানে সে অটো চালায়। পাশাপাশি বিমান তৈরি করে সবাইকে অবাক করে দিয়েছে। তার বিমান উড়ানো দেখতে শত শত মানুষ ভিড় জমায়।

এ বিষয়ে পাটগ্রাম উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জিল্লুর রহমান বলেন, সোহেল রানার এই প্রতিভা দেখে আমরা সন্তুষ্ট। উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে তাকে সহযোগিতা করা হবে।

রূপালী বাংলাদেশ

Link copied!