হাদিস শরীফে কোরবানির গুরুত্ব, ফজিলত, আদব ও বিধান স্পষ্টভাবে বর্ণনা করা হয়েছে। নিচে কয়েকটি সহীহ হাদীস তুলে ধরা হলো।
কোরবানির গুরুত্ব:
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেন, যে ব্যক্তি সামর্থ্য থাকা সত্ত্বেও কোরবানি করে না, সে যেন আমাদের ঈদগাহে না আসে। (ইবনে মাজাহ: ৩১২৩)
এই হাদিস প্রমাণ করে, কোরবানি সামর্থ্যবান মুসলমানদের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বের সাথে পালনীয় ইবাদত। অনেক ফকীহ (বিশেষত হানাফি মাযহাবের) মতে, এটি ওয়াজিব।
কোরবানির ফজিলত:
রাসূল (সা.) বলেন, কোরবানির দিন আল্লাহর কাছে কোরবানির চেয়ে অধিক প্রিয় কোনো আমল নেই। কোরবানির পশু কিয়ামতের দিন শিং, চুল ও খুরসহ হাজির হবে। আর কোরবানির রক্ত মাটিতে পড়ার আগেই তা আল্লাহর কাছে কবুল হয়ে যায়। সুতরাং খুশি মনে কোরবানি করো। (তিরমিযি: ১৪৯৩, ইবনে মাজাহ: ৩১২৭)
এই হাদিসে কোরবানির তাৎপর্য ও সওয়াবের তাৎক্ষণিক কবুল হওয়ার কথা বলা হয়েছে।
অন্যের পক্ষ থেকে কোরবানি:
হাদিসে, নবী (সা.) দুটি শিংওয়ালা, সাদা ও কালো রঙের মেষ কোরবানি করেছেন। একটি নিজের পক্ষ থেকে, অপরটি তাঁর উম্মতের মধ্যে যারা কোরবানি করতে পারেনি তাদের পক্ষ থেকে। (আবু দাউদ: ২৭৯০)
এ থেকে প্রমাণিত হয়, কেউ চাইলে অন্যের পক্ষ থেকেও কোরবানি করতে পারে- এমনকি দরিদ্র বা মৃত মুসলমানদের পক্ষেও।
কোরবানির পশুর প্রতি সদয় হওয়া
রাসূল (সা.) বলেন, তোমরা কোরবানি করলে সুন্দরভাবে করো। জবাই করার সময় ছুরি ধারালো করো এবং পশুকে কষ্ট দিও না। (সহীহ মুসলিম: ১৯৫৫)
এই হাদিসে পশুর প্রতি দয়া ও জবাইয়ের সময় আদব শেখানো হয়েছে।
হাদিস শরীফে কোরবানি এমন এক ইবাদত হিসেবে বর্ণিত হয়েছে, যা আল্লাহর সবচেয়ে প্রিয় আমলগুলোর একটি। এটি ঈমান, তাকওয়া ও ত্যাগের প্রতীক। শুধু রক্ত ঝরানো নয় বরং আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য অন্তরের খুশি ও নিষ্ঠা নিয়ে কোরবানি করাই এর মূল উদ্দেশ্য।
আপনার মতামত লিখুন :