দীর্ঘদিন ধরে নতুন রাজনৈতিক পরিচয়, সংগঠনের স্বতন্ত্র ভাবমূর্তি ও ভোটযুদ্ধে সহজে চেনার মতো প্রতীক পাওয়ার চেষ্টা চলছিল এনসিপি। অবশেষে নির্বাচন কমিশনের যাচাই–বাছাই শেষে শাপলাকলি প্রতীক হিসেবে বরাদ্দ করা হয় এনসিপিকে। এই প্রতীক নিয়ে দেশবাসীর উদ্দেশ্যে সম্প্রতি মন্তব্য করেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম। তিনি বলেছেন, ‘আমরা আজ কলি হয়ে আছি। ইনশাল্লাহ, যদি আপনারা আমাদের সঙ্গে থাকেন, আমরা এক দিন ফুটবই।’
রোববার (৯ নভেম্বর) রাতে এনসিপির পেজে প্রকাশিত এক ভিডিও বার্তায় তিনি এসব কথা বলেন।
নাহিদ ইসলাম বলেন, আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করার জন্য এনসিপি অনেক লড়াই করে একটা সুন্দর প্রতীক জয় করে নিয়ে এসেছে, সেটি হচ্ছে শাপলাকলি। এটি আমাদের আপামর গ্রাম বাংলার প্রতিচ্ছবি, আমাদের নদীময় সভ্যতার প্রতীক শাপলাকলি শুভ্রতার প্রতীক।
তিনি বলেন, আপনি হয়তো কখনো ভাবেননি যে, রাজনীতিতে আসবেন। রাজনীতি আপনার কাছে হয়তো একটা ভয়ের বিষয় ছিল। হয়তো অনেক দূরের একটা বিষয়। আপনি মনে করেন যে, রাজনীতি টাকাওয়ালাদের বিষয়। যাদের অনেক লোকবল আছে, রাজনীতি তাদের জন্য। কিন্তু এই রাজনীতি আপনার জীবনধারা পরিবর্তন করে দেয়, কীভাবে তা পরিচালিত হবে? সরকার কীভাবে পরিচালিত হবে? একটা রাষ্ট্র কোন দিকে এগোবে। ফলে রাজনীতিকে যে ঘৃণা করা, রাজনীতি থেকে দূরে থাকা, এই জায়গা থেকে আমরা এবার সরে আসতে চাচ্ছি।
এনসিপি আহ্বায়ক বলেন, আমরা দেখেছি গণঅভ্যুত্থানে রাজনীতিবিদরা এসে কিন্তু লড়াইটা করেনি। রাজনীতিবিদদের সঙ্গেও সাধারণ মানুষেরা এসেছেন। ফলে আপনার কাছে যদি দেশ বদলের অঙ্গীকার থাকে সেই ধরনের পরিকল্পনা থাকে আপনি এবার আসুন। রাজনীতিকে জয় করুন। রাজনীতিকে নিজের করে নিন। রাজনীতিকে আমরা আর চাই না। যে রাজনীতি কেবল সেই টাকাওয়ালা লুটেরা ব্যবসায়ীদের কাছে থাকবে না, চাঁদাবাজদের হাতে থাকবে না, রাজনীতি হবে সাধারণ মানুষের, সাধারণ জনগণের।
তিনি আরও বলেন, জনগণের ভোট নিয়ে জনপ্রতিনিধিরা সংসদ ভবনে আসে। আমরা এই সংসদ ভবনকে দখলমুক্ত করেছিলাম ৫ আগস্টে। যেই সংসদ ভবন জনগণ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে গিয়েছিল। জনগণের প্রতিনিধিরা এখানে ছিল না। এই সংসদ ভবনকে ব্যবহার করে আমাদের সংবিধানকে কুক্ষিগত করা হয়েছিল। আমাদের রাষ্ট্রকে দলীয়করণ করা হয়েছিল। এই সবকিছু থেকে মুক্ত করতেই কিন্তু আমরা ৫ আগস্ট সংসদ ভবনে এসেছিলাম। সামনেই নির্বাচন হবে। আমরা ৫ আগস্টের পরে পুরা সময়টা ধরে নানা কমিশন ঐকমত্য কমিশনের মাধ্যমে দেশের সংস্কার প্রক্রিয়া নিয়ে আলোচনা করেছি।
এনসিপির এই নেতা বলেন, বাংলাদেশের কোথায় কী সমস্যা সেই সমস্যাগুলোকে আইডেন্টিফাই করা হয়েছে। একটা ঐকমত্যের জায়গায় এসেছে। তবে সবকিছুই নির্ভর করবে এই সংসদের ওপরে। এই সংসদ একটি সংস্কার পরিষদ সভা হবে। যেখানে আমরা যে পরিবর্তনের কথাগুলো বলেছি সেই পরিবর্তনগুলো বাস্তবায়িত হবে। ফলে এবারের সংসদ বাংলাদেশের ইতিহাসের যেকোনো সংসদের থেকে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ একটি সংসদ নির্বাচন হতে যাচ্ছে।

