স্বাধীনতাবিরোধী কোনো অপতৎপরতা বরদাশত করা হবে না বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স।
মঙ্গলবার (৬ আগস্ট) দুপুরে মুক্তিযুদ্ধে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে বীরত্বপূর্ণ যুদ্ধের দিবস ‘বান্দরকাটা যুদ্ধ দিবস’ উপলক্ষে আয়োজিত সভায় তিনি এ হুঁশিয়ারি দেন।
মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কমান্ড কাউন্সিল আয়োজিত এ আলোচনা সভা ময়মনসিংহের হলুয়াঘাট উপজেলার বরাক মুক্তিযোদ্ধা শহীদ স্মৃতি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে অনুষ্ঠিত হয়।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে প্রিন্স বলেন, ‘সুষ্ঠু নির্বাচনের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ প্রয়াস চালাতে হবে। নির্বাচনের জন্য জনগণ মুখিয়ে আছে। আওয়ামী লীগ ১৫ বছরে নির্বাচনের নামে প্রহসন করে কর্তৃত্ববাদী ও ফ্যাসিবাদী শাসন কায়েম করেছিল। অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ নির্বাচনের মাধ্যমে জনপ্রতিনিধিত্বশীল সংসদ ও সরকার প্রতিষ্ঠাই হবে সবচেয়ে বড় ও কার্যকর সংস্কার।’
২৬ সালের ফেব্রুয়ারিতে রোজার আগে নির্বাচনের ঘোষণা দেওয়ায় প্রধান উপদেষ্টাকে ধন্যবাদ জানান সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স। তিনি বলেন, ‘রাষ্ট্রের গণতান্ত্রিক রূপান্তরে এই নির্বাচন মাইলফলক বিবেচিত হবে।’
বিএনপি মুক্তিযুদ্ধের আকাঙ্ক্ষা ধারণ করে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘মুক্তিযোদ্ধাদের দল বিএনপি। স্বাধীনতার মূলমন্ত্র সাম্য, মানবিক, গণতান্ত্রিক ও ন্যায়ভিত্তিক রাষ্ট্র গঠন বিএনপির রাজনীতির মূল লক্ষ্য। মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি ধরে রাখা ও মুক্তিযোদ্ধাদের কল্যাণে স্বাধীনতার ৩০ বছর পর বেগম খালেদা জিয়া ২০০১ সালে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয় গঠন করেছিলেন এবং মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মানী বৃদ্ধি ও মর্যাদা প্রতিষ্ঠা করেছিলেন।’
মুক্তিযোদ্ধাদের বিএনপির পাশে থাকার আহ্বান জানিয়ে প্রিন্স বলেন, ‘আওয়ামী লীগ মুক্তিযুদ্ধ ও মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে বারোয়ারি ব্যবসা করেছে, নিজস্ব সম্পদ বিবেচনা করে করে তাদের নিয়ে রাজনীতি করেছে। মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে স্বাধীন রাষ্ট্র ও জাতি প্রতিষ্ঠিত হয়েছে, মুক্তিযোদ্ধারা জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান। বিএনপি মুক্তিযুদ্ধ ও মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে রাজনীতি করে না, করবেও না। তাদের দলীয় রাজনীতির সংকীর্ণতার উর্ধ্বে রাখতে চায়।’
বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব বলেন, ‘বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ঘোষণা দিয়েছেন, বিএনপির আগামী দিনের সরকারও শহীদ জিয়া ও বেগম খালেদা জিয়ার পথ অনুসরণ করে মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতার স্বপ্ন বাস্তবায়ন, মুক্তিযোদ্ধা ও তাদের পরিবারের কল্যাণে অগ্রণী ভূমিকা পালন করবে। মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতাবিরোধী কোনো অপতৎপরতা বরদাশত করবে না।’
আলোচনা সভার আগে এমরান সালেহ প্রিন্স বান্দরকাটা যুদ্ধে শহীদদের প্রতি সন্মান প্রদর্শন করে স্মৃতিস্তম্ভে পুষ্পমাল্য অর্পণ করেন এবং বীর মুক্তিযোদ্ধদের সঙ্গে কুশল বিনিময় করেন।
উল্লেখ্য, ১৯৭১ সালের ৬ অগস্ট বান্দরকাটায় পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর সঙ্গে সম্মুখ সমরে ৯ জন বীর মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন। ৬৩ জন দখলদার পাকিস্তানি সেনা নিহত হয়।
বীর মুক্তিযোদ্ধা মোফাজ্জল হোসেনের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় বক্তব্য দেন বীর মুক্তিযোদ্ধা গাজী কাজিম উদ্দিন, বীর মুক্তিযোদ্ধা অধ্যাপক আমজাদ আলী, বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুর রাজ্জাক প্রমুখ।
আপনার মতামত লিখুন :