গত মাসে প্রিমিয়ার লিগ এবং উইমেন্স সুপার লিগের খেলোয়াড় ও ম্যানেজারদেরকে সোশ্যাল মিডিয়ায় ২ হাজারের বেশি মারাত্মক হুমকি এবং অপমানজনক পোস্ট দেখা গেছে। এতে মৃত্যু হুমকি, ধর্ষণ হুমকি, বর্ণবাদী ও সহিংস ভাষা ব্যবহৃত হয়েছে।
এটি প্রকাশ করেছে বিসিসির এক অনুসন্ধান, যা ডেটা সায়েন্স প্রতিষ্ঠান সিগনিফাই-এর সঙ্গে যৌথভাবে করা হয়েছে।
বিবিসির বিশ্লেষণে দেখা গেছে, ৮ এবং ৯ নভেম্বর অনুষ্ঠিত ১০টি প্রিমিয়ার লিগ ম্যাচ এবং ৬টি উইমেন্স সুপার লিগ ম্যাচের সময় এই হুমকি দেওয়া হয়। মূলত ম্যানেজাররাই খেলোয়াড়দের চেয়ে বেশি লক্ষ্যবস্তু হয়েছেন। প্রায় ৮২% অপমানজনক পোস্টই করা হয়েছে এক্স (পূর্বে টুইটার নামে পরিচিত) প্ল্যাটফর্মে।
পুরুষদের লিগে সবচেয়ে বেশি হুমকির মুখে পড়েছেন রুবেন অ্যামোরিম, আর্নে স্লট এবং এডি হাও। নারী লিগে চেলসির ম্যানেজার সোনিয়া বোম্পাস্টর এবং চেলসি ক্লাবকে লক্ষ্য করে মোট হুমকির অর্ধেক পোস্ট করা হয়েছে।
ডেটা অনুযায়ী, হুমকির ৬১% ইউকে ও আয়ারল্যান্ড থেকে এসেছে এবং সংখ্যা ক্রমেই বাড়ছে।
লিভারপুলের হেড কোচ আর্নে স্লট বলেন, সমালোচনা স্বাভাবিক, তবে হুমকি কখনও গ্রহণযোগ্য নয়। আমি সোশ্যাল মিডিয়ায় নেই, তবুও জানি পরিস্থিতি কেমন।
সিগনিফাই-এর থ্রেট ম্যাট্রিক্স নামের কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা প্রোগ্রাম সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্টগুলো স্ক্যান করে এবং সম্ভাব্য অপমানজনক পোস্ট শনাক্ত করে। নির্বাচিত সপ্তাহান্তে প্রায় ৫ লাখ পোস্ট বিশ্লেষণ করা হয়, যার মধ্যে ২,০১৫টি পোস্ট মারাত্মক হুমকি বা ঘৃণাপূর্ণ ভাষা হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে।
কিছু পোস্ট এতটাই গুরুতর ছিল যে ক্লাব ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে জানানো হয়েছে। যদিও কিছু পোস্ট সরানো হয়েছে, অনেক পোস্ট এখনও অনলাইনে আছে।
পেশাদার ফুটবল খেলোয়াড়দের সংগঠন পিএফএ-এর প্রধান মাহেতা মোলাঙ্গো বলেন, যদি এ ধরনের আচরণ রাস্তায় হতো, তা আইনগত ও আর্থিকভাবে জরিমানা বহন করত। অনলাইনে মানুষ কেন মুক্ত মনে করে?
উইমেন্স লিগে চেলসির ১-১ ড্র ম্যাচের সময় হুমকির সংখ্যা সর্বাধিক ছিল। সোনিয়া বোম্পাস্টর বলেন, এ ধরনের হুমকি খুব ভয়ঙ্কর। আমাদের পরিবার, বিশেষত শিশুদের মানসিক ক্ষতি হতে পারে। সোশ্যাল মিডিয়া কোম্পানিগুলো দায়িত্বশীল নয়।
এদিকে কিছু ক্লাব নিজেদের উদ্যোগ নিচ্ছে। আর্সেনাল ক্লাব সিগনিফাই-এর সঙ্গে কাজ করে ৯০% হ্রাস পেয়েছে অপমানজনক পোস্টে। চেলসি উইমেন্সও একই উদ্যোগ নিয়েছে। প্রিমিয়ার লিগে ২০২০ থেকে ৪,০০০-এর বেশি অনলাইন বৈষম্যমূলক অপমান তদন্ত করা হয়েছে।
টিম কুপার, প্রিমিয়ার লিগের কনটেন্ট প্রোটেকশন ডিরেক্টর বলেন, আমরা ম্যাচের সময় অপমানজনক পোস্ট মনিটর করি এবং প্ল্যাটফর্মগুলো তাদের অ্যালগরিদম পরিবর্তন করলে সমস্যা কমানো সম্ভব।



