বুধবার, ২৮ মে, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


মেহেদী হাসান খাজা

প্রকাশিত: মে ২৬, ২০২৫, ১০:২৪ এএম

ডিশ ব্যবসা ও আধিপত্য নিয়ে হত্যাকাণ্ড

মেহেদী হাসান খাজা

প্রকাশিত: মে ২৬, ২০২৫, ১০:২৪ এএম

ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

ডিশ ব্যবসার ভাগাভাগি কিংবা এলাকায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে রাজধানীর মধ্যবাড্ডায় গুলশান থানা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক কামরুল আহসান সাধনকে (৫২) প্রকাশ্যে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। তদন্ত শেষে এমনটাই ধারণা করছে পুলিশ। তদন্তসংশ্লিষ্টরা বলছেন, সিসিটিভির ভিডিও বিশ্লেষণ করে কিলিং মিশনে অংশ নেওয়া দুজনকে শনাক্ত করা হয়েছে। তাদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে। পুলিশ বলছে, হত্যার ঘটনায় নিহতের স্ত্রী দিলরুবা আক্তার বাদী হয়ে বাড্ডা থানায় মামলা করেছেন। 

পুলিশের ভাষ্য মতে, সাধন স্থানীয় ক্যাবল টিভি ও ইন্টারনেট ব্যবসার সঙ্গে প্রত্যক্ষ-পরোক্ষভাবে জড়িত। ৫ আগস্টের পর তিনি এলাকায় প্রবেশ করেন এবং সরকার পতনের পর ডিশ ব্যবসা নিয়ন্ত্রণ করে আসছিলেন প্রায় ১০ মাস ধরে। অনেকেই মনে করছেন, ডিশ ব্যবসার জেরেই দুর্বৃত্তরা সাধনকে হত্যা করেছে।  

পুলিশ বলছে, এ ঘটনায় এ পর্যন্ত কাউকে গ্রেপ্তার করা হয়নি, তবে ২ জনকে শনাক্ত করা হলেও নেপথ্যের হোতাদের খোঁজা হচ্ছে। তদন্ত সূত্র মতে, গুলশান ও বাড্ডা এলাকায় সাধনের সঙ্গে বিএনপির বিভিন্ন ইউনিটের সঙ্গে দ্বন্দ্ব ছিল। তবে প্রাথমিক তদন্তে উঠে এসেছে, রাজনৈতিক কোন্দল, গ্রুপিং ও আধিপত্যের কারণেই হয়তো খুন হয়েছেন বিএনপি নেতা সাধন।  

দুই ঘাতক এলোপাতাড়ি গুলি করে:  এর আগে গত রোববার রাত সাড়ে ১০টার দিকে বাড্ডা থানার গুদারাঘাট এলাকায় গুলশান থানা বিএনপির যুগ্ম সম্পাদক কামরুল আহসান সাধনকে দুর্বৃত্তরা গুলি চালিয়ে হত্যা করে। তবে কে বা কারা খুন করেছে তা নিশ্চিত করতে পারেনি পুলিশ ও স্বজনরা। প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাতে নিহতের ভাগনি জামাই ইসমাইল হোসেন জানান, দুজন শুটার এলোপাতাড়ি গুলি ছুড়েছে। 

জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউটে মরদেহের সঙ্গে থাকা একাধিক স্বজন জানান, গুদারাঘাট ৪নং রোডের সাবেক কমিশনার কাইয়ুমের কার্যালয়ের বিপরীতে চায়ের দোকানে বসে চা খাচ্ছিলেন। সেখানে বিএনপি নেতা কাইয়ুমের ভাগিনা কামরুল ও আরও কয়েকজনসহ বসা ছিলেন সাধন।  

এর মাঝে হঠাৎ দুজন এসে এলোপাতাড়ি গুলি করে। দুজনই মাস্ক পরা ছিল। গুলিতে সাধন ঘটনাস্থলেই পড়ে যান। এরপর ফাঁকা গুলি করতে করতে পালিয়ে যায় সন্ত্রাসীরা। স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে হৃদরোগ হাসপাতালে নিলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। হত্যাকাণ্ডের আগে দুর্বৃত্তরা সেখানে ঘোরাঘুরি করছিল বলে জানা গেছে।

