ঢাকা রবিবার, ১০ আগস্ট, ২০২৫

রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের প্রথম ইউনিট চালু হবে পাঁচ মাসের মধ্যে

রূপালী ডেস্ক
প্রকাশিত: আগস্ট ১০, ২০২৫, ০১:২৪ পিএম
রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র। ছবি- সংগৃহীত

পাবনার রূপপুরে রাশিয়া নির্মিত পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের (আরএনপিপি) ১,২০০ মেগাওয়াট উৎপাদন ক্ষমতাসম্পন্ন প্রথম ইউনিটটি পাঁচ মাসের মধ্যে চালু হবে বলে জানা গেছে।

চলতি বছরের ডিসেম্বর অথবা ২০২৫ সালের জানুয়ারিতে নির্ধারিত সময় অনুযায়ী উৎপাদন শুরু করবে বলে জানিয়েছেন কর্মকর্তারা।

নিউক্লিয়ার পাওয়ার প্ল্যান্ট কোম্পানি বাংলাদেশ লিমিটেডের (এনপিসিবিএল) ব্যবস্থাপনা পরিচালক ড. মো. জাহেদুল হাসান বলেন, ‘ইউনিটটির পরীক্ষামূলক চালনা শুরু হলে ধীরে ধীরে সর্বোচ্চ ক্ষমতায় বিদ্যুৎ উৎপাদন শুরু করবে।’

তিনি জানান, জ্বালানি ভর্তি হওয়ার পর প্রথম ইউনিটটি ধারাবাহিকভাবে ১০ মাস পরীক্ষামূলকভাবে চালানো হবে এবং ‘জ্বালানি লোড করতে আমাদের এক মাস সময় লাগবে’।

ব্যবস্থাপনা পরিচালক বলেন, ‘রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের (আরএনপিপি) জন্য একাধিক পরীক্ষা দরকার, যা দেশের প্রথম পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের মান ও গুণগত মান যাচাইয়ের গ্যারান্টি টেস্ট।’

আরএনপিপি কর্মকর্তারা জানান, কেন্দ্রটি রক্ষণাবেক্ষণ ও পরিচালনার জন্য প্রায় ২,০০০ প্রশিক্ষিত জনবল প্রয়োজন হবে। এখন পর্যন্ত প্রায় ১,০০০ জন আন্তর্জাতিক মান বজায় রেখে প্রশিক্ষণ নিয়েছে এবং তাদের দক্ষতা বাড়ানোর জন্য আরও প্রশিক্ষণ কর্মসূচি চলছে।

তিনি জানান, জ্বালানি ভর্তি হওয়ার পর প্রথম ইউনিটটি ধারাবাহিকভাবে ১০ মাস পরীক্ষামূলকভাবে চালানো হবে এবং ‘জ্বালানি লোড করতে আমাদের এক মাস সময় লাগবে’।

ব্যবস্থাপনা পরিচালক বলেন, ‘রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের (আরএনপিপি) জন্য একাধিক পরীক্ষা দরকার, যা দেশের প্রথম পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের মান ও গুণগত মান যাচাইয়ের গ্যারান্টি টেস্ট।’

সম্পর্কিত এক অগ্রগতিতে, পাওয়ার গ্রিড কোম্পানি অব বাংলাদেশ (পিজিসিবি) ইতোমধ্যে নতুন নির্মিত রূপপুর-গোপালগঞ্জ গ্রিড লাইনের মাধ্যমে বিদ্যুৎ সঞ্চালনের পরীক্ষা সম্পন্ন করেছে।

পিজিসিবির ভারপ্রাপ্ত প্রধান প্রকৌশলী মো. দেলোয়ার হোসেন জানান, ২ জুন, ২০২৫ তারিখে ট্রান্সমিশন লাইনের পরীক্ষা সম্পন্ন হয়েছে। পরীক্ষা সম্পন্ন হওয়ার পর ১৫৮ কিলোমিটার দীর্ঘ ২,০০০ মেগাওয়াট ধারণক্ষমতাসম্পন্ন ৪০০ কেভি সিঙ্গেল সার্কিট ট্রান্সমিশন লাইন আগামী বছরের মে মাসে বিদ্যুৎ সঞ্চালনের জন্য প্রস্তুত হয়েছে।

এ ছাড়া তিনি জানান, আরও দুটি ট্রান্সমিশন লাইন- রূপপুর-বগুড়া ৪০০ কেভি সিঙ্গেল সার্কিট (ক্ষমতা ২,০০০ মেগাওয়াট) জুন ২০২৪-এ এবং রূপপুর-বাঘাবাড়ী ২৩০ কেভি ডাবল সার্কিট (ক্ষমতা ২,০০০ মেগাওয়াট) মে ২০২২-এ সম্পন্ন হয়েছে। এই তিনটি ট্রান্সমিশন লাইন রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে বিদ্যুৎ সঞ্চালনের জন্য প্রস্তুত রয়েছে।

আরএনপিপি প্রকল্পের তথ্য অনুযায়ী, রাশিয়ার রসাটম স্টেট করপোরেশন ইতোমধ্যে গত জুনে প্রথম ইউনিটে জ্বালানি লোডের আগে রিঅ্যাক্টর কন্টেইনমেন্ট পরীক্ষা সফলভাবে সম্পন্ন করেছে। দলিলপত্রে কন্টেইনমেন্ট ডিজাইনের সব শর্ত ও সর্বোচ্চ নিরাপত্তা মান পূরণের বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়েছে।

সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, অস্বাভাবিক পরিস্থিতিতে সৃষ্ট অভ্যন্তরীণ চাপ সহ্য করার সক্ষমতা ও কাঠামোর সুরক্ষা নিশ্চিত করতে একাধিক পরীক্ষা সম্পন্ন করা হয়েছে। খুব শিগগিরই প্রথম ইউনিটে ‘হট মিডিয়া টেস্ট’ হবে, যেখানে প্রাথমিক কুল্যান্ট সার্কিটকে নির্ধারিত মানে উত্তপ্ত করা হবে এবং বাষ্প উৎপাদন করা হবে।

রাশিয়ার কারিগরি ও আর্থিক সহায়তায় প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হচ্ছে, যেখানে আন্তর্জাতিক পারমাণবিক শক্তি সংস্থার (আইএইএ) নিরাপত্তা মান, প্রাসঙ্গিক দিকনির্দেশনা ও আন্তর্জাতিক সেরা অনুশীলন অনুসরণ করা হচ্ছে।

২০১৭ সালের ৩০ নভেম্বর নির্মাণকাজ শুরু হয়। আইএইএ-এর নিয়ম মেনে সব শর্ত পূরণের পর বাংলাদেশ রূপপুর প্রকল্পে পারমাণবিক জ্বালানি আমদানি ও সংরক্ষণের লাইসেন্স পায়। ২০১১ সালের ফেব্রুয়ারিতে রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় পারমাণবিক শক্তি করপোরেশন রসাটম ও বাংলাদেশ সরকার রূপপুরে এই প্রকল্প নির্মাণের জন্য চুক্তি স্বাক্ষর করে।