শনিবার, ১২ জুলাই, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


বিশ্ব ডেস্ক

প্রকাশিত: জুলাই ১১, ২০২৫, ০৫:৪৯ এএম

নাসা ছাড়ছেন ২ হাজারের বেশি জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা

বিশ্ব ডেস্ক

প্রকাশিত: জুলাই ১১, ২০২৫, ০৫:৪৯ এএম

বর্তমানে নাসার ১০টি আঞ্চলিক কেন্দ্র থেকে ছাঁটাই প্রক্রিয়া চালানো হচ্ছে। ছবি- সংগৃহীত

বর্তমানে নাসার ১০টি আঞ্চলিক কেন্দ্র থেকে ছাঁটাই প্রক্রিয়া চালানো হচ্ছে। ছবি- সংগৃহীত

মার্কিন মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসা থেকে একসঙ্গে ২ হাজারের বেশি জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা চাকরি ছাড়ছেন। এদের অনেকেই নাসার গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে ছিলেন। এতে সংস্থাটির ভবিষ্যৎ মহাকাশ মিশন, বিশেষ করে চাঁদ ও মঙ্গলে মানুষ পাঠানোর পরিকল্পনা, বড় চ্যালেঞ্জে পড়তে যাচ্ছে।

নাসার মোট ২,৬৯৪ জন কর্মী ইতিমধ্যেই ‘অগ্রিম অবসর’, ‘পদত্যাগ প্রণোদনা’ বা ‘স্থগিত পদত্যাগ’ (deferred resignation) গ্রহণ করেছেন। এর মধ্যে ২,১৪৫ জন হচ্ছেন জ্যেষ্ঠ পর্যায়ের কর্মকর্তা (GS-13 থেকে GS-15)।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এদের অনেকেই ছিলেন বিজ্ঞান গবেষণা, মহাকাশ অভিযানের পরিকল্পনা ও ব্যবস্থাপনার মূল দায়িত্বে। এভাবে একসঙ্গে এত অভিজ্ঞ মানুষ চলে গেলে, নাসার কার্যক্রমে বড় ধরনের ‘অভিজ্ঞতার শূন্যতা’ তৈরি হবে।

এই সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। কারণ, কর্মী ছাড় প্রক্রিয়া চলবে ২৫ জুলাই পর্যন্ত। বিশ্লেষকদের মতে, এসব কর্মী মূলত নাসার মিশন পরিচালনা, বিজ্ঞান গবেষণা এবং মানব মহাকাশ অভিযানে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে ছিলেন।

নাসার মূল কারিগরি ও ব্যবস্থাপনা দক্ষতার বড় অংশ তাদের উপরই নির্ভরশীল ছিল। এ ধরনের ব্যাপক ‘অভিজ্ঞতা হারানো’ আগামী চাঁদ ও মঙ্গল মিশনের পরিকল্পনা ও বাস্তবায়নকে গভীর সংকটে ফেলতে পারে।

বিশ্বজুড়ে নেতৃত্ব দিলেও বাজেট কাটছাঁটে নড়বড়ে ভিত

হোয়াইট হাউসের প্রস্তাবিত ২০২৬ সালের বাজেটে নাসার তহবিল ২৫ শতাংশ কমানোর পরিকল্পনা করা হয়েছে। এতে পাঁচ হাজারেরও বেশি জনবল ছাঁটাইয়ের সুপারিশ রয়েছে। এই প্রস্তাব বাস্তবায়িত হলে নাসা ১৯৬০-এর দশকের পর প্রথমবারের মতো সবচেয়ে ছোট কর্মীসংখ্যা ও বাজেটে পরিচালিত হবে।

