ঢাকা সোমবার, ১০ নভেম্বর, ২০২৫

প্রাথমিক শিক্ষকদের কর্মবিরতি স্থগিত

রূপালী প্রতিবেদক
প্রকাশিত: নভেম্বর ৯, ২০২৫, ০৯:৫৫ পিএম
সচিবালয়ে বৈঠকে প্রাথমিক সহকারী শিক্ষক ঐক্য পরিষদ। ছবি- সংগৃহীত

সরকারের আশ্বাসে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের চলমান কর্মবিরতি আপাতত স্থগিত করা হয়েছে। তবে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে তাদের অবস্থান কর্মসূচি পূর্বের মতোই চলবে।

রোববার (৯ নভেম্বর) রাত সাড়ে ৯টার দিকে সচিবালয়ে সরকারের প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক শেষে কর্মসূচি স্থগিতের ঘোষণা দেন প্রাথমিক সহকারী শিক্ষক ঐক্য পরিষদের কেন্দ্রীয় আহ্বায়ক মোহাম্মদ শামসুদ্দিন মাসুদ।

শামসুদ্দিন মাসুদ বলেন, বৈঠকে শিক্ষক সংগঠনগুলোর পক্ষ থেকে তিনটি প্রধান দাবি তুলে ধরা হয়:

  • সহকারী শিক্ষকদের বর্তমান বেতন স্কেল ১৩তম গ্রেড থেকে ১০ম গ্রেডে উন্নীত করা।
  • চাকরির ১০ ও ১৬ বছর পূর্তিতে উচ্চতর গ্রেড প্রাপ্তির জটিলতা নিরসন।
  • সহকারী শিক্ষক থেকে প্রধান শিক্ষক পদে শতভাগ বিভাগীয় পদোন্নতির ব্যবস্থা করা।

বৈঠকে সরকারি পক্ষ থেকে আশ্বাস দেওয়া হয়েছে যে, অর্থ মন্ত্রণালয়কে বিষয়গুলো অবহিত করে দ্রুততম সময়ে সমাধানের উদ্যোগ নেওয়া হবে। এই আশ্বাসের পরিপ্রেক্ষিতে চলমান কর্মবিরতি স্থগিতের ঘোষণা আসে।

এর আগে শনিবার (৮ নভেম্বর) বিকেলে রাজধানীর শাহবাগে ‘কলম বিসর্জন’ কর্মসূচিতে পুলিশ সাউন্ড গ্রেনেড, টিয়ারশেল ও রাবার বুলেট নিক্ষেপ করে। এতে বহু শিক্ষক আহত হন। পুলিশের এই পদক্ষেপের প্রতিবাদে শিক্ষকরা কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে অবস্থান নেন।

রোববার সকাল থেকে দেশের প্রায় ৬৫ হাজার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে কর্মবিরতি পালিত হয়। এতে প্রায় ৩ লাখ ৮৪ হাজার শিক্ষক পাঠদান থেকে বিরত থাকেন। কর্মবিরতির মূল উদ্দেশ্য ছিল শিক্ষকদের দাবি বাস্তবায়ন ও পুলিশের হামলার প্রতিবাদ করা।

প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, দেশে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সংখ্যা ৬৫,৫৬৭টি। চলতি বছরের ২৪ এপ্রিল সরকার প্রধান শিক্ষকদের বেতন ১১তম থেকে ১০ম গ্রেডে উন্নীত করে এবং ১৩তম গ্রেডের শিক্ষকদের ১২তম গ্রেডে উন্নীত করার উদ্যোগ নেয়। তবে এতে কিছু সহকারী শিক্ষক বৈষম্যের অভিযোগ তুলে আন্দোলনে নামেন।

মোহাম্মদ শামসুদ্দিন মাসুদ বলেন, ‘আমরা সরকারের আশ্বাস পেয়েছি যে, আমাদের দাবিগুলোকে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে সমাধান করা হবে। তাই আপাতত কর্মবিরতি স্থগিত রাখা হলো। কিন্তু শিক্ষার্থীদের পাঠদান নিশ্চিত করতে আমরা কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে অবস্থান কর্মসূচি চালিয়ে যাব। আমরা চাই যে, দেশের সব শিশু শিক্ষার সুযোগ পাবে এবং শিক্ষকের অধিকারও সুরক্ষিত থাকবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমরা চাই সরকার আমাদের দাবি পূরণে যথাযথ পদক্ষেপ নিক। আশা করি, অর্থ মন্ত্রণালয় ও প্রাথমিক শিক্ষা মন্ত্রণালয় দ্রুত কার্যকর সমাধান আনবে।’