কোরবানি হলো ইসলামের একটি গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত, যা আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য নির্দিষ্ট পশু জবাই করে আদায় করা হয়। কোরবানি করতে হলে শরিয়তের নির্দিষ্ট নিয়ম ও বিধান মেনে চলা আবশ্যক, যাতে ইবাদতটি আল্লাহর নিকট কবুল হয়।
পশু নির্বাচন
কোরবানির জন্য পশুটি হতে হবে শরিয়তের মাপকাঠিতে সুস্থ, পরিপক্ব ও নির্দোষ। অনুমোদিত পশু হলো- গরু, ছাগল, ভেড়া, দুম্বা, মহিষ, উট। পশুটি যেন অসুস্থ, অন্ধ বা অঙ্গহীন না হয়।
নিয়ত করা
কোরবানি শুরু করার আগে নিয়ত (মন থেকে ইচ্ছা) করা জরুরি, যে ইবাদতটি আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য করছ। নিয়ত স্রেফ আল্লাহর জন্য হওয়া চাই, কোনো রকম শূন্যতা বা দেখানোর জন্য নয়।
পশুর নামের আগে আল্লাহর নাম উচ্চারণ করা (তাসবিহ)
কোরবানি শুরু করার সময় ‘বিসমিল্লাহ আল্লাহু আকবর’ বলে জবাই করতে হয়। এটা হাদিসে সুন্নত হিসেবে উল্লেখ আছে। আল্লাহর নাম উচ্চারণ করা আবশ্যক, অন্যথায় কোরবানি গ্রহণযোগ্য হবে না।
সঠিক স্থানে জবাই করা
কোরবানি যথাসম্ভব পরিষ্কার, প্রশস্ত ও নিরাপদ স্থানে করতে হবে। যাতে পশুর রক্ত ভালোভাবে ঝরতে পারে এবং অন্য কারো ক্ষতি না হয়।
জবাই করার পদ্ধতি
পশুর গলা ধারালো ছুরি দিয়ে দ্রুত ও শান্তভাবে কাটা উচিত।
গলার প্রধান রগ, খাদ্যনালী ও শ্বাসনালী কাটতে হবে।
পশুর যন্ত্রণায় অতিরিক্ত শ্লেষ্মা বা কষ্ট দেওয়া উচিত নয়।
জবাই করার সময় পশুর পক্ষপাতিত্ব বা নিষ্ঠুরতা পরিহার করতে হবে।
পশুর রক্ত সম্পূর্ণ ঝরানো
কোরবানি কবুল হওয়ার জন্য পশুর রক্ত যেন পুরোপুরি ঝরে যায় তা নিশ্চিত করতে হবে। রক্ত জমে থাকলে সেটা গ্রহণযোগ্য নয়।
মাংসের বন্টন
কোরবানির মাংস তিন ভাগে ভাগ করা উচিত- এক ভাগ নিজে খাওয়া, এক ভাগ আত্মীয়-স্বজনদের দেয়া, আর এক ভাগ গরিব-দুঃখীদের মধ্যে বিতরণ করা।
সময়সীমা
কোরবানি জিলহজ মাসের ১০ থেকে ১২ তারিখ পর্যন্ত আদায় করা বৈধ। এ সময়ের বাইরে কোরবানি করলে তা সুন্নত নয়।
কোরবানি একটি মহান ইবাদত, যা আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের অন্যতম মাধ্যম। তাই কোরবানির পশু সঠিক নির্বাচন, নিয়ত, আল্লাহর নাম উচ্চারণ এবং সুন্নতের অনুসরণে জবাই করতে হবে। এরপর মাংস সঠিকভাবে বিতরণ করলে ইবাদতটি পরিপূর্ণ ও কবুল হবে।
আপনার মতামত লিখুন :