ঢাকা মঙ্গলবার, ২০ মে, ২০২৫

ভারতীয় গণমাধ্যমের দাবি

বাংলাদেশের বেলুচিস্তান হতে চলেছে পার্বত্য চট্টগ্রাম

বিশ্ব ডেস্ক
প্রকাশিত: মে ২০, ২০২৫, ০৫:৪৪ এএম
বেলুচিস্তান হতে চলেছে পার্বত্য চট্টগ্রাম। ছবি: সংগৃহীত

ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর বাংলাদেশে একছত্র আধিপত্যে হারিয়ে পাগলপ্রায় প্রতিবেশী ভারত। বাংলাদেশ নিয়ে একের পর এক গোয়েবলসীয় বানোয়াট মিথ্যা তথ্য প্রচার করেই যাচ্ছে দেশটির সংবাদমাধ্যমগুলো।  ঢাকার অভ্যন্তরীণ বিষয়ে অপপ্রচার ও উসকানিমূলক বিশ্লেষণও প্রকাশ করছে।

তবে এবার অন্তর্বর্তীকালীন সরকার বা কোনো রাজনৈতিক দল নয়, বরং পার্বত্য চট্টগ্রাম অঞ্চলকে বাংলাদেশের ‘বেলুচিস্তান’ বলে আখ্যায়িত করেছে ইন্ডিয়া ডটকম নামে একটি ভারতীয় গণমাধ্যম।

পাকিস্তান-ভারত সাম্প্রতিক যুদ্ধের পর বেলুচিস্তানের ভারত সমর্থিত একটি সন্ত্রাসী গোষ্ঠী বেলুচিস্তানকে পাকিস্তান থেকে আলাদা করে স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়েছে। এই প্রেক্ষাপটে গত ১৬ মে প্রচারিত এক প্রতিবেদনে এমন দাবি করা হয়েছে।

প্রতিবেদনের শিরোনামে সরাসরি চট্টগ্রাম বলা হলেও তা মূলত পার্বত্য চট্টগ্রামকে ইঙ্গিত করেই বোঝানো হয়েছে। পুরো প্রতিবেদনটি পড়লে সেটা সহজেই অনুমান করা যায়।

এতে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলীয় পার্বত্য চট্টগ্রামে যে কণ্ঠস্বর উঠে আসছে, তা এখন ঢাকার ক্ষমতার জন্য চ্যালেঞ্জ হয়ে উঠছে।

পাকিস্তানে বেলুচিস্তানের উত্থানশীল কণ্ঠস্বরের মতো, চট্টগ্রামেও বাংলাদেশের বিরুদ্ধে সংগ্রামের আওয়াজ বাড়ছে। অর্থাৎ, পার্বত্য চট্টগ্রাম বাংলাদেশের বেলুচিস্তানে পরিণত হচ্ছে। যদিও কয়েক দশক ধরে বাংলাদেশে পার্বত্য চট্টগ্রামের স্বায়ত্তশাসনের দাবি উঠেছে, কিন্তু সরকারগুলো কখনও তা গুরুত্বের সঙ্গে নেয়নি। এই অবহেলা এখন পার্বত্য চট্টগ্রামকে বিদ্রোহী অঞ্চলে পরিণত করছে ঠিক যেমন বেলুচিস্তান পাকিস্তানের জন্য পরিণত হয়েছে।

ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধের পর পাকিস্তানি কোনো কোনো মহল থেকে একে ১৯৭১-র প্রতিশোধ বলে দাবি করা হয়। নিবেদিতা দাসের ওই প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, “এটা বোঝা গুরুত্বপূর্ণ যে বেলুচিস্তানের মতো পার্বত্য চট্টগ্রামও খনিজ, বন এবং জৈবিক সম্পদে সমৃদ্ধ একটি অঞ্চল।

উভয় স্থানেই স্থানীয় উপজাতি জনগোষ্ঠীকে বহিরাগতদের দ্বারা দমন করা হয়েছিল। তাদের সংস্কৃতি, ভাষা এবং পরিচয় মুছে ফেলার চেষ্টা করা হয়েছিল। বেলুচদের মতো, চাকমা, মারমা এবং জুম্ম সম্প্রদায়ের পরিচয় সংকটে রয়েছে।

উভয় অঞ্চলেই স্বায়ত্তশাসনের দাবিকে রাষ্ট্রদ্রোহিতা বলে দমন করার চেষ্টা করা হয়েছিল। এর পরে এখানকার মানুষের ক্ষত সামনে এসেছিল।’

ভারতীয় গণমাধ্যমটি দাবি করেছে, এমন পরিস্থিতিতে, মনে হচ্ছে ইতিহাসের পুনরাবৃত্তি ঘটছে যেমনটি ১৯৭১ সালে হয়েছিল। বাংলাদেশের স্বাধীনতার সময় মুক্তিবাহিনী সেনাবাহিনীও একই রকম কিছু করেছিল এবং ভারত তাদের সমর্থন করেছিল এবং পাকিস্তানকে দুটি ভাগে ভাগ করেছিল।

মুক্তিযোদ্ধা ও বেলুচ বিদ্রোহীদের প্রতি ভারতের সমর্থনের ইতিহাস টেনে পার্বত্য চট্টগ্রামের বিদ্রোহীদের ভারত কর্তৃক ভবিষ্যৎ সমর্থনের ইঙ্গিত দিয়ে রিপোর্টটি এভাবে শেষ করা হয়েছে যে, ‘এর অর্থ হলো ভারত আবারও বালুচদের সমর্থন করতে পারে এবং ১৯৭১ সালের মতো পাকিস্তান ভেঙে আরেকটি স্বাধীন দেশ, বেলুচিস্তান তৈরি করতে পারে। তবে ভারত সরকার এ ব্যাপারেও কী সিদ্ধান্ত নেয় তা হয়তো এখনও ভবিষ্যতের গর্ভে লুকায়িত।’