কক্সবাজারের টেকনাফে র্যাব পরিচয়ে রোহিঙ্গা ক্যাম্প-১৫ থেকে অপহৃত রোহিঙ্গাকে উদ্ধার করা হয়েছে। এ সময় অস্ত্রসহ অপহরণকারী মূলহোতাকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব।
রোববার (১৫ জুন) বিকালে র্যাব-১৫ এর সহকারী পুলিশ সুপার সহকারী পরিচালক (ল’ এন্ড মিডিয়া অফিসার) আ. মো. ফারুক এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
আটক ব্যক্তি হলেন, গোপালগঞ্জ জেলার কাশিয়ানি থানার রাজপাট ইউনিয়নের ডুমরাকান্দি এলাকার আকবর আলীর ছেলে মো. সুমন মুন্সী।
মো. ফারুক জানান, গত ১১ জুন (বুধবার) রাত আনুমানিক ১১ টায় রোহিঙ্গা ক্যাম্প-১৫’তে বসবাসরত মো. রহিমুল্লাহর ছেলে মো. হাফিজ উল্লাহকে এনায়েত উল্লাহ ও নবী হোসেনের যোগসাজশে র্যাব পরিচয়ে ৩ জন অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী বরখাস্ত সৈনিক সুমন, সন্ত্রাসী রাকিব, সন্ত্রাসী শিকদার নিজ বসতঘর হতে ডেকে রঙ্গিখালী গহীন পাহাড়ে নিয়ে যায়।
পরবর্তীতে অজ্ঞাত স্থান থেকে সন্ত্রাসীরা ভিকটিমের পরিবারের নিকট ১৫ লক্ষ টাকা মুক্তিপন দাবি করেন। অপহরণের সময় সন্ত্রাসীরা ভিকটিমের পরিবারকে প্রশাসনের সহায়তা নিলে হাফিজ উল্লাহকে মেরে ফেলার হুমকি দেন।
তিনি জানান, অপহরণের সংবাদ প্রাপ্তির পরক্ষণেই র্যাব-১৫ ভিকটিমের পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগের পাশাপাশি বিভিন্ন জায়গায় গোয়েন্দা নজরদারি বৃদ্ধি করতে থাকে। এবং ঘটনাটি গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করতে থাকে।
এরই প্রেক্ষিতে গত শুক্রবার বিকালে গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে র্যাবের একটি চৌকসদল রঙ্গিখালীতে অপহরণের অন্যতম প্রধান হোতা কুখ্যাত ডাকাত সর্দার শাহআলমের বাড়িতে হানা দিয়ে আফ্রিদি ও আব্দুল গফুর নামে দুজন সন্দেহভাজনকে আটক করতে সক্ষম হয়।
র্যাবের গোয়েন্দা কার্যক্রম আরও বৃদ্ধি করে গতকাল বিকেলে মরিচা বাজার থেকে মূল অপহরণকারী বরখাস্ত সৈনিক মো. সুমন মুন্সিকে আটক করতে সক্ষম হয়।
তিনি আরও জানান, আমরা সন্ত্রাসী সুমনের মাধ্যমে অপহরণকারী ডাকাত শাহআলম, সন্ত্রাসী রাকিব এবং সন্ত্রাসী শিকদারকে ভিকটিম হাফিজ উল্লাহকে ছেড়ে দেওয়ার জন্য বার্তা প্রেরণ করলেও উল্লেখিত সন্ত্রাসীরা তাতে কোনো কর্ণপাত করেনি। এরই প্রেক্ষিতে ভিকটিমকে উদ্ধারের জন্য আজকে র্যাব, বিজিবি, পুলিশ, এপিবিএন ও বনবিভাগের ২৫৬ জন জনবল নিয়ে ভিকটিমকে আটকে রাখার সম্ভাব্য গহীন অরণ্যে সাঁড়াশি অভিযান পরিচালনা করে।
অভিযানে অপহরণের ৭২ ঘণ্টা পরে ভিকটিম হাফিজ উল্লাহকে উদ্ধার করতে সক্ষম হই এবং ১টি দেশীয় অস্ত্র, ০৩ রাউন্ড এ্যমুনেশনসহ র্যাবের ইউনিফর্ম ও ওয়াকিটকি উদ্ধারে সক্ষম হই। আটককৃত সন্ত্রাসীকে পরবর্তীতে আইনী প্রক্রিয়া সম্পাদনের নিমিত্তে পুলিশে সোপর্দ করা হবে।
সন্ত্রাসী সুমনের বিরুদ্ধে বিভিন্ন থানায় ইতোপূর্বে মোট ১১টি মামলার তথ্য পাওয়া যায়।
উল্লেখ্য যে, রঙ্গিখালীর গহীন পাহাড়সমূহ আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য গতমাসের ঠিক এ সময়ে যৌথ অভিযান পরিচালনা করা হয়েছিল। সন্ত্রাসীদের দমনের লক্ষ্যে এবং অত্র গহীন জঙ্গলে শক্ত নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী নিয়মিত ব্যবধানে এখানে অভিযান পরিচালনা করবে।
আপনার মতামত লিখুন :