বর্তমানে নাসার ১০টি আঞ্চলিক কেন্দ্র থেকে ছাঁটাই প্রক্রিয়া চালানো হচ্ছে। সবচেয়ে বেশি কর্মী হারাচ্ছে ম্যারিল্যান্ডের গডার্ড স্পেস ফ্লাইট সেন্টার (৬০৭ জন)। এছাড়া টেক্সাসের জনসন স্পেস সেন্টার থেকে ৩৬৬ জন, ফ্লোরিডার কেনেডি সেন্টার থেকে ৩১১ জন এবং নাসার ওয়াশিংটন সদর দপ্তর থেকে ৩০৭ জন কর্মী ছাড়ছেন।

জনসন সেন্টার, যেখান থেকে নাসার মানব মহাকাশ মিশন পরিচালিত হয়, সেখানে হোয়াইট হাউসের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৪১৯ জন ছাঁটাই; ইতিমধ্যে এর প্রায় পুরোটাই পূরণ হয়ে গেছে। একইভাবে, নাসার রকেট উৎক্ষেপণের মূল ঘাঁটি কেনেডি সেন্টার থেকেও বড় অংশের কর্মী বিদায় নিচ্ছে।

মহাকাশ নীতিতে অনিশ্চয়তা, নেতৃত্ব শূন্যতায় ঝুঁকি

দ্য প্ল্যানেটারি সোসাইটির স্পেস পলিসি প্রধান কেইসি ড্রেইয়ার বলেন, “আপনি নাসার কারিগরি ও ব্যবস্থাপনাগত মেরুদণ্ড হারিয়ে ফেলছেন। প্রশ্ন হলো—এটা কী কৌশলের অংশ, আর আদৌ কী অর্জন করতে চাচ্ছে সরকার?”

এদিকে, নাসার আইনবিষয়ক বিভাগের ৩৫ জন কর্মীর মধ্যে ৫ জন পদত্যাগ করছেন, যা ১৫ শতাংশ হ্রাসের সমান। একজন বিদায়ী কর্মী জানান, বাজেট কাটছাঁটের শঙ্কা, প্রশাসনিক অনিশ্চয়তা এবং সিনেট-অনুমোদিত অ্যাডমিনিস্ট্রেটরের অনুপস্থিতি তাকে বিদায়ের সিদ্ধান্ত নিতে প্রভাবিত করেছে।

তিনি বলেন, ‘পরিস্থিতি দেখে মনে হচ্ছে সামনে আরও খারাপ সময় আসছে।’

নতুন কর্মী পাওয়া কঠিন, বেসরকারি খাতে আকর্ষণ বেশি

যদিও হোয়াইট হাউসের এই প্রস্তাবিত বাজেট ও কর্মীছাঁটাই এখনো চূড়ান্ত হয়নি, এবং কংগ্রেস তা বাতিল করতে পারে, তবুও বিদায়ীদের ফিরিয়ে আনা সহজ হবে না।

নাসার দক্ষ জনবল এখন সহজেই উচ্চ বেতনের বেসরকারি মহাকাশ সংস্থা বা রোবোটিকস কোম্পানিগুলোর দিকে ঝুঁকছে।

একজন কর্মী যিনি ‘ডিফারড রেজিগনেশন’ গ্রহণ করেছেন, তিনি বলেন, ‘আমরা আগামী কয়েক বছরে নেতৃত্বের ঘাটতির মুখোমুখি হবো। পরবর্তী প্রজন্মের নেতৃত্বে এক বিরাট শূন্যতা তৈরি হতে চলেছে।’

যদিও নাসার মুখপাত্র বেফানি স্টিভেন্স জানিয়েছেন,‘আমরা একটি অগ্রাধিকারভিত্তিক বাজেট কাঠামোর মধ্যেও আমাদের মহাকাশ মিশনের প্রতি প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।’

তবুও বিশ্লেষকরা বলছেন, মঙ্গল ও চাঁদে অভিযানের মতো জটিল কার্যক্রম সামনে রেখে এভাবে নীতিনির্ধারক, প্রকৌশলী ও বিজ্ঞানীদের হারানো মার্কিন মহাকাশ নেতৃত্বকে দীর্ঘমেয়াদে দুর্বল করতে পারে।

Shera Lather
Link copied!