ঢাকা রবিবার, ০৪ মে, ২০২৫

ভারতে ধর্মীয় উৎসবে পদদলিত হয়ে নিহত ৬, আহত ১৮ 

বিশ্ব ডেস্ক
প্রকাশিত: মে ৩, ২০২৫, ১২:০৪ পিএম
আহতদের মধ্যে অনেকের অবস্থা আশঙ্কাজনক। ছবি: সংগৃহীত

ভারতের গোয়া রাজ্যের উত্তরাংশের শ্রীগাও গ্রামে অবস্থিত লায়রাই দেবী মন্দিরে বার্ষিক শোভাযাত্রার সময় ভিড়ের চাপে পদপিষ্ট হয়ে নারীসহ ৬ জন ভক্ত প্রাণ হারিয়েছেন। 

গুরুতর আহত হয়েছেন অন্তত ১৮ জন। শনিবার (৩ মে) ভোরে এ মর্মান্তিক দুর্ঘটনা ঘটে।

পুলিশের তথ্যমতে, শুক্রবার (২ মে) রাত থেকে মন্দিরে শুরু হওয়া বার্ষিক শোভাযাত্রাকে কেন্দ্র করে কয়েক হাজার ভক্ত শ্রীগাওয়ে জড়ো হন। রাত বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ভক্তদের সংখ্যা বেড়েই চলছিল। 

ভোররাতে অতিরিক্ত ভিড় এবং নিয়ন্ত্রণহীন জনসমাগমের ফলে হঠাৎ হুড়োহুড়ি শুরু হয়। বহু মানুষ পড়ে গিয়ে পদপিষ্ট হন, যার ফলে ঘটনাস্থলেই প্রাণ হারান ছয়জন। নিহতদের মধ্যে দুইজন নারী রয়েছেন।

আহতদের মধ্যে কয়েকজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। তাদের উত্তর গোয়া জেলা হাসপাতাল এবং গোয়া মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

উৎসব রূপ নেয় ট্র্যাজেডিতে

লায়রাই দেবী মন্দিরে প্রতিবছর ধর্মীয় উৎসব উপলক্ষে আয়োজিত হয় এ শোভাযাত্রা। এই উৎসবে গোয়ার বিভিন্ন অঞ্চল ছাড়াও পার্শ্ববর্তী রাজ্য থেকে হাজার হাজার ভক্ত অংশ নিতে আসেন। 

তবে এবার নিরাপত্তা ও জনসমাগম ব্যবস্থাপনায় ঘাটতি ছিল বলেই ধারণা স্থানীয়দের।

ধর্মীয় অনুষ্ঠানে পদদলিত হয়ে ভারতে নিহত ১০৭

প্রশাসনের প্রতিক্রিয়া ও তদন্ত

গোয়ার মুখ্যমন্ত্রী প্রমোদ সাওয়ান্ত আহতদের দেখতে হাসপাতালে যান এবং ঘটনার উচ্চপর্যায়ের তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন। 

তিনি বলেন, ‘এই মর্মান্তিক ঘটনায় আমরা গভীরভাবে শোকাহত। আহতদের সর্বোচ্চ চিকিৎসা নিশ্চিত করা হচ্ছে।’

উত্তর গোয়ার পুলিশ সুপার অক্ষত কৌশল জানান, ‘ঘটনার প্রকৃত কারণ উদঘাটনে তদন্ত চলছে। ভিডিও ফুটেজ সংগ্রহ এবং প্রত্যক্ষদর্শীদের বক্তব্য নেওয়া হচ্ছে।’

ধর্মীয় জমায়েত ও জননিরাপত্তা

এ দুর্ঘটনা আবারও ভারতের ধর্মীয় উৎসবগুলোতে জননিরাপত্তা এবং ভিড় নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থার দুর্বলতার চিত্র তুলে ধরেছে। 

অতীতে ভারতে নানা ধর্মীয় আয়োজনে পদপিষ্ট হয়ে বহু প্রাণহানির ঘটনা ঘটেছে, যার মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ ছিল ২০১৩ সালে মধ্যপ্রদেশের রত্নাগড় মন্দিরে ১১৫ জনের মৃত্যু।

লায়রাই দেবী মন্দিরে এই মৃত্যুর ঘটনা শুধু একক দুর্ঘটনা নয়, বরং তা ধর্মীয় আয়োজনগুলোতে পরিকল্পনা, নিরাপত্তা ও জরুরি সাড়া ব্যবস্থার প্রয়োজনীয়তাকে আবারও স্মরণ করিয়ে দেয়। প্রত্যাশা করা যায়, এই ঘটনায় দায়ীদের চিহ্নিত করে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে, যাতে ভবিষ্যতে এমন মর্মান্তিক ঘটনা এড়ানো যায়।