রাজধানীর শাহবাগে আজ শনিবার বিকেল ৩টায় অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে ‘মার্চ ফর ড. ইউনূস’। প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের পদত্যাগ নিয়ে নতুন করে উত্তাল হয়ে উঠেছে দেশের রাজনীতি। জাতীয় সরকার গঠনের দাবিতে এবং ইউনূসকে পাঁচ বছরের জন্য ক্ষমতায় রাখার পক্ষে ‘বাংলাদেশের সর্বস্তরের জনগণ’ ব্যানারে এ কর্মসূচির আয়োজন করা হয়েছে।
সামাজিক মাধ্যমে ব্যাপক প্রচারের মাধ্যমে জনগণকে শাহবাগের কর্মসূচিতে অংশ নিতে আহ্বান জানানো হয়েছে। অন্যদিকে, রাজনৈতিক অঙ্গনে চলছে তীব্র আলোচনা। আজ সন্ধ্যায় প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠকে বসছে বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামী। সন্ধ্যা ৭টায় বিএনপি এবং রাত ৮টায় জামায়াতের প্রতিনিধিদলের এ বৈঠক হবে বলে বিশ্বস্ত সূত্রে জানা গেছে।
এমন উত্তপ্ত পরিস্থিতিতে সবার মুখে একটাই প্রশ্ন- আজকের পর আগামীকাল থেকে দেশে কী ঘটতে যাচ্ছে?
বিশ্বস্ত সূত্র বলছে, অধ্যাপক ইউনূস বৃহস্পতিবার জাতির উদ্দেশে ভাষণ দিয়ে পদত্যাগের প্রস্তুতি নিয়েছিলেন। তবে সিনিয়র উপদেষ্টাদের অনুরোধে আপাতত সেই সিদ্ধান্ত থেকে সরে এসেছেন। যদিও এখনো চূড়ান্ত কোনো সিদ্ধান্তে পৌঁছাননি, তবে ঘনিষ্ঠ মহলে হতাশার কথা জানিয়েছেন।
এদিকে প্রধান উপদেষ্টার ঘনিষ্ঠ এক সূত্র জানায়, তিনি পদত্যাগ না করে বরং উপদেষ্টা পরিষদে থাকা বিতর্কিত কয়েকজন উপদেষ্টাকে অব্যাহতি দেওয়ার বিষয়ে চিন্তা করছেন।
বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ জানিয়েছেন, বিএনপি ইউনূসের পদত্যাগ দাবি করেনি। তবে তিনি যদি দায়িত্ব পালনে অপারগ হন, তাহলে রাষ্ট্র বিকল্প চিন্তা করতেই পারে।
তিনি বলেন, জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা খলিলুর রহমান, এলজিআরডি উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া, তথ্য উপদেষ্টা মাহফুজ আলম এবং পরিবেশ উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান- এরা সবাই বিতর্কিত কর্মকাণ্ডে জড়িত। নির্বাচনকে বিলম্বিত করতে চাইছেন। তাই তাদের অবিলম্বে অপসারণ করতে হবে।
জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির ডা. সৈয়দ তাহের বলেন, ইউনূসের নেতৃত্বে একটি নিরপেক্ষ নির্বাচন সম্ভব। তবে ডিসেম্বর থেকে জুন পর্যন্ত সময়ের মধ্যে স্পষ্ট রোডম্যাপ ঘোষণা করতে হবে। অনিশ্চয়তা দূর করতে এটি প্রয়োজন।
হেফাজতে ইসলামের যুগ্ম মহাসচিব মামুনুল হক বলেন, প্রফেসর ইউনূস জাতির অভিভাবকের ভূমিকা নিয়েছেন। এই সময়ে হানাহানি কিংবা আলটিমেটামের রাজনীতি চলতে পারে না। সবাইকে দায়িত্বশীল হতে হবে। সেনাবাহিনীর মতো একটি প্রতিষ্ঠানকে কোনোভাবেই বিতর্কে জড়ানো উচিত নয়।
রাজনীতির এই উত্তাল সময়টিতে জনগণ, দল ও প্রশাসনের ভূমিকা নির্ধারণে গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্ত আসছে আজকের ‘মার্চ ফর ড. ইউনূস’ কর্মসূচির মাধ্যমে। পদত্যাগ না করলেও প্রধান উপদেষ্টা চাপে আছেন, এটাই বাস্তবতা। রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে অস্থিরতা, উপদেষ্টা পরিষদ নিয়ে বিতর্ক, নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘিরে অনিশ্চয়তা- সবকিছু মিলিয়ে পরিস্থিতি অনাকাঙ্ক্ষিত উত্তেজনার দিকে যাচ্ছে।
আপনার মতামত লিখুন :