নোবেল বিজয়ী মুহাম্মদ ইউনূস বাংলাদেশের অন্তবর্তীকালীন সরকারপ্রধান। শান্তিতে নোবেল পুরষ্কার লাভ করলেও যেন ক্ষমতা গ্রহণের পর দেশের মধ্যে শান্তি বজায় রাখতে পারছেন না। নির্বাচনের পরিকল্পনা নিয়ে নাগরিক থেকে রাজনৈতিক দলগুলোতে অসন্তোষ ও বিরোধ দেখা দিয়েছে।
গত আগষ্ট জুলাই গণঅভ্যূথানে ক্ষমতা ছেড়ে দেশ ত্যাগে বাধ্য হন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। জাতীয় ঐক্যের আহ্বান জানানো সত্ত্বেও ক্রমবর্ধমান বিক্ষোভ এবং রাজনৈতিক বিভাজনের কারণে কর্তৃপক্ষ প্রতিশ্রুতিবদ্ধ সংস্কার বিলম্বের সম্মুখীন হচ্ছে।
নির্বাচন বিরোধ
ডিসেম্বরের মধ্যে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে প্রতিশ্রুতি দেওয়ার পর ও কোন সুনির্দিষ্ট তারিখ নির্ধারণ করেনি অন্তবর্তীকালীন সরকার।
প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন চেয়ে বলেছে যে একটি সুনির্দিষ্ট নির্বাচনী পরিকল্পনা ছাড়া ইউনূসের সরকারের প্রতি সমর্থন অব্যাহত রাখা ‘কঠিন’।
রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করে ও দীর্ঘদিন বেসামরিক কাজে সেনা নিয়োজিত রাখলে দেশের প্রতিরক্ষাব্যবস্থা দূর্বল হয়ে পড়বে আশঙ্কা প্রকাশ করে বছরের শেষের মধ্যে নির্বাচনের আহ্বান জানান।
‘মূল সংস্কার সম্পন্ন না হওয়া পর্যন্ত নির্বাচনের জন্য অপেক্ষা করতে হবে’ বিৃবতি দেয় ছাত্র-নেতৃত্বাধীন বিক্ষোভ থেকে জন্ম নেওয়া ন্যাশনাল সিটিজেন পার্টি (এনসিপি)।
সংস্কারে অচলাবস্থা
ক্ষমতায় এসে যে সংস্কারের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন ড.মুহাম্মদ ইউনূস তা ধীর গতিতে অগ্রসর হয়েছে। তার সরকার ছয়টি সংস্কার প্যানেলের সুপারিশের উপর ঐকমত্য তৈরির জন্য সাত সদস্যের একটি প্যানেল জাতীয় ঐক্যমত্য কমিশন (এনসিসি) গঠন করেছে।
তত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা পুনরুদ্ধারের এবং বিচারিক স্বাধীনতার প্রতি সমর্থন দেখিয়েছে এনসিসি।
তবে তীব্র মতবিরোধ সাংবিধানিক সংস্কার, দ্বি-কক্ষ বিশিষ্ট সংসদ এবং বিচার বিভাগের বিকেন্দ্রীকরণের জন্য আরও জটিল প্রস্তাবগুলিকে মেঘাচ্ছন্ন করে দিয়েছে।
জুনের প্রথম সপ্তাহে সংস্কার নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলির সাথে দ্বিতীয় দফার আলোচনা শুরু হবে।
আইন ও প্রশাসন
বাংলাদেশের অস্থিতিশীল আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি জনগণের উদ্বেগকে আরও বাড়িয়ে তুলছে, সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলিতে সরকারি কর্মচারী, শিক্ষক এবং রাজনৈতিক কর্মীদের ক্রমবর্ধমান রাজপথ বিক্ষোভ রাজধানী ঢাকার মতো প্রধান শহরগুলিতে জীবনযাত্রাকে ব্যাহত করছে।
রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা অর্জিত না হওয়ায় যে কোন সময় পরিস্থিতির অবনতি গঠার আশঙ্কায় রয়েছে জনগণ।
শেখ হাসিনার দলের ওপর নিষেধাজ্ঞা
চলতি মাসে নিবন্ধন স্থগিত করা হয় আওয়ামী লীগের। ভবিষ্যৎ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করা নিয়ে প্রশ্নবিদ্ধ দলটি। তবে পরবর্তী নির্বাচনের সময় অন্তর্ভুক্তিমূলক মনোভাব নিয়ে উদ্বেগ আরও বেড়ে গেছে।
ইউনূসের প্রেস সচিব শফিকুল আলম, আওয়ামী লীগ সরকারকে অস্থিতিশীল করার চেষ্টার পর নিসেধাজ্ঞার মাধ্যমে যুদ্ধাবসানের আহ্বান জানিয়েছে।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকের এক পোস্টে শেখ হাসিনার পুত্র সজীব ওয়াজেদ জয় ‘ইউনূসের প্রতিহিংসার রাজনীতি’ কে চলমান এই সংকটের জন্য দায়ী করেছেন।
আপনার মতামত লিখুন :