ভারতের কেরালার নার্স নিমিশা প্রিয়ার ফাঁসি আগামী ১৬ জুলাই ইয়েমেনে কার্যকর হবে। ইয়েমেনের সরকারি আইনজীবী তার মৃত্যুদণ্ড সংক্রান্ত আদেশে স্বাক্ষর করেছেন, যা ভারতীয় দূতাবাস এবং পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে।
মঙ্গলবার (৮ জুলাই) ভারতীয় সংবাদ ম্যাগাজিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একটি সূত্রের বরাত জানিয়েছে। ২০১৮ সালের জুনে নিমিশার মৃত্যুদণ্ড রায়ের পর থেকে মন্ত্রণালয় বিষয়টি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছে।
সূত্রটি আরও জানিয়েছে, ‘আমরা স্থানীয় কর্তৃপক্ষ ও তার পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রেখেছি এবং সম্ভাব্য সকল সহায়তা প্রদান করেছি।’
ভারতীয় সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদন অনুসারে, ইয়েমেনি নাগরিক তালাল আবদো মেহেদিকে হত্যার অভিযোগে নিমিশা প্রিয়াকে মৃত্যুদণ্ড দেয় দেশটির আদালত। এখন তাকে মৃত্যুদণ্ড থেকে রক্ষা করার একমাত্র পথ হলো তালালের পরিবারের কাছ থেকে ক্ষমা প্রাপ্তি। মানবাধিকার কর্মী স্যামুয়েল জেরোম ভাস্করণ জানিয়েছেন, আইনগত সব পথ ইতোমধ্যেই শেষ হয়ে গেছে।
ইয়েমেনের আইন অনুযায়ী, তালালের পরিবার রক্তমূল্য হিসেবে প্রায় ৮ দশমিক ৫৭ কোটি টাকা দাবি করেছে। কিন্তু এখনও তারা আনুষ্ঠানিকভাবে কোনও যোগাযোগ করেনি। ফলে, আলোচনায় বিলম্ব হচ্ছে। মনোরমা অনলাইনের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, নিমিশার মা প্রেমা কুমারীর অ্যাটর্নি স্যামুয়েল বুধবার তালালের পরিবারের সঙ্গে সরাসরি আলোচনা করার চেষ্টা করবেন।
নিমিশা ২০১১ সালে ইয়েমেনে যান। ২০১৫ সালে তালালের সঙ্গে যৌথভাবে একটি ক্লিনিক চালু করেন। তার স্বামী ও সন্তান আগেই ভারতে ফিরে যান। এরপর তালাল অভিযোগ করেন যে তারা ভুয়া বিবাহের কাগজ তৈরি করেছেন। তিনি নিমিশার পাসপোর্ট রেখে দেন, আর্থিক চাঁদা দাবি করেন এবং শারীরিক ও মানসিকভাবে নির্যাতন চালান বলে পরিবারের দাবি।
একপর্যায়ে, নিজের পাসপোর্ট উদ্ধার করতে গিয়ে নিমিশা তালালকে ঘুমের ওষুধ মেশানো কিছু খাওয়ান। ঘটনাক্রমে তালালের মৃত্যু হয়। পালাতে গিয়ে সৌদি সীমান্তে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
২০১৭ সালে নিমিশাকে গ্রেফতার করে ইয়েমেনি কর্তৃপক্ষ। ২০২০ সালে ট্রায়াল কোর্ট তাকে মৃত্যুদণ্ড দেয়। পরে উচ্চ আদালত ও ২০২৩ সালে সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিল তার আপিল খারিজ করে। ২০২৪ সালে ইয়েমেনের প্রেসিডেন্ট রাশাদ আল-আলিমি এই রায় অনুমোদন করেন।
আপনার মতামত লিখুন :