ক্রিকেট মাঠে দীর্ঘ ক্যারিয়ার শেষে এবার কি রাজনীতির ময়দানে নাম লেখাচ্ছেন তামিম ইকবাল? বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলের সাবেক অধিনায়ককে ঘিরে চট্টগ্রামের রাজনীতিতে শুরু হয়েছে এমনই প্রশ্ন। কেউ আবার বলছেন ব্যাট রেখে এবার ভোটের মাঠে তামিম। তবে কী হতে চলছে চট্টগ্রামে তামিমের ‘পলিটিক্যাল ডেব্যু’?।
গত শনিবার চট্টগ্রামে অনুষ্ঠিত বিএনপির ‘তারুণ্যের রাজনৈতিক অধিকার প্রতিষ্ঠার সমাবেশে’ অংশ নিয়ে বক্তব্য দেওয়ার পর থেকেই এই আলোচনা তীব্র আকার ধারণ করেছে।
বক্তব্য দেওয়ার পরপরই রাজনৈতিক মহলে গুঞ্জন ছড়ায়, তামিম বিএনপির টিকিটে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে চট্টগ্রাম-৯ (কোতোয়ালি) আসন থেকে নির্বাচন করতে পারেন। যদিও এখনো পর্যন্ত তামিম বা বিএনপি কোনও পক্ষই বিষয়টি আনুষ্ঠানিকভাবে স্বীকার করেনি।
তবে বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবের রহমান শামীম এই গুঞ্জনের ব্যাপারে বলেন, ‘তামিম ইকবাল একজন জনপ্রিয় ক্রীড়াবিদ হিসেবে যুবসমাজের প্রতিনিধি হয়ে সমাবেশে অংশ নিয়েছেন। এটি কোনো রাজনৈতিক পদক্ষেপ নয়।’
তামিম নিজেও সমাবেশে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে উপস্থিত থাকার কথা অস্বীকার করে বলেন, ‘আমি রাজনীতিবিদ নই। একজন স্পোর্টসম্যান হিসেবে তরুণদের সঙ্গে মতবিনিময়ে অংশ নিয়েছি। কেবল খেলাধুলা নিয়েই কথা বলেছি। এটা থেকে ভিন্ন কিছু অনুমান করার সুযোগ নেই।’
তবে রাজনৈতিক অঙ্গনে তামিমকে ঘিরে আগ্রহ নতুন নয়। বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সঙ্গে তামিমের পারিবারিক সম্পর্ক পুরনো। ২০১৩ সালের ২৭ জুন ঢাকায় তামিমের বিবাহোত্তর অনুষ্ঠানে ব্যক্তিগতভাবে উপস্থিত হয়েছিলেন খালেদা জিয়া, সঙ্গে ছিলেন দলের শীর্ষ নেতারাও।
তামিমের ঘনিষ্ঠ আত্মীয় ও বিসিবির সাবেক পরিচালক সিরাজুদ্দীন মোহাম্মদ আলমগীর বলেন, ‘তামিমের সঙ্গে কথা বলে বুঝেছি, সে এখনো রাজনীতির ব্যাপারে আগ্রহী নয়। তার চিন্তার কেন্দ্রে রয়েছে ক্রিকেটই।’
২০০৭ সালে জাতীয় দলে অভিষেকের পর থেকে তামিম ইকবাল হয়ে উঠেছিলেন বাংলাদেশের অন্যতম সেরা ব্যাটসম্যান। টেস্ট, ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টি মিলিয়ে ৩৯১ আন্তর্জাতিক ম্যাচে তিনি করেন ১৫ হাজার ২৪৯ রান, যার মধ্যে রয়েছে ২৫টি সেঞ্চুরি ও ৯৪টি অর্ধশতক।
২০২৩ সালে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে মিরপুরে শেষ আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলার পর ২০২৪ সালের জানুয়ারিতে তিনি অবসরের ঘোষণা দেন।
চলতি বছরের শুরুতে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে বিদায় নিলেও মাঠের বাইরে নতুন মঞ্চে তামিমের উপস্থিতি ভবিষ্যতের সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচন করেছে—ক্রিকেটার থেকে রাজনীতিবিদ হওয়ার জল্পনাকে আরও একধাপ এগিয়ে দিয়েছে।