ঢাকা সোমবার, ২৯ সেপ্টেম্বর, ২০২৫

গাজার হত্যাযজ্ঞ শতাব্দীর পর শতাব্দী স্মরণে থাকবে : মাহাথির মোহাম্মদ

বিশ্ব ডেস্ক
প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ২৯, ২০২৫, ১২:০৮ পিএম
মালয়েশিয়ার সাবেক প্রধানমন্ত্রী মাহাথির মোহাম্মদ। ছবি- সংগৃহীত

ইসরায়েলের হাতে গাজার হত্যাযজ্ঞ শতাব্দীর পর শতাব্দী মানুষ স্মরণে রাখবে বলে মন্তব্য করেছেন মালয়েশিয়ার সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও শতবর্ষী রাজনীতিবিদ মাহাথির মোহাম্মদ।

সংবাদমাধ্যম আলজাজিরাকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে মাহাথির বলেন, ‘গাজার পরিস্থিতি ভয়াবহ। গর্ভবতী নারী, সদ্যজাত শিশু, যুবক-যুবতি, অসুস্থ ও দরিদ্রদের হত্যা করা হচ্ছে। এটি কীভাবে ভুলে যাওয়া সম্ভব? এটি হয়তো শতাব্দীর পর শতাব্দী মনে থাকবে।’

১৯৯০-এর দশকের বসনিয়া ও দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় নাৎসিদের হাতে ইহুদিদের হত্যাযজ্ঞের সঙ্গে গাজার তুলনা টেনে মাহাথির বলেন, ‘যারা নিজেরা গণহত্যার শিকার হয়েছে, তারা অন্যদের ওপর একই পরিণতি চাপিয়ে দেবে—এটা আমি কল্পনাও করিনি। কিন্তু ইসরায়েল সেটাই করছে।’

তিনি মনে করেন, ইসরায়েলি-ফিলিস্তিনি সংকট সমাধানের একমাত্র যৌক্তিক উপায় হলো দ্বি-রাষ্ট্রভিত্তিক সমাধান। যদিও তার মতে, জীবদ্দশায় তিনি এ সমাধান বাস্তবায়ন দেখতে পাবেন না।

১৯২৫ সালে জন্ম নেওয়া মাহাথির মালয়েশিয়ার রাজনীতিতে প্রবেশ করেন ষাটের দশকে। ১৯৮১ থেকে ২০০৩ সাল পর্যন্ত টানা প্রধানমন্ত্রী ছিলেন। ২০১৮ সালে ৯২ বছর বয়সে আবারও প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হয়ে বিশ্বের সবচেয়ে বয়স্ক নেতা হন।

মোট ২৪ বছর ক্ষমতায় থেকে তিনি আধুনিক শিল্পায়িত মালয়েশিয়ার ভিত গড়ে দেন। তবে ২০২০ সালে রাজনৈতিক দলীয় সংকটের কারণে চূড়ান্তভাবে পদত্যাগ করেন।

শতবর্ষী মাহাথিরের মতে, চীন অবশ্যম্ভাবীভাবে যুক্তরাষ্ট্রকে ছাড়িয়ে বিশ্বের ১ নম্বর দেশ হবে। তিনি বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রকে ধরতে চীনের ১০ বছর লাগবে, তারপর তারা ছাড়িয়ে যাবে। চীন একাই ইউরোপ ও আমেরিকার চেয়েও বড় বাজার।’

অন্যদিকে ডোনাল্ড ট্রাম্পের যুক্তরাষ্ট্রকে তিনি দুর্বল বলে মনে করেন। তার ভাষায়, ‘ট্রাম্পের ট্যারিফ যুদ্ধ যুক্তরাষ্ট্রের ক্ষতি করেছে। উৎপাদন ফিরিয়ে আনলেও উচ্চ ব্যয় ও শ্রম সমস্যার কারণে যুক্তরাষ্ট্র প্রতিযোগিতায় টিকতে পারবে না।’

তিনবার হার্ট অ্যাটাকের পর আজও মাহাথির সুস্থভাবে হাঁটেন, প্রতিদিন অফিসে যান, ব্যায়াম করেন এবং সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহার করেন।

দীর্ঘায়ুর রহস্য হিসেবে তিনি পরামর্শ দেন—‘কম খান, শরীর-মন সক্রিয় রাখুন।’ তিনি যোগ করেন, ‘আমার মায়ের সেরা উপদেশ ছিল—যখন খাবারের স্বাদ সবচেয়ে ভালো লাগে, তখনই খাওয়া বন্ধ করো।’