ঢাকা শুক্রবার, ২৬ সেপ্টেম্বর, ২০২৫

শ্রম সংস্কারে একমত রাজনৈতিক দলগুলো, বিনিয়োগ আকর্ষণে গুরুত্ব ড. ইউনূসের

রূপালী প্রতিবেদক
প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ২৬, ২০২৫, ১০:৩৪ এএম
প্রধান উপদেষ্টা, মির্জা ফখরুল, আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের ও তাসনিম জারা। ছবি- সংগৃহীত

বাংলাদেশে শ্রম আইন সংস্কার ও শ্রমিক অধিকার নিশ্চিত করতে রাজনৈতিক দলগুলো ঐকমত্যে পৌঁছেছে। বিদেশি বিনিয়োগ আকর্ষণ এবং পোশাক শিল্পের টেকসই প্রবৃদ্ধি নিশ্চিত করতে এই সংস্কারকে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস।

বৃহস্পতিবার (২৫ সেপ্টেম্বর) নিউইয়র্কে জাতিসংঘে বাংলাদেশ স্থায়ী মিশনের আয়োজনে অনুষ্ঠিত এক উচ্চপর্যায়ের নৈশভোজে এই অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন বিভিন্ন রাজনৈতিক নেতা, কূটনীতিক ও জাতিসংঘ কর্মকর্তারা। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূস।

তিনি বলেন, বাংলাদেশে বৃহৎ পরিসরে বিদেশি বিনিয়োগের জন্য শ্রম সংস্কারের বিকল্প নেই। আসন্ন জাতীয় নির্বাচনের আগে আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা (আইএলও) কনভেনশনের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ গুরুত্বপূর্ণ সংস্কার বাস্তবায়নের প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেন তিনি।

প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ দূত লুৎফে সিদ্দিকীর সঞ্চালনায় আয়োজিত আলোচনায় আইএলও মহাপরিচালকসহ জাতিসংঘের বিভিন্ন সংস্থার ঊর্ধ্বতন প্রতিনিধিরা অংশ নেন। বক্তারা শ্রম সংস্কারের মাধ্যমে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ও আন্তর্জাতিক অবস্থানের সম্ভাবনা নিয়ে মত দেন।

বাংলাদেশের তিনটি প্রধান রাজনৈতিক দলের নেতারা পোশাক শিল্পের গুরুত্ব তুলে ধরেন এবং অব্যাহত শ্রম খাত সংস্কারের প্রতি সমর্থন জানান। বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, পোশাক শিল্প বাংলাদেশের অর্থনীতির মূলভিত্তি; তাই ভবিষ্যৎ সরকারকে এর প্রবৃদ্ধি ও টেকসইতাকে অগ্রাধিকার দিতে হবে।

জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির সৈয়দ আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের উল্লেখ করেন, জামায়াতের বহু নেতাকর্মীর পোশাক শিল্পে সরাসরি অভিজ্ঞতা রয়েছে, যা এই খাতকে আরও প্রতিযোগিতামূলক করতে সহায়ক হবে। 

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের পররাষ্ট্র উপদেষ্টা হুমায়ুন কবির বর্তমান শ্রম উদ্যোগের প্রশংসা করেন এবং ভবিষ্যৎ প্রশাসনের অধীনে এগুলো আরও সম্প্রসারিত হওয়া উচিত বলে মন্তব্য করেন।

এনসিপির সিনিয়র নেত্রী ড. তাসনিম জারা তার রাজনৈতিক যাত্রার সংজ্ঞায়িত মুহূর্ত হিসেবে রানা প্লাজা ট্র্যাজেডির অভিজ্ঞতা তুলে ধরেন। একজন মেডিকেল ছাত্রী হিসেবে আহতদের সেবা দেওয়ার অভিজ্ঞতা তাকে অনিরাপদ শ্রম অনুশীলনের মানবিক মূল্য উপলব্ধি করিয়েছিল বলে তিনি উল্লেখ করেন।

শেষে প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূস বলেন, অর্থবহ ও স্থায়ী সংস্কার বাস্তবায়নে সরকারের দৃঢ় অঙ্গীকার অব্যাহত থাকবে, এবং বিনিয়োগবান্ধব পরিবেশ গঠনে সকলে একসঙ্গে কাজ করার আহ্বান জানান।