দশম গ্রেডে বেতনসহ তিন দফা দাবিতে আন্দোলনরত প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে ১১০ জন আহত হয়েছেন বলে জানা গেছে।
শনিবার (৮ অক্টোবর) বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে এই ঘটনা ঘটে।
জানা গেছে, দশম গ্রেডে বেতনসহ তিন দফা দাবিতে প্রাথমিক শিক্ষকদের শাহবাগ অভিমুখী পদযাত্রায় বাধা দেয় পুলিশ। একপর্যায়ে আন্দোলনরত শিক্ষকদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ শুরু হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে জলকামান, সাউন্ড গ্রেনেড ও টিয়ার শেল নিক্ষেপ করে পুলিশ।
ঢামেক হাসপাতালের পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ পরিদর্শক মো. ফারুক বলেন, প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ১১০ জন শিক্ষক আহত হয়ে ঢাকা মেডিকেলের জরুরি বিভাগে এসেছেন। অনেকের জরুরি বিভাগে চিকিৎসা চলছে। আবার কিছু শিক্ষক চিকিৎসা নিয়ে চলে গেছেন।
এর আগে, দশম গ্রেডে বেতনসহ তিন দফা দাবি আদায়ে রাজধানীর কেন্দ্রীয় শহিদ মিনারে লাগাতার অবস্থান কর্মসূচি শুরু করেছেন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকরা।
‘প্রাথমিক শিক্ষক দাবি বাস্তবায়ন পরিষদ’-এর ব্যানারে বাংলাদেশ প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির বিভিন্ন অংশসহ চারটি সংগঠন এ কর্মসূচি পরিচালনা করছে। সংগঠনগুলো হলো- বাংলাদেশ প্রাথমিক শিক্ষক সমিতি (কাশেম-শাহিন), বাংলাদেশ প্রাথমিক বিদ্যালয় সহকারী শিক্ষক সমিতি, বাংলাদেশ প্রাথমিক শিক্ষক সমিতি (শাহিন-লিপি) এবং সহকারী শিক্ষক দশম গ্রেড বাস্তবায়ন পরিষদ। এ ছাড়াও ঢাকা–চট্টগ্রাম বিভাগের তৃতীয় ধাপে নিয়োগপ্রাপ্ত শিক্ষকরাও আন্দোলনে যোগ দেয়ার ঘোষণা দিয়েছেন।
শহীদ মিনারে অবস্থান নেওয়া শিক্ষকরা বলছেন, উপজেলা হিসাবরক্ষণ অফিসে বেতন নিতে গেলে অফিস সহকারীরা ১২তম গ্রেডে বেতন পান, আর তারা শিক্ষক হয়ে পান ১৩তম গ্রেডে। এই গ্রেড বৈষম্যের কারণে সম্মানও পান না তারা।
শিক্ষকদের অভিযোগ, তাদের আয় এতো কম যে, বাজারে গিয়ে ভালো মাছও কেনা সম্ভব হয় না। দুই ঈদের বোনাস দিয়েও ঈদ ঠিকভাবে করতে পারেন না। দেশে শিক্ষকদের এমন অবমূল্যায়ন অগ্রহণযোগ্য।
বাংলাদেশ প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির (শাহিন–লিপি) সাধারণ সম্পাদক খায়রুন নাহার লিপি বলেন, ‘আলোচনা বহুবার হয়েছে, কিন্তু কোনো ফল নেই। এবার দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত রাজপথেই থাকব।’
সহকারী শিক্ষকদের তিন দফা দাবিগুলো হলো- ১০ম গ্রেডে বেতন নির্ধারণ, ১০ ও ১৬ বছর পূর্তিতে উচ্চতর গ্রেড সমস্যার সমাধান এবং শতভাগ বিভাগীয় পদোন্নতি বাস্তবায়ন।
প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, দেশে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে ৬৫ হাজারের বেশি, আর শিক্ষক সংখ্যা প্রায় ৩ লাখ ৮৪ হাজার।
-20251029102411.webp)

