যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প গাজাকে ‘স্বাধীন এলাকা’ বা ‘ফ্রিডম জোন’ বানানোর প্রস্তাব দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, ‘গাজায় আর কিছু রক্ষার নেই, তাই যুক্তরাষ্ট্র সেখানে হস্তক্ষেপ করে নতুন কিছু শুরু করতে পারে।’
বৃহস্পতিবার (১৫ মে) কাতারের রাজধানী দোহায় এক ব্যবসায়িক আলোচনায় তিনি এ সব কথা বলেন।
ট্রাম্প আরও বলেন, ‘আমি আকাশ থেকে তোলা ছবিতে গাজার ধ্বংসাবশেষ দেখেছি। সবকিছু ধ্বংস হয়ে গেছে। মানুষ ধ্বংসস্তূপের নিচে বাস করছে- এটা মেনে নেওয়া যায় না।’
তিনি যুক্তরাষ্ট্রকে গাজা দখলেরও পরামর্শ দেন এবং বলেন, ‘আমি চাই, যুক্তরাষ্ট্র গাজা দখল করুক এবং ওটাকে একটি স্বাধীন অঞ্চলে পরিণত করুক।’
এর আগে ফেব্রুয়ারিতে তিনি গাজা পুনর্গঠনের পরিকল্পনা তুলে ধরেন এবং বলেন, ফিলিস্তিনিদের অন্যত্র সরিয়ে নেওয়া যেতে পারে। তখন জাতিসংঘসহ বিভিন্ন দেশ ও সংগঠন তার এই বক্তব্যের তীব্র নিন্দা জানায়। অনেকে একে ‘জাতিগত নির্মূল’ বলেও আখ্যা দেন।
ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাসের নেতা বাসেম নাইম বলেন, ‘গাজা কোনো বিক্রির বস্তু নয়। এটি আমাদের ভূখণ্ডের অংশ।’
তিনি আরও বলেন, ট্রাম্প যদি সত্যিই শান্তি চান, তবে তিনি গাজা যুদ্ধ থামাতে এবং ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠায় ভূমিকা রাখতে পারেন।
সিরিয়ার ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার
একই সঙ্গে, ট্রাম্প ঘোষণা দেন যে, তিনি সিরিয়ার ওপর থেকে যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা তুলে নিচ্ছেন। দীর্ঘ ২৫ বছর পর কোনো সিরীয় নেতার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন তিনি, তার নাম আহমেদ আল-শারার।
এই সিদ্ধান্তে সৌদি আরব ও তুরস্কের রাষ্ট্রপ্রধানরা ভূমিকা রেখেছেন বলে জানান ট্রাম্প।
সংঘাত এখনো চলমান
গাজার পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ হয়ে উঠছে। ইসরায়েলের হামলায় এখন পর্যন্ত প্রায় ৫৩ হাজার ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। শুধু বুধবার থেকে বৃহস্পতিবার পর্যন্ত ১৪৩ জন নিহত হয়েছেন, যাদের মধ্যে বেশিরভাগই নারী ও শিশু।
বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য, দক্ষিণ গাজার খান ইউনিসে এক পরিবারের ১৩ জন সদস্যকে একই সঙ্গে হত্যা করা হয়েছে- তাদের নাম পর্যন্ত সরকারি নিবন্ধন থেকে মুছে ফেলা হয়েছে বলে হামাস জানায়।
সম্ভাব্য বড় হস্তক্ষেপ
বিশ্লেষকরা বলছেন, যদি ট্রাম্পের পরিকল্পনা বাস্তবায়ন হয়, তাহলে যুক্তরাষ্ট্র ২০০৩ সালের ইরাক যুদ্ধের পর মধ্যপ্রাচ্যে সবচেয়ে বড়ভাবে জড়াবে। ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু ট্রাম্পের প্রস্তাবকে ‘সাহসী’ বলে অভিহিত করেছেন।
আপনার মতামত লিখুন :