রিয়াল মাদ্রিদের কিংবদন্তি মিডফিল্ডার লুকা মদ্রিচের চমকপ্রদ ক্যারিয়ারের অবসান ঘটল ক্লাব বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে প্যারিস সেন্ট জার্মেইনের (পিএসজি) কাছে ৪-০ গোলে বিধ্বস্ত হওয়ার মধ্য দিয়ে।
তবে এই পরাজয় হয়তো ভবিষ্যতে কেবলই একটি পরিসংখ্যান হয়ে থাকবে। কেননা, মদ্রিচ রেখে গেলেন স্মরণীয় এক উত্তরাধিকার।
৩৯ বছর বয়সী এই ক্রোয়াট তারকা বুধবার রাতে শেষবারের মতো রিয়ালের জার্সি গায়ে মাঠে নামেন, দ্বিতীয়ার্ধে বদলি হিসেবে।
চলতি বছর মে মাসে তিনি ঘোষণা দেন, ক্লাব বিশ্বকাপের পর তিনি রিয়াল মাদ্রিদ ছাড়ছেন। জানা গেছে, আগামী মৌসুমে ইতালির এসি মিলানে খেলবেন তিনি।
তবে এখানেই থেমে যেতে চান না তিনি। সেপ্টেম্বরেই ৪০ বছরে পা রাখতে যাওয়া মদ্রিচ এখনো আশা করেন ২০২৬ সালের বিশ্বকাপে দেশের প্রতিনিধিত্ব করতে, এবং সে লক্ষ্যে নিয়মিত খেলার সুযোগ চান।
ইতিহাসের পাতায় অম্লান মদ্রিচ
২০১২ সালে টটেনহ্যাম হটস্পার থেকে রিয়ালে যোগ দেওয়ার পর ১৩ বছরের ক্যারিয়ারে মদ্রিচ জিতেছেন ক্লাব-রেকর্ড ২৮টি শিরোপা। এর মধ্যে রয়েছে ৬টি চ্যাম্পিয়নস লিগ ও ৪টি লা লিগা শিরোপা।
২০১৮ সালে তিনি জিতেছিলেন স্বপ্নের ব্যালন ডি’অর, মেসি ও রোনালদোর দীর্ঘ আধিপত্যের মধ্যে ব্যতিক্রমী এক ইতিহাস রচনা করে।
নতুন কোচ জাবি আলোনসো ম্যাচ শেষে বলেন, এটি হয়তো কাঙ্ক্ষিত বিদায় নয়, তবে মদ্রিচকে মানুষ এই ম্যাচের জন্য মনে রাখবে না, বরং অসংখ্য দুর্দান্ত পারফরম্যান্সের জন্য চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবেন।
দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবেন ‘ক্রোয়াট জাদুকর’
৫৯৭ ম্যাচে ৪৩ গোল ও ৯৫টি অ্যাসিস্টের মালিক মদ্রিচ। তার সবচেয়ে ঐতিহাসিক মুহূর্তগুলোর একটি ২০১৪ সালের চ্যাম্পিয়নস লিগ ফাইনালে আতলেতিকো মাদ্রিদের বিপক্ষে যোগ করা সময়ের কর্নার থেকে সার্জিও রামোসের হেড গোলটি।
যা দিয়ে শুরু হয় ‘লা ডেসিমা’-র রূপকথা।
২০২২ সালে চেলসির বিপক্ষে চ্যাম্পিয়নস লিগ কোয়ার্টার ফাইনালে রদ্রিগোর উদ্দেশ্যে তার অসাধারণ পাসটিও স্মরণীয়। ম্যাচটি শেষ পর্যন্ত অতিরিক্ত সময়ে জিতে শিরোপা তুলেছিল রিয়াল।
ক্লাব প্রেসিডেন্ট ফ্লোরেন্তিনো পেরেজ বলেন, তার প্রভাব হয়তো শেষ মৌসুমে কমে এসেছিল, কিন্তু তার উত্তরাধিকার চিরস্থায়ী হয়ে থাকবে।
সাবেক কোচ আনচেলত্তিও তাকে বলেছিলেন, মদ্রিচ ফুটবলের জন্য এক অনন্য উপহার।
নতুন অধ্যায়ের সূচনা
মদ্রিচের বিদায়ের মধ্য দিয়ে রিয়াল মাদ্রিদের ২০১৪ সালের চ্যাম্পিয়নস লিগ বিজয়ী দলের একমাত্র অবশিষ্ট খেলোয়াড় হিসেবে থাকলেন ডানি কারভাহাল।
এখন জাবি আলোনসোর অধীনে শুরু হচ্ছে রিয়ালের এক নতুন যুগ, যেখানে মদ্রিচের অভাবটি হবে গভীরভাবে অনুভূত।
আলোনসো বলেন, আমরা একেবারে শুরু থেকে শুরু করছি, এবং মদ্রিচ ছাড়া সেটি যেন আরও গভীর বাস্তবতা।
আপনার মতামত লিখুন :