রাজধানীর ফার্মগেটে মেট্রোরেলের একটি পিলার থেকে বিয়ারিং প্যাড ছিটকে পড়ে এক পথচারীর মৃত্যুর ঘটনায় দীর্ঘ ২৩ ঘন্টা বন্ধ থাকার পর উত্তরা থেকে মতিঝিল পর্যন্ত মেট্রোরেল চলাচল স্বাভাবিক হয়েছে।
সোমবার (২৭ অক্টোবর) মেট্রোরেল কর্তৃপক্ষ এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে। এতে বলা হয়, সকাল ১১টা থেকে নিরবচ্ছিন্নভাবে পুরো রুটে ট্রেন চলাচল শুরু হবে।
ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেড (ডিএমটিসিএল) জানিয়েছে, যাত্রীসাধারণের সুবিধার্থে ও নিরাপত্তার নিশ্চয়তার পরেই পুরো রুটে ট্রেন চলাচল পুনরায় শুরু করা হয়েছে। সাময়িক অসুবিধার জন্য কর্তৃপক্ষ দুঃখ প্রকাশ করেছে এবং যাত্রীদের সহযোগিতার জন্য ধন্যবাদ জানিয়েছেন।
প্রসঙ্গত, রোববার (২৬ অক্টোবর) দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে ফার্মগেট মেট্রো স্টেশন সংলগ্ন বাংলাদেশ কৃষিবিদ ইনস্টিটিউটের সামনে মেট্রোরেলের একটি পিলারের বিয়ারিং প্যাড ছিটকে পড়ে আবুল কালাম নামে এক পথচারী নিহত হন। নিহত আবুল কালামের গ্রামের বাড়ি শরীয়তপুর জেলার নড়িয়া উপজেলার ঈশরপাটি গ্রামে।
দুর্ঘটনার পর রুটের মেট্রোরেল চলাচল সাময়িকভাবে বন্ধ রাখা হয়। পরবর্তীতে বিকেল ৩টার দিকে উত্তরা থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত চলাচল শুরু হয়। এরপর সন্ধ্যা সোয়া ৭টার দিকে মতিঝিল থেকে শাহবাগ পর্যন্ত মেট্রোরেল সেবা পুনরায় চালু হয়। তবে মেরামত ও নিরাপত্তা যাচাইয়ের কারণে সোমবার সকাল পর্যন্ত শাহবাগ থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত অংশে ট্রেন চলাচল বন্ধ রাখা হয়েছিল।
এ ঘটনায় রেল এবং সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফাওজুল কবির নিহত আবুল কালামের পরিবারকে ৫ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়ার ঘোষণা দেন। পাশাপাশি, পরিবারের বেকার কোনো সদস্য থাকলে তাকে মেট্রোরেলে চাকরি দেওয়ার ব্যবস্থা করা হবে। এ দুর্ঘটনার পূর্ণাঙ্গ তদন্তে ৫ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে।
নির্মাণ ও রক্ষণাবেক্ষণ সংক্রান্ত এই দুর্ঘটনা রাজধানীর মেট্রোরেলের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে নতুন উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, বিয়ারিং প্যাড ও অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামোর মান ও স্থায়িত্ব নিশ্চিত না হলে ভবিষ্যতে বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটার আশঙ্কা রয়েছে।
এর আগেও, ২০২৪ সালের ১৮ সেপ্টেম্বর খামারবাড়ি এলাকায় একটি বিয়ারিং প্যাড ছিটকে পড়ে। তখন আগারগাঁও থেকে মতিঝিল পর্যন্ত ১১ ঘণ্টা ট্রেন চলাচল বন্ধ ছিল। দুই দফা এই দুর্ঘটনা রাজধানীর মেট্রোরেল নিরাপত্তা ও রক্ষণাবেক্ষণ নিয়ে গুরুতর উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে।