আসামিদের ফাঁসি চায় পরিবার: এদিকে নিহতের স্ত্রী দিলরুবা আক্তার জানান, আমার স্বামীর সাথে কারো কোনো বিরোধ ছিল কি না, মনে পড়ছে না। তবে যারাই হত্যাকাণ্ডটি ঘটিয়েছে তাদের শাস্তি চাই, ফাঁসি চাই। 

বাড্ডা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাইফুল ইসলাম জানান, মধ্যবাড্ডার গুদারাঘাট এলাকায় দুর্বৃত্তদের গুলিতে গুলশান থানা বিএনপির নেতা সাধন নিহত হন। এ হত্যার ঘটনায় নিহতের স্ত্রী দিলরুবা আক্তার বাদী হয়ে বাড্ডা থানায় একটি মামলা করেছেন। তবে এই মামলায় আসামিদের অজ্ঞাতপরিচয় দেখানো হয়েছে। কারো নাম উল্লেখ করা হয়নি। তবে তার মরদেহ শহিদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে ময়নাতদন্ত করা হয়েছে।  ময়নাতদন্তের রিপোর্ট পেলে হয়তো এ ঘটনার চাঞ্চল্যকর তথ্য পাওয়া যাবে।   

বাড্ডা থানার ওসি সাইফুল ইসলাম বলেন, সিসি ক্যামেরা ফুটেজে দেখা গেছে, গুদারাঘাট চার নম্বর রোডে দুজন ব্যক্তি বিএনপি নেতা কামরুলকে এলোপাতাড়ি গুলি করে হেঁটে চলে যাচ্ছে। হত্যার ঘটনায় মামলা হয়েছে। বিএনপি নেতা কামরুলের বাসা গুদারাঘাট এলাকায়। তিনি এলাকায় ডিশের ব্যবসা করতেন।  

ডিশের ব্যবসা ও কী কারণে খুন করা হয়েছে সব কিছু আমলে নিয়েই তদন্ত করা হচ্ছে। জানতে চাইলে পুলিশের দায়িত্বশীল আরেক কর্মকর্তা জানান, সিসি ক্যামেরা ফুটেজে যে দুজনকে প্রকাশ্যে গুলি করতে দেখা গেছে, তাদের শনাক্ত করা হয়েছে। এখন শুধু তাদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।

এ বিষয়ে বাড্ডা থানার উপপরিদর্শক মেহেদি হাসান জানান, বিএনপি নেতা সাধন সড়কের পাশে চেয়ারে বসে আরও দু-তিনজনের সঙ্গে কথা বলছিলেন। ঠিক এমন সময় পেছন থেকে অজ্ঞাত দুজন হেঁটে এসে সাধনকে লক্ষ্য করে গুলি করতে থাকে।  এরপর তারা ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যায়। সাধন স্থানীয় ক্যাবল টিভি ও ইন্টারনেট ব্যবসার সঙ্গে জড়িত ছিলেন বলে জানা গেছে। তিনি বলেন, ‘দুর্বৃত্তদের চিহ্নিত করে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চালাচ্ছি।  হত্যার কারণ তাৎক্ষণিকভাবে জানা যায়নি। তদন্তের পর বিস্তারিত জানা যাবে।’

এ বিষয়ে জানতে চাইলে গুলশান বিভাগের বাড্ডা জোনের সহকারী কমিশনার শফিকুল ইসলাম বলেন, নিহত কামরুল আহসান সাধনের খুনিদের ছাড় দেওয়া হবে না। এ ঘটনার গভীরে তদন্ত চলছে। আসল ঘটনা তদন্তে বের হলেও অপরাধীদের ধরতে সুবিধা হবে। 

বিএনপির নিন্দা ও প্রতিবাদ: এদিকে কামরুল হাসান সাধনকে গুলি করে হত্যার ঘটনায় প্রতিবাদ ও নিন্দা জানিয়েছে বিএনপি ঢাকা মহানগর বিএনপি। গতকাল রাজধানীর হৃদরোগ হাসপাতালে তাকে দেখতে আসেন ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির আহ্বায়ক আমিনুল হক ও অন্য নেতাকর্মীরা। এ সময় তারা এ ঘটনার নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান। 

জামায়াতের নিন্দা: এদিকে বিএনপি নেতা কামরুল আহসান সাধনকে হত্যার ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়েছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী।  গতকাল সোমবার এক বিবৃতিতে এই নিন্দা জানান জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল অ্যাডভোকেট এহসানুল মাহবুব জুবায়ের।

 

রূপালী বাংলাদেশ

Link copied!