নতুন শক্তিশালী বৃষ্টিবলয় ‘ঈশান’ ধেয়ে আসছে বাংলাদেশের দিকে। এর প্রভাবে উত্তর ও উত্তর-পূর্বাঞ্চলজুড়ে টানা ভারি বৃষ্টিপাতের আশঙ্কা করা হচ্ছে।
ইতোমধ্যেই দেশের বিভিন্ন নদ-নদীর পানি বাড়তে শুরু করেছে। এর ফলে অন্তত ১০টি জেলার নিম্নাঞ্চলে নতুন করে বন্যা দেখা দিতে পারে বলে সতর্ক করেছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।
বাংলাদেশ ওয়েদার অবজারভেশন টিম (বিডব্লিউওটি) তাদের ফেসবুক পেজে জানায়, এ মৌসুমের ৬ষ্ঠ ও বছরের ১০ম বৃষ্টিবলয় ‘ঈশান। যা রাজশাহী, রংপুর ও ময়মনসিংহ হয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করবে এবং ৯ আগস্ট রংপুর হয়ে দেশ ত্যাগ করতে পারে।
সোমবার (৪ আগস্ট) দুপুরে বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র জানায়, টানা ভারি বৃষ্টিপাতের ফলে দেশের অধিকাংশ নদ-নদীর পানি বাড়ছে এবং আগামী ২৪ ঘণ্টায় কিছু নদীর পানি বিপৎসীমা অতিক্রম করতে পারে।
ফলে রংপুর, কুড়িগ্রাম, গাইবান্ধা, লালমনিরহাট, নীলফামারি, সিলেট, সুনামগঞ্জ, নেত্রকোনা, ময়মনসিংহ ও শেরপুরের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হতে পারে।
কোন অঞ্চলে কতটা ঝুঁকি?
উত্তরাঞ্চল: তিস্তা, ধরলা ও দুধকুমার নদীর পানি দ্রুত বাড়ছে। তিস্তার পানি বিপৎসীমা অতিক্রম করতে পারে, ফলে লালমনিরহাট, রংপুর, কুড়িগ্রাম, নীলফামারী ও গাইবান্ধার কিছু অংশে বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে।
সিলেট ও ময়মনসিংহ বিভাগ: সোমেশ্বরী, জিঞ্জিরাম, ভুলাই, কংস ও সারিপোয়াইন নদীর পানি বাড়ছে। এতে সিলেট, সুনামগঞ্জ, ময়মনসিংহ, নেত্রকোনা ও শেরপুরের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হতে পারে।
ব্রহ্মপুত্র-যমুনা-পদ্মা: এসব বড় নদ-নদীর পানি বাড়লেও এখনো বিপৎসীমার নিচে রয়েছে। তবে প্রবণতা চলবে আরও কয়েকদিন।
চট্টগ্রাম ও পার্বত্য এলাকা: ভারি বৃষ্টিপাতে পাহাড়ধসের ঝুঁকি রয়েছে বিশেষ করে রাঙামাটি, বান্দরবান ও সিলেটের কিছু অংশে।
‘ঈশান’ বৃষ্টিবলয়ের প্রভাব কোন অঞ্চলে কেমন থাকবে
- সবচেয়ে বেশি সক্রিয় থাকবে: রংপুর, ময়মনসিংহ ও সিলেট বিভাগে
- বেশ সক্রিয় থাকবে: রাজশাহী, চট্টগ্রাম ও ঢাকা বিভাগে
- মাঝারি সক্রিয় থাকবে: বরিশাল ও খুলনা বিভাগে
- বজ্রপাত ও দমকা হাওয়া: সক্রিয় এলাকাগুলোতে বজ্রপাত ও হঠাৎ দমকা হাওয়ার শঙ্কা
- সমুদ্র: তুলনামূলক নিরাপদ থাকবে, বড় কোনো ঝড়ের শঙ্কা নেই
- আবহাওয়া: উত্তর ও মধ্যাঞ্চলে আরামদায়ক আবহাওয়া থাকলেও দক্ষিণাঞ্চলে ভ্যাপসা গরম থাকতে পারে
- রোদের উপস্থিতি: অধিকাংশ এলাকায় মেঘলা আকাশ, উত্তরাঞ্চলে তেমন রোদ দেখা যাবে না
আবহাওয়াবিদরা পরামর্শ দিয়েছেন, নদী সংলগ্ন এবং পাহাড়ি এলাকার মানুষদের সতর্ক থাকতে এবং প্রয়োজন হলে দ্রুত নিরাপদ স্থানে সরে যেতে